এমন অনেক সেলিব্রেটি আছেন যাদের বয়স বাড়লেও, স্কিনের বয়সকে একদমই বাড়তে দেননি।শরীরের গড়ন, স্কিনের উজ্জ্বলতা, ফিটনেস সবকিছু একদম আগের মতই। শিল্পা শেটটি থেকে করিনা কাপুর, এখনো তাদের সুন্দর ফিগার ও গ্লোয়িং স্কিনের রহস্য সত্যি ভাবায়।আমার মত নিশ্চয়ই আপনিও ভাবেন এতো বয়সেও এতোটা গ্লোয়িংস্কিন কীভাবে? তার উত্তর হল যোগাসন।
বেশীরভাগ সেলিব্রেটিই নিয়মিত যোগাসন করেন।এবং এরা প্রত্যেকেই মনে প্রানে বিশ্বাস করেন, সুস্থ শরীর ও গ্লোয়িং স্কিনের রহস্য এটাই।নিজেকে সুন্দর ও ভালো রাখতে এর থেকে ভালো আর কিছু হয় না।এবার নিশ্চয়ই ভাবছেন আপনিও কাল থেকেই যোগাসনে বসে যাবেন।হ্যাঁ সে তো নিশ্চয়ই।কিন্তু তার আগে দেখে নিন কোন কোন যোগাসন গুলো বেশী উপকারী স্কিনকে গ্লোয়িং করে তুলতে।
পদ্মাসন
পদ্ধতি
প্রথমে মেঝেতে পা দুটো সোজা করে বসুন।তারপর পা দুটো একটু ফাঁক করুণ।এবার প্রথমে ডান হাত দিয়ে ডান দিকের পা মুড়িয়ে রাখুন বাঁ দিকের থাইয়ে।তারপর বাঁ হাত দিয়ে বাঁ দিকের পা মুড়িয়ে রাখুন ডানদিকের থাইয়ে। এবার হাত দুটো থাকবে দুটো হাঁটুর ওপর।চাইলে যেকোনো মুদ্রাও হাতে করতে পারেন।যেমন ব্রম্ভ মুদ্রা, চিন্মায়া মুদ্রা,বা আদি মুদ্রা এগুলো বেশী ভালো ফল দেয় পদ্মাসনে।এরকম যেকোনো মুদ্রা ধরে বা হাত এমনিও রাখতে পারেন।এইভাবে ৫মিনিট বসুন।ও ধীরে ধীরে গভীরে শ্বাস নিন ও শ্বাস ছাড়ুন।একদম সোজা ভাবে বসবেন।পিঠ সোজা রাখবেন।
মনে রাখবেন যদি হাঁটু বা গোড়ালিতে কোন আঘাত থাকে তাহলে এটা করার দরকার নেই। এতে কষ্ট হবে। আর এই আসন যে খালি পেটে করতেই হবে এমন কোন মানে নেই। তবে আসন করার ৪ ঘণ্টা আগে খাবার খেয়ে নিলে ভালো। পেট পরিষ্কার রাখলে ভালো।
ধনুরাসন
পদ্ধতি
প্রথমে মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন।দুই হাত সোজা রাখবেন দুই কোমরের পাশে।এবার ধীরে ধীরে পা তুলবেন।তারপর দুই হাত দিয়ে দুটো পা ধরে ওপরে তুলবেন যতটা পারেন।সাথে বুকও তুলবেন ওপরের দিকে।অর্থাৎ বুক ও পা দুটোই ধীরে ধীরে তুলবেন।দৃষ্টি সোজা রাখবেন।ধীরে ধীরে শ্বাস নেবেন।১৫ থেকে ২০ সেকেন্ড এভাবে থাকবেন শ্বাস ধরে রেখে,তারপর ধীরে ধীরে পা থেকে হাত ছেড়ে দেবেন।ধীরে ধীরে মাটিতে শোবেন আবার আগের মত উপুড় হয়ে। এই পা ছাড়ার সময়ই ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়বেন।
মনে রাখবেন যদি আপনি প্রেগন্যান্ট হন তাহলে একদমই এটা ট্রাই করবেন না। এছাড়াও হার্নিয়া, উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপ,মাইগ্রেনের সমস্যা বা গলায় বা ঘাড়ে কোন আঘাত থাকলে এটা না করাই ভালো।তবে এই সমস্যা গুলো না থাকলে।অবশ্যই এটা করা ভালো।
সর্বাঙ্গসন
পদ্ধতি
প্রথমে মাটিতে সোজা হয়ে শোবেন।দুই হাত থাকবে কোমরের পাশে।তারপর ধীরে ধীরে পা ওপরে তুলবেন।পা তোলার সময় হাত কিন্তু মাটিতেই থাকবে।পা একদম সোজা করে ওপর দিকে তুলুন।তারপর হাতের ওপর ভর দিয়ে, কোমরকেও ধীরে ধীরে ওপরে তুলুন।কোমর সম্পূর্ণ ওপরে তুলে দিন।তারপর দুই হাত দিয়ে কোমর ধরুন।হাতের কনুই থাকবে মাটিতে।মানে হাতের কনুই দিয়ে মাটিতে সাপোর্ট রেখে,হাতের বাকি অংশ দিয়ে কোমরকে ওপরের দিকে করুণ।হাতের ওপর ভর দিয়ে কোমরকে ওপর দিকে ধরে থাকুন।৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড।ধীরে ধীরে শ্বাস নিন।তারপর হাত ছেড়ে দিন।তারপর ধীরে ধীরে কোমরকে নীচে মাটিতে রাখুন।তারপর পা দুটো নামিয়ে রাখুন।
মনে রাখবেন পিরিয়ডের চলাকালীন এই আসন করবেন না। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ, মাথা যন্ত্রণা, ডায়রিয়া এবং ঘাড়ে কোন আঘাত থাকলে এটা করবেন না। এছাড়াও প্রেগন্যান্ট অবস্থায় না করাই ভালো।
হলাসন
পদ্ধতি
প্রথমে মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন।হাত থাকবে কোমরের পাশে।তারপর হাত মাটিতে রেখে পা ওপরে তুলুন।পা একদম সোজা তুলে দিন।হাত কিন্তু মাটিতেই থাকবে।তারপর হাতের ওপর ভর দিয়ে,পা মাথার দিকে ধীরে ধীরে বেণ্ড করুণ।তারপর দুটো হাত দিয়ে কোমর ধরুন।কোমরও ওপরে উঠবে। পায়ের পাতা একদম মাথার পিছন দিকে গিয়ে ঠেকবে।এইভাবে পা যত ওপরে তুলবেন কোমরও উঠবে।আর তখনই হাত দিয়ে কোমর ধরবেন।হাত দিয়ে কোমর দিয়ে কোমর ওপরের দিকে তুলুন।পা যখন বেণ্ড হয়ে মাথার পিছন দিকে ঠেকিয়ে দেবেন,তখন হাত ধীরে ধীরে মাটিতে সোজা ভাবে আগের মত রাখুন।দীর্ঘ শ্বাস নিন।৩০ থেকে ৬০ থাকুন।তারপর ধীরে ধীরে প্রথমে কোমর নামবে।তারপর পা দুটো নামান।কোমর নামানোর সময় ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এটা ধীরে ধীরে করবেন। কোন তাড়াহুড়ো নয়।
মনে রাখবেন এটাও আগের মত সমস্যা গুলি থাকলে করবেন না। আর বাড়িতে খুব সাবধানে করবেন। যেহেতু এটা বেশ শক্ত। তাই প্রথম দিকে কোন এক্সপার্টের সাহায্যে করুণ। আর শরীরে কষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেবেন।
শবাসন
পদ্ধতি
অন্যান্য সমস্ত আসন করে নেবার পর, শেষে এই আসনটা করুণ।কারন এই আসনের মাধ্যমে আপনি শরীরকে রিলাক্স করছেন।করাও খুব সহজ। মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন।তারপর পা দুটো একটু ফাঁক করে রাখুন।হাত দুটোও একটু ছড়িয়ে রাখুন।চোখ বন্ধ করুণ।আর ধীরে ধীরে শ্বাস নিন ও শ্বাস ছাড়ুন।শরীর ও মনকে পুরোপুরি রিলাক্স দিন।১০ থেকে ১২ মিনিট এইভাবে শুয়ে থাকুন।এটা খুব সহজ আসন তাই যে কেউ করতে পারে।কোন সমস্যা নেই।
প্রতিটা আসন করার সময় পেট খালি থাকলে ভালো।তাই একদম সকালে করুন।নাহলে খাবার ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা আগে করুণ।আর ঠিক যেভাবে বলা আছে সেই ভাবেই ছবি দেখে করবেন।নিজের মত কিছু করবেন না।এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।আর যেগুলো একটু শক্ত সেগুলো প্রথম দিকে আগে ভালো করে বুঝে নিয়ে করুণ।তাহলে আর দেরী কেন, শুরু করে দিন যোগাসন।কিছুদিন পর নিজের সৌন্দর্যটা নিজেই বুঝতে পারবেন।
থাইরয়েডের সমস্যা থেকে মুক্ত হতে যোগাসনের কথা বলছেন বাবা রামদেব
মন্তব্য করুন