উজ্জ্বল ও ঝলমলে ত্বক পাওয়ার জন্য অসংখ্য মানুষ পার্লার থেরাপি করেন। কিন্তু বাড়িতে বসেই যদি ঝলমলে ও সুন্দর ত্বক পাওয়া যায় তাহলে? হ্যাঁ বাড়িতে বসেই ঝলমলে ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে হলে এই ৮টি সহজ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই ৮টি পদক্ষেপ-
১. দুধ ও চন্দনের ফেস ক্লিনজারঃ
ক. একটি পাত্রের মধ্যে এক চামচ কাঁচা দুধ নিন ও এক চামচ চন্দনের গুঁড়ো নিন।
খ. কাঁচা দুধের মধ্যে চন্দনের গুঁড়ো মিশিয়ে একটি কটন বলের সাহায্যে সেটা দিয়ে ফেস ক্লিন করে নিন।
এই ফেস ক্লিনজার ব্যবহারের ফলাফলঃ এই ফেস ক্লিনজারের ব্যবহারের ফলে ব্রণ, বলিরেখা ও ট্যান এর থেকে মুক্তি পাবেন। পাশাপাশি ডার্ক সার্কেল ও মুখের যে কোনো দাগ কমাতেও এই ফেস ক্লিনজার কাজে আসবে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, চন্দনের গুঁড়ো না থাকলে শুধু কাঁচা দুধকেও ফেস ক্লিনজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
২. স্টিমিংঃ
ক. দুই থেকে তিন মিনিট মুখটা গরম জল নিয়ে ভাপ দিয়ে নিন।
স্টিম করার ফলাফলঃ স্টিম করলে ত্বকের ভিতরের স্তরে গরম বাষ্প ঢুকে ময়লা বার করে আনবে। এর পাশাপাশি স্টিমিং মৃত কোষের পরতও তুলে দেয় এবং রক্ত চলাচল বাড়ায়। স্টিম করলে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া, ব্রণ ও অ্যাকনের সকল সমস্যা ধ্বংস হয়ে যায়। এছাড়া ত্বকে স্টিম করলে ত্বকের শোষণ ক্ষমতা বাড়ে এবং প্রসাধনী ও মেকআপ বেশি ভালো মতো কাজ করে।
৩. স্ক্রাবিংঃ
ক. একটি পাত্রে এক টেবিল চামচ কফি, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল, এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন।
খ. এরপর এটি নিয়ে মুখের মধ্যে হালকা হাতে স্ক্রাবিং করতে থাকুন।
এর ফলে ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে ও ত্বকের মধ্যে থাকা দাগ ছোপ কমাতেও এই স্ক্রাবার কাজে আসবে।
৪. ফেসপ্যাকঃ
ক. একটি পাত্রে এক টেবিল চামচ ব্যাসন, এক টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো ও এক টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে নিন।
খ. এটি সারা মুখে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
গ. এরপর জল দিয়ে সার্কুলার মোশনে ধীরে ধীরে এই প্যাকটা পরিষ্কার করুন।
ঘ. এরপর একটা নরম তোয়ালে দিয়ে মুখ ভালো মতো পরিস্কার করে নিন।
এই ফেসপ্যাক ব্যবহারের ফলাফলঃ এই ফেসপ্যাকের ব্যবহারে ত্বক সুন্দর ও মোলায়েম হয়ে ওঠার পাশাপাশি মুখের যেকোনো দাগ ছোপ কমানোর ক্ষেত্রে ও ব্রণ কমানোর ক্ষেত্রে এই ফেসপ্যাক বিশেষ ভাবে কার্যকরী হয়।
৫. আইসিংঃ
ক. একখণ্ড বরফ নিয়ে সার্কুলার মোশনে নিজের মুখে ম্যাসাজ করুন।
বরফ নিয়ে ম্যাসেজ করার ফলে মুখ কিছুক্ষণের জন্য লাল হয়ে গেলেও পরে আবার নর্মাল হয়ে যাবে আর বরফের ব্যবহারের ফলে ত্বক সুন্দর হয়ে যাবে।
৬. অ্যালোভেরা জেল মাস্কঃ
ক. মুখে আইসিং করবার পর অ্যালোভেরা জেল লাগান।
খ. অনেকের আবার মুখে অ্যালোভেরা জেল শ্যুট করে না, তাদের বলবো যে কোনো ময়েশ্চারাইজার লাগাতে পারেন মুখে।
অ্যালোভেরার গুণের কথা তো সকলেই কমবেশি জানেন। ত্বকের যত্নে বহুকাল ধরে অ্যালোভেরার ব্যবহার হয়ে আসছে, যেকোনো কাটাছেঁড়া, দাগ ছোপ নিরাময় থেকে শুরু করে ত্বকের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে থাকে অ্যালোভেরা।
গ. এরপর আবার মুখে বরফ নিয়ে সার্কুলার মোশনে ঘোরাতে থাকুন। এতে ত্বক সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি মুখে থাকা যে কোনো ব্রণও কমে যাবে। তবে আপনি চাইলে বরফের পরিবর্তে এইবার ফেস ওয়াশ ও ব্যবহার করতে পারেন।
৭. ফেস টোনারঃ
সুন্দর ত্বক পেতে সকলেই একটি ফেস টোনার ব্যবহার করে থাকেন।
ক. এক্ষেত্রে বাজারজাত টোনার ব্যবহার না করে গোলাপ জলকেও টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
খ. গোলাপ জলকে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে গেলে এককাপ গোলাপ জলের সাথে চার চামচ লেবুর রস মিশিয়ে গোলাপজলের টোনার তৈরি করে নিতে পারেন।
গ. গোলাপজলের টোনার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যাদের শুষ্ক ত্বক তাদের লেবুর রস না দিয়ে খালি গোলাপজল লাগানো উচিত।
টোনার ব্যবহারের ফলাফলঃ
টোনার ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করার পাশাপাশি ত্বককে বাড়তি পুষ্টি যোগায় ও ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে। এছাড়া টোনার ব্যবহারের ফলে রোম কূপ সংকুচিত করার পাশাপাশি ব্রণর প্রবণতা কমাতেও সাহায্য করে। তাই ত্বকের চর্চার ক্ষেত্রে টোনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।
৮. ফেস ম্যাসাজঃ
ক. ফেস ম্যাসেজ করবার জন্য আপনি আপনার ফেভারিট সীরাম বা ফেসিয়াল অয়েল নিতে পারেন।
খ. কয়েক ফোঁটা ফেসিয়াল অয়েল নিয়ে হাতের তালুতে ঘষে মুখের মধ্যে ভালো করে ম্যাসেজ করুন।
ফেস ম্যাসাজের ফলে ত্বকের মধ্যে তারুণ্য বৃদ্ধি পায়। এটি মুখের মধ্যে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ফোলা ভাব কমিয়ে দেয় ও ত্বককে নরম, মসৃণ ও মোলায়েম করে তোলে।
মন্তব্য করুন