সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি থেকে আমাদের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই ত্বকের যত্ন নিতে আমরা কমবেশি প্রত্যেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করি। কিন্তু সানস্ক্রিন সঠিক ভাবে ব্যবহার না করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। ইউ ভি-এ, ইউ ভি-বি, ইউ ভি- সি এই তিন ধরণের ক্ষতিগ্রস্ত রশ্মি সূর্যের আলোতে থাকে। যা আমাদের ত্বকে নানা রকম সমস্যার তৈরি করে থাকে। সানস্ক্রিন এই ক্ষতিগ্রস্ত রশ্মি থেকে ত্বককে প্রটেক্ট করে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কেন ও কিভাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
কেন ব্যবহার করা উচিত সানস্ক্রিন
আগেই বললাম যে ইউ ভি-এ, ইউ ভি-বি, ইউ ভি- সি এই তিন ধরণের ক্ষতিগ্রস্ত রশ্মি সূর্যের আলোতে থাকে। এর থেকে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয় যেমন- ত্বকে কালো ছোপ পরে যাওয়া, অল্প বয়সে মুখে বলিরেখা দেখা দেওয়া, এমনকি এই রশ্মির প্রভাবে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। ত্বক পাতলা হয়ে যেতে থাকে, ত্বকের মসৃণতা কমে যায়, টানটান ভাব কমে যায়, আরও অনেক সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে এলারজি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।
সানস্ক্রিন ব্যবহার নিয়মিত ব্যবহার করলে এই সমস্যা হওয়ার থেকে নিজেকে প্রটেক্ট করা যায়। আসলে সানস্ক্রিনে থাকা এস পি এফ আমাদের ত্বককে প্রটেক্ট করে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি থেকে।
এসপিএফ কি
এসপিএফ হল সান প্রোটেকশান ফ্যাক্টর। সানস্ক্রিনে থাকে এসপিএফ। যার জন্য সূর্যের আলোতে থাকলেও ত্বক সুরক্ষিত থাকে। এসপিএফ ১৫,৩০, এইগুলো ত্বকের জন্য ভালো। এসপিএফ ১৫ মেখে রোদে ১৫০ মিনিট থাকতে পারা যায়। কোন সমস্যা হয় না। এসপিএফ ৩০ মেখে আরও বেশি সময় থাকা যায়। তবে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যে ভালো কোম্পানির সানস্ক্রিন হওয়া উচিত।
সানব্লক ও সানস্ক্রিন
অনেকের একটা ভুল ধারনা রয়েছে যে সানব্লক ও সানস্ক্রিন একই জিনিস।কিন্তু একটু পার্থক্য আছে।সানব্লক ও সানস্ক্রিন একই কাজে ব্যবহিত হয় কিন্তু কাজ করার ধরন আলাদা। সানস্ক্রিন ত্বকের উপর প্রলেপ তৈরি করে, এ কারণে অতি বেগুনী রশ্মি ত্বকের ভিতরে যেতে পারে না। সানব্লক সূর্যরশ্মি প্রতিফলিত করে, ফলে রশ্মি ত্বক পর্যন্ত যেতে পারে না। এতে থাকে-
• পেডিমেট
• সিনামেট
• এন্থ্রানিলেটস
• স্যালিসাইলেটস
• অক্সিবেঞ্জন
• অ্যান্টি অক্সিজেন ফ্রি র্যাোডিকেল
• জিঙ্ক অক্সাইড
• টাইটেনিয়াম অক্সাইড
• প্যারাঅ্যামিনো বেঞ্জয়িক এসিড
সানস্ক্রিনে যা উপাদান থাকে তা সানব্লকে থাকে না। সানব্লক অপেক্ষা সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ত্বকের জন্য খুবই ভালো।
সানস্ক্রিনের ব্যবহার
ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। শুষ্ক, তৈলাক্ত, সেন্সিটিভ এই তিন ধরণের ত্বকভেদ হয়ে থাকে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বক অনেক বেটার থাকে। ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তাহলে সানব্লক বা সানস্ক্রিন পাউডার ব্যবহার করা ত্বকের জন্য ভালো। শুষ্ক ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করা বেশি লাভদায়ক। ত্বকের যে অংশে লোম রয়েছে তাতে জেল ব্যবহার করতে পারেন। যাদের খুবই সেন্সিটিভ ত্বক তারা বাচ্ছাদের জন্য ব্যবহিত সানব্লক যা ১৫ মাত্রার তা ব্যবহার করতে পারেন। ঠোঁটের জন্য সানস্ক্রিন যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।
সানস্ক্রিন যারা নিয়মিত ব্যবহার করেন, তাদের একটি বিষয় খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। সারাদিনের পর যখন বাড়ি ফিরবেন অবশ্যই আগে ভালো করে সানস্ক্রিন ত্বক থেকে তুলে দেবেন। ঠাণ্ডা জলে ভালো করে মুখ ধুয়ে নেওয়া উচিত ফেসওয়াস দিয়ে। তারপর টোনার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে ভালো কোন ময়েসচারাইজার লাগানো উচিত।
মন্তব্য করুন