শীত প্রায় শেষ হয়ে এল । আবার সেই কাঠফাটা রোদ্দুর, ভ্যাপ্সা গরম আর পোড়া ডিজেলের গন্ধে মোড়া গ্রীষ্মের দিনগুলো ফিরে আসতে চলেছে। সুতরাং, মুখ ঝল্সে যাওয়া থেকে ত্বকের জ্বলন আবার আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী হতে চলেছে। কি করবেন? বাজারচলতি বিভিন্ন প্রোডাক্টগুলোর দিকে আবার হাত বাড়াতে ইচ্ছে করছে কি? তবে তিষ্ঠ ক্ষণকাল। ফিরে যান প্রকৃতির কাছে।
প্রকৃতির আপন উপাদানে সৃষ্ট ঘৃতকুমারী (Aloe vera) এই গরমে আপনার পরিত্রাতা হতে পারে। ঘৃতকুমারী পাতার রস ত্বকের উপর লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং রোদে পোড়া কমায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে ঋতুশ্রাবজনিত বেশ কিছু সমস্যা এই সময় দেখা দেয়। নিয়মিত ঘৃতকুমারীর ব্যবহার ঋতুশ্রাব প্রক্রিয়াকে স্বাবাভিক এবং সচল রাখে।
ঘৃতকুমারীতে আছে কুড়ি রকমের খনিজ যা মানবদেহের বাইশ প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিডের ঘারতি পূরণ করে এবং ভিটামিন A, B1, B2, B6, B 12, E এবং ভিটামিন C এর ঘারতি রোধ করে।
ঘৃতকুমারীর রস পরিপাকতন্ত্রকে সতেজ রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। নিয়মিত এই রস সেবন করুন। শরীরে শ্বেতরক্তকণিকা গঠণে এবং ঋতু পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন ভাইরাল রোগের প্রকোপ থেকে শরীরকে মুক্ত রাখে।
যাদের হাড়ের সমস্যা আছে তাদের জন্য অস্থিসন্ধির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং নতুন কোষ গঠণে এটি অত্যন্ত উপাদেয়। এছাড়া, প্রত্যহ সকালে ঘৃতকুমারীর রস পান বিভিন্ন প্রকার প্রদাহ, ত্বকের তৈলাক্তভাব, যকৃতের সমস্যা, এমনকি ডায়ারিয়া রোধে ভীষণ উপকারী।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
হাতে যদি সময় থাকে তাহলে অল্প কিছু ঘৃতকুমারীর সঙ্গে অল্প হলুদ, এক পরিমানমতো মধু, পরিমানমতো দুধ এবং কয়েক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে লাগান এবং ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ফল হাতেনাতে পাবেন।
ত্বক যদি স্পর্শকাতর হয়ে থাকে তাহলে ঘৃতকুমারী রসের সঙ্গে অল্প পরিমাণ শসার রস, পরিমানমতো দই এবং এক-চা চামচ গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে লাগান এবং ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বলতাপূর্ণ হবে।
যাদের চুল ওঠার সমস্যা আছে, চুলের গোড়ায় ঘাম জমে তারা পরিমানমতো ঘৃতকুমারী রসের সঙ্গে আমলকির রস মিশিয়ে চুলে লাগান, এতে চুলের ওজ্জ্বল্য বাড়বে, খুসকি দূর হবে, অ্যালোপেশিয়া রোধ হবে।
যারা শরীরের নিয়মিত মেদবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত তারা রাত্রে ঘুমোতে যাওয়ার আধ ঘন্টা আগে মোটামুটি ৩০ মিলিমিটার সজনে পাতার রস ছেঁকে অল্প গরম করে নিন। এরপর তাতে ৩০ মিলিলিটার পরিমানমতো ঘৃতকুমারীর রস মিশিয়ে পান করুন। নিয়মিত এই মিশ্রণ সেবন করলে শারীরিক কসরতের কোনো প্রয়োজন পড়বে না। উপরন্তু আপনার চেহারা হয়ে উঠবে নির্মেদ এবং আকর্ষণীয়।
এছাড়া ঘৃতকুমারীর পাতা হতে প্রাপ্ত জেল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। রোজ রাতে এই জেল মেখে শুতে যান। সকালে উঠে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। দেখবেন ত্বক লাবন্যময় হয়ে উঠছে। অ্যান্টি ট্যানিং-এর ক্ষেত্রে এটি খুবই উপকারী।
শসার ফেস প্যাক ১০টি ঘরে বানিয়ে নিন, রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহারে।
সুস্মিতা দাস
ধন্যবাদ ।।।।।।
Nandini Mukherjee
apnake parar jonno dhonyabad …