ভালবেসে আপনার পার্টনার আপনার হাত ধরতে এলেন, অথচ আপনার খসখসে হাতের ছোঁয়াতে পুরো ব্যাপারটাই ম্যাসাকার হয়ে গেল! ইসসস কি যাতা ব্যাপারটাই হবে তাহলে তো ভাবুন তো? আর ওই জন্যই তো আমরা আপনার জন্যে নিয়ে এসেছি হাতকে নরম, গোলাপের মতো বানানোর দশটি ঘরোয়া টোটকা। দেখুন আর ট্রাই করুন।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন তো?
বুঝি তো, আপনাকে বাড়িতে কত্ত কাজ করতে হয়। আর ওই কাজের চটেই আপনার হাত এর’ম খসখসে হয়ে যায়। কিন্তু কি করবেন বলুন? কাজ তো আপনাকে করতেই হবে। আর এদিকে নরম হাতের ছোঁয়ায় কত্তামশাইকেও খুশি রাখতে হবে! তাই যাই করুন না কেন, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে কিন্তু একদম ভুলবেন না। আসলে ময়েশ্চারাইজারে থাকা নিউট্রিয়েন্ট আপনার হাতকে নরম মখমলি বানাতে সাহায্য করে। তাই আজই পারলে দোকান থেকে আপনার সাধের ময়েশ্চারাইজারটি কিনে আনুন, আর সকাল-বিকেল কাজের ফাঁকে লাগাতে থাকুন।
গরম জলে ডুবিয়ে রাখুন
আপনার হাতের পাতা কি শুকিয়ে কাঠের মতো হয়ে গেছে? হয় হয়, ওরকম মাঝে মাঝে হয়েই থাকে। চিন্তা করার কিচ্ছু নেই।
পদ্ধতি
হালকা গরম জল করুন, তারপর মিনিট দশেক আপনার হাত ওতে ডুবিয়ে বসে থাকুন। আর পারেন যদি ৩-৪ ফোঁটা অরেঞ্জ এসেনশিয়াল অয়েল বা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েলও ওতে দিতে পারেন। দেখবেন বেবি সফট হাতের রহস্য আপনার হাতের মুঠোয়!
পাতিলেবু!
আজ্ঞে হ্যাঁ। ‘সর্ব ঘটে কাঁঠালি কলা’ যদি কেউ থাকে, সেটা কিন্তু পাতিলেবুই। নামে পাতি হলেও, কাজে কিন্তু মোটেই পাতি নয়। সুপার সফট হাত, আর উজ্জ্বল, মসৃণ হাত—এই দু’টোযদি একসাথে চান, তাহলে পাতিলেবুর আশ্রয় আপনাকে নিতেই হবে।
উপকরণ
২-৩ চামচ পাতিলেবুর রস, ২ চামচ মধু, ১ চামচ বেকিং সোডা।
পদ্ধতি
মধু, পাতিলেবুর রস আর বেকিং সোডা একসাথে মিশিয়ে হাতে ভালো করে মেখে ফেলুন। এরপর শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। তারপর দেখবেন কামাল কাকে বলে!
এক্সফোলিয়েট করুন
হাতে মরা চামড়া জমে থাকলে তাও কিন্তু আপনার হাতকে খসখসে করে দিতে পারে। কি করবেন তাহলে? সোজা ব্যাপার। এক্সফোলিয়েট করুন! হালকা গরমজলে হাত ধুয়ে নিন। তারপর আপনার পছন্দের কোনো স্ক্রাব ব্যবহার করে এক্সফোলিয়েট করা শুরু করুন। আর চান যদি তাহলে এই স্ক্রাব কিন্তু বাড়িতেও তৈরি করতে পারেন।
উপকরণ
৪ চামচ মুসুর ডাল গুঁড়ো, দুধ পরিমাণ মতো।
পদ্ধতি
মুসুর ডাল গুঁড়ো আর দুধ নিয়ে একটা পেস্ট মতো বানান। তারপর হাতে ভালো করে ঘষে ঘষে স্ক্রাবিং করে নিন। দেখবেন কেমন মরা চামড়াও ভ্যানিশ, আর আপনার হাতও কেমন নরম হয়ে উঠেছে!
দই আর বেসন
আপনার হাতকে সহজে নরম যদি করতে চান, তাও আবার তাড়াতাড়ি, তাহলে এই সলিউশনটা কিন্তু আপনার জন্যে একদম পারফেক্ট হতে পারে। বেসন আপনার হাতকে উজ্জ্বল, মসৃণ তো করবেই, আর সেই সাথে দইও আপনার হাতকে মোলায়েম করে তুলবে।
উপকরণ
পদ্ধতি
দই আর বেসন দিয়ে একটা স্মুদ পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর আপনার হাতে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট রেখে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। দিনে ২ বার করে টানা ২ সপ্তাহ করেই দেখুন না। উপকার পাবেন, গ্যারান্টি দিচ্ছি।
চিনি আর অলিভ অয়েল
জানেন কি, চিনি কিন্তু আপনার হাতকে দারুণভাবে এক্সফোলিয়েট করতে পারে। আর অলিভ অয়েল আপনার ত্বককে মসৃণ, নরম তো করেই। আর তাছাড়া অলিভ অয়েলে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও থাকে, যা আপনার ত্বককে উজ্জ্বলও করে তোলে।
উপকরণ
২ চামচ চিনি, ২ চামচ অলিভ অয়েল।
পদ্ধতি
চিনি আর অলিভ অয়েল মিশিয়ে ভালো করে আপনার দু’হাতে মেখে ফেলুন। তারপর ভালো করে ম্যাসাজ করে করে স্ক্রাব করুন। মিনিট দশেক পরে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ দিন নিয়ম করে করুন। মাখনের মতো বেবি সফট হাতের ছোঁয়ায় দেখবেন আপনার পার্টনারের সব রাগ গলে জল হয়ে যাচ্ছে!
নারকেল তেল
চুলের জন্যে নারকেল তেল যে দারুণ উপকারী—এ কথা তো হরদমই শুনে আসছেন। কিন্তু হাতের জন্যও নারকেল তেল? বিশ্বাস হচ্ছে না তো?
উপকরণ
৪ চামচ নারকেল তেল।
পদ্ধতি
নারকেল তেল একটা বাটিতে নিয়ে হালকা করে গরম করুন। ১০-১৫মিনিট ধরে হাতে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। তারপর ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। নরম হাত তো পাবেনই। আর যদি হাতে ট্যান থাকে? ওটাও দেখবেন নিমেষে ভ্যানিশ হয়ে যাবে।
‘মিল্ক থেরাপি’
দুধে যে প্রচুর প্রোটিন, ল্যাক্টোজ আর নিউট্রিয়েন্টস থাকে তা তো জানেনই। দুধ না খেলে ভালো ছেলে হওয়া যায় না। আর আমাদের এই ‘মিল্ক থেরাপি’ ব্যবহার না করলে কিন্তু ভালো হাতও পাওয়া যায় না।
পদ্ধতি
একটা পাত্রে কিছুটা ঈষদুষ্ণ দুধ নিয়ে ১৫ মিনিট ধরে হাত ডুবিয়ে রাখুন। দিনে ২-৩ বার করে এক সপ্তাহ কষ্ট করে ফলো করেই দেখুন। তারপর ম্যাজিক রেজাল্ট পাবেনই পাবেন।
মালাই বা ক্রিম
রান্নায় ক্রিম তো হরদম ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু জানেন কি, আপনার খসখসে রুক্ষ হাতকে মখমলের মতো বানাতে ক্রিমের জুড়ি নেই। ক্রিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা আপনার হাতকে নরম আর ক্রিমি করে তোলে সহজেই।
উপকরণ
৪ চামচ মালাই, ১ চামচ বাদাম তেল।
পদ্ধতি
মালাই বা ক্রিম আর বাদাম তেল একসাথে মিশিয়ে তা হাতে মেখে ফেলুন। তারপর ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। দিনে ৩-৪ বার করেই দেখুন না। দেখবেন আপনার পার্টনার আপনার নরম হাতের ছোঁয়ায় আপনাকে আরও বেশী করে কাছে পেতে চাইছেন।
তাহলে তো দিব্যি জেনে নিলেন নরম হাতের গোপন রহস্য। এবার ‘খুল যা সিম সিম’ বলুন, আর ঝটপট করে অ্যাপ্লাই করতে শুরু করুন। দেখবেন একমাসের মধ্যে নরম হাতের চাবিকাঠি আপনার হাতের মুঠোয়। আর তারপর? দেখবেন বর আপনাকে আর কাছ ছাড়াই করছেন না!
মন্তব্য করুন