করোনার জেরে আগের বছর অনেক ছবির মুক্তিই আটকে ছিল। এবার নতুন বছরের শুরুতেই আটকে থাকা ছবিগুলির মুক্তির দিন ঘোষণা করলো এসভিএফ। তালিকায় আছে একগুচ্ছ বিগ বাজেটের ছবি। থাকছে একের পর এক চমক।
থ্রিলার থেকে শুরু করে মিউজিক ড্রামা আবার স্পোর্টস ড্রামা কি নেই। মোটকথা একদম অন্যধরণের ছবি দেখতে পাবো আমরা। যেগুলো নিয়ে আগে কখনো কাজ হয়নি টলিউডে। নানা ভিন্ন স্বাদের ছবি দেখতে পাবো আমরা। কোন কোন ছবি মুক্তি পাচ্ছে এইবছর দেখে নেওয়া যাক একনজরে।
ট্যাংরা ব্লুজ
- মুক্তির দিনঃ ১৫ই এপ্রিল
- মুখ্য ভূমিকায়ঃমধুমিতা সরকার ও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়
সুরে সুরে শুরু হবে নতুন বছর। আগামী পয়লা বৈশাখে আসতে চলেছে ট্যাংরা ব্লুজ। সুপ্রিয় সেনের পরিচালনায় এটি একটি মিউজিক্যাল ড্রামা। এর আগে এইরকম মিউজিক নিয়ে ছবি টলিউডে তেমন দেখা যায়নি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই স্পেশাল হতে চলেছে এই ছবি। এই ছবিকে আরও স্পেশাল করে তুলেছে ছবির গল্প। মুক্তি পেয়ে গেছে ছবির ট্রেলার এবং বেশ সাড়াও ফেলেছে ট্রেলারটি।
আমাদের চারপাশে অনেক প্রতিভা থাকে যেগুলো সঠিক সুযোগের অভাবে চাপা পড়ে যায়। কলকাতার এক বস্তির এইরকম কিছু ছেলেমেয়ের গল্প থাকবে এই ছবিতে। সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার লড়াই। তাদের জীবন যুদ্ধ।
স্বপ্নের মাঝে হাজারো বাঁধা হাজারো সমস্যা কিন্তু স্বপ্ন পূরণের জন্য অদম্য জেদ। যাই হোক কোনকিছুই তাদের থামিয়ে রাখতে পারবে না। এক না হারার গল্প। গল্প এগোবে জয়ী ও সঞ্জীবের জীবন ঘিরে। জয়ীর চরিত্রে মধুমিতা সরকার ও সঞ্জীবের চরিত্রে দেখা যাবে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে।
গলন্দাজ
- মুক্তির দিনঃ ১৩ই অগাস্ট
- মুখ্য ভূমিকায়ঃ দেব
বাঙালি মানেই যেমন মাছ ভাত তেমনই বাঙালি মানেই তো ফুটবল। আর এই তকমা যার জন্য এসেছে, বাঙালির ফুটবলের আদিপুরুষ নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী হারিয়ে গিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। কিন্তু তাকে তো বাঙালি ভুলতে পারে না, কারণ তিনিই তো বাঙালির ফুটবলের জনক।
কিন্তু তাঁর সম্পর্কে এখনো অনেক কিছুই অজানা থেকে গেছে বাঙালি তথা ভারতবাসীর কাছে। কিন্তু যে ফুটবল খেলা শেখাল, যে ফুটবল পাগল তৈরি করলো সেই ফুটবল পাগল জাতিটা এই মানুষটাকে ভুলে গেলে কি চলবে?
তাই পরিচালক ধ্রুব ব্যানার্জি পর্দায় আনছেন তাঁর কাহিনী। যেটা আজকের ইয়ং জেনারেশন অনেকেই ঠিকমত জানে না। বুঝতেই পারছেন দেব থাকছেন নগেন্দ্রপ্রসাদের ভূমিকায়। ছবিতে ধুতি পাঞ্জাবিতে বেশ অন্যরকম লুকে দেখা যাবে দেবকে। নগেন্দ্রপ্রসাদের স্ত্রীর ভূমিকায় রয়েছেন ইশা সাহা।
সাইকো
- মুক্তির দিনঃ ২১শে মে
- মুখ্য ভূমিকায়ঃ অনির্বাণ ভট্টাচার্য
বিরসা দাসগুপ্তর পরিচালনায় এটি একটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারধর্মী ছবি। যেখানে পরতে পরতে থাকবে রহস্য। কলকাতা শহরে প্রায়ই খুন হচ্ছে পুলিশ বিভাগের লোকেরা। কিন্তু কেন? কে বা কারা একের পর এক খুন করে বেড়িয়ে যাচ্ছে অথচ কেউ ধরতে পারছে না? টিভিতে, কাগজে প্রায়ই এরম খুনের খবর পড়ি আমরা।
আচ্ছা কখনো ভেবে দেখেছেন, মানুষ কেন খুন করে? খুনের আগে তার মনের ভেতর ঠিক কি চলে? ছবিতে এইসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজবেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তাকে দেখা যাবে একজন মনবিদের চরিত্রে। এরআগে একের পর চ্যালেঞ্জিং ভূমিকায় তার অসাধারণ অভিনয় দেখেছি। আবারও একবার তাকে আমরা দেখব একটা অন্যরকম ভূমিকায়।
কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন
- মুক্তির দিনঃ ৮ই অক্টোবর
- মুখ্য ভূমিকায়ঃ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও আরিয়ান ভৌমিক
অনেকদিন কাকাবাবুর দেখা পায়নি বাঙালি। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় এইবছরই আবার একবার কাকাবাবু ফিরছেন টলিপাড়ায়। সুনিল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাকাবাবু সমগ্রের উপন্যাস ‘জঙ্গলের মধ্যে এক হোটেল’ অন্যতম। এই গল্পের ওপর ভিত্তি করেই নির্মিত হয়েছে ছবি।
এর আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় দেখেছি ‘মিশর রহস্য’ ও ‘ইয়েতি অভিযান’। এটি তৃতীয় ছবি। অবশ্যই কাকাবাবুর ভূমিকায় আমাদের বুম্বাদা আর সন্তুর ভূমিকায় আরিয়ান ভৌমিক।
এবারেও থাকবে ভরপুর রহস্য, অ্যাডভেঞ্চার। এরআগে ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ মুক্তি নিয়ে বেশ জল্পনা হয়েছিল। আগের বছর বড়দিনে মুক্তির কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু সব জল্পনা কাটিয়ে অবশেষে চলতি বছরেই মুক্তি পাবে ছবিটি।
শঙ্কু আর ফেলুদা
- মুক্তির দিনঃ ২৪শে ডিসেম্বর
- মুখ্য ভূমিকায়ঃ এখনো ঘোষণা হয়নি
আচ্ছা একই ছবিতে যদি প্রোফেসর শঙ্কু আর ফেলুদা দুজনকে দেখেত পাই তাহলে কেমন হবে? দারুণ তো? এইরকমই একটা দারুণ ছবি আমরা দেখতে পাবো বছর শেষে। পরিচালনায় সন্দিপ রায়। সত্যজিৎ রায়ের ১০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে এই উদ্যোগ পরিচালকের।
তবে একই ছবি মানেই কিন্তু দুজনকে একসাথে দেখা যাবে না। একই ছবিতে দুজনের ভাগ থাকবে। মানে ছবিকে ভাগ করা হবে দুটি ভাগে। একটি ভাগে থাকবে ফেলুদার গল্প অন্য ভাগে থাকবে প্রোফেসর শঙ্কু। একই ছবিতে আমরা দেখতে পাবো দুটি কাহিনী। দুটি আলাদা আলদা গল্প থাকবে। মানে প্রোফেসর শঙ্কু ও ফেলুদাকে আলাদাভাবে দেখা যাবে।
তবে কোন দুটি গল্প নিয়ে কাজ করবেন তা এখনো সামনে আসেনি। প্রোফেসর শঙ্কুর ভূমিকায় এর আগে আমরা দেখেছি ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়কে। তাকেই দেখা যাবে এই ছবিতে সেই কথাই শোনা যাচ্ছে। তবে ফেলুদার ভূমিকায় কে থাকবেন এখনই সেটা প্রকাশ করেননি নির্মাতারা।
তাহলে আগের বছর করোনার কারণে সিনেমাহলে যাওয়া যায়নি। বাড়িতেই কেটেছে প্রায় গোটা বছর। কিন্তু এইবছর যেন বিনোদনে কোন খামতি না থাকে, তাই এসভিএফ আনছে একের পর এক অসাধারণ সমস্ত ছবি। আপনি কোনগুলো দেখবেন? তবে সিনেমাহলে মাস্ক, স্যানিটাইজার ভুললে কিন্তু চলবে না। আনন্দ হবে নিয়ম মেনে। যাতে করোনা আমাদের জীবন আর গ্রাস করতে না পারে।
মন্তব্য করুন