গরমকাল শুরু হলেই সানস্ক্রিন ও ছাতা আমাদের পরম বন্ধুতে পরিণত হয়। কারণ সূর্যের তাপ নামক দস্যুর হাত থেকে এই দুটি জিনিসই আমাদের ত্বককে রক্ষা করে। তবে বর্তমান সময়ে সানস্ক্রিন শুধু গরমকালেই নয় শীতকাল বা বর্ষাকাল বা বলা যেতে পারে প্রায় সারা বছরই আমাদের নিত্যসঙ্গী। পুরুষ নারী নির্বিশেষে সকলেই এর ছত্র ছায়ায় নিজেদের ত্বককে সুরক্ষাপ্রদান করে। এই সানস্ক্রিন কি কি ভাবে আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী আসুন দেখেনি।
ইউ-ভি রশ্মি
সূর্যের ইউ-ভি রশ্মি আমাদের ত্বকের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এর ফলে আমাদের ত্বক খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সানস্ক্রিন এই ক্ষতিকারক রশ্মি আমাদের ত্বকের মাঝে অনেকটা ছাঁকনির মতো কাজ করে। ফলত আমাদের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়না।
আজকাল পরিবেশ দূষণ এতো বেড়ে গিয়েছে যে বাড়ি থেকে বেড়োনো মাত্র ধুলোবালি এবং রোদের তাপ আমাদের ত্বকের ক্ষতি করতে শুরু করে। ফলত আমাদের ত্বক তার স্বাভাবিক জেল্লা হারিয়ে ফেলে। এছাড়া বলিরেখা, চামড়া কুঁচকে যাওয়া ইত্যাদি নানা সমস্যা দেখা যায়। সানস্ক্রিন এর নিয়মিত ব্যবহার এই সমস্ত রকম সমস্যাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। ফলত যারা নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করে তাদের ত্বক অনেক বেশি ভালো থাকে এবং মুখে অকালেই বয়স জনিত ছাপ পড়ে না।
সানবার্ন থেকে রক্ষা
সানস্ক্রিন এর নিয়মিত ব্যবহার সানবার্ন এর হাত থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে। সাধারণত বাড়ি থেকে বেড়োনোর আধা ঘন্টা বা একঘন্টা আগে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নেওয়া ভালো। এতে সানবার্ন কম হয়। সানবার্ন এর ফলে আমাদের ত্বক পুড়ে যায় ফলত আমাদের ত্বকে নানা ধরণের সমস্যা যেমন ফোঁড়া হওয়া বা মুখে লাল লাল দাগ হয়ে যাওয়া বা চুলকানি ইত্যাদি নানা রকম অবাঞ্চিত সমস্যা দেখা দেয়।
এই সানবার্ন সাধারণত সূর্যের ইউ ভি বি রশ্মির প্রভাবে হয়। এই সানবার্ন বেশি হলে অনেক সময় স্কিন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়।
কোলাজেন, কেরাটিন এবং এলাস্টিন এগুলি আমাদের ত্বকের প্রয়োজনীয় প্রোটিন উপাদান। সানস্ক্রিন এর ব্যবহার এই প্রোটিন গুলির রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। ফলত আমাদের ত্বকের জেল্লা বজায় থাকে এবং ত্বক মসৃন থাকে, অর্থাৎ ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।
রোদের অতিরিক্ত তাপের প্রভাবে অনেক সময় স্কিন টোনের অসমতা দেখা দেয়। অর্থাৎ মুখের বা দেহের যেসমস্ত অংশ সূর্যের সরাসরি তাপের প্রভাবে আসে সেগুলি পুড়ে যায়। ফলত এই অসামঞ্জস্যতা নজরে আসে। সানস্ক্রিন এই সমস্যা দূর করে। সানস্ক্রিন সাধারণত যেকোন রকম স্কিনটোনের ক্ষেত্রেই এর গুরুত্ব সমান। কারণ আপাত দৃষ্টিতে ধরা না পড়লেও সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি আমাদের ত্বকের যে ক্ষতি করে তা হয়তো অনেকদিন পরে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
এইসমস্ত কারণের জন্য সানস্ক্রিন নিয়মিত ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। আসুন জেনে নেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করার কিছু জরুরি নিয়মাবলী
- ১.সানস্ক্রিন কেনার সময় দেখে নিতে হবে যে ওতে টাইটানিয়াম ডিঅক্সাইড,ও এম সি এবং জিঙ্ক অক্সাইড এই উপাদান গুলি আছে কিনা।
- ২ বাড়ি থেকে বেড়োনোর ৩০ থেকে ৩০ মিনিট আগে এই সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিতে হবে।
- ৩ বেশিক্ষন ধরে এক নাগাড়ে যদি বাইরে থাকতে হয় তবে ১ ঘন্টা বা ২ ঘন্টা অন্তর সানস্ক্রিন লাগিয়ে নেওয়া ভালো।
- ৪. শরীরের খোলা অংশ গুলি অর্থাৎ যে অংশগুলিতে সরাসরি রোদ লাগতে পারে যেমন মুখ, ঠোঁট , কান, গলা হাত, ও পা, এবং পায়ের পাতা ইত্যাদি সমস্ত অংশেই সানস্ক্রিন লাগিয়ে বাইরে বেড়োনো ভালো।
- ৫.সানস্ক্রিন মাখার সময় সেটিকে না ঘষে ধীরে ধীরে ভালো করে মিশিয়ে দেওয়া ভালো।
- ৬.মহিলাদের ক্ষেত্রে সানস্ক্রিন সরাসরি না লাগিয়ে ব্যবহৃত ক্রিম বা লোশনের সঙ্গে লাগানো ভালো। তবে সাঁতার কাটার সময় বা সমুদ্রে স্নান করার সময় সরাসরি লাগানো ভালো।
- ৭.সাধারনণত এস পি এফ ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
মন্তব্য করুন