শাড়ি, প্রায় ১০৮ রকম পদ্ধতিতে পরা যায়। তবে এদের মধ্যে নিভি, বাঙালি, গুজরাটি, তামিল, শ্রীলঙ্কান এবং মারাঠি স্টাইল-ই হল স্বতন্ত্র। আর বাকি সবগুলোই, এইগুলির প্রকারভেদ।
আজকে আমরা, পূর্ব উল্লেখিত, ছয়টি শাড়ি পরার স্টাইল, আপনাদের সামনে তুলে ধরবো যাতে করে আপনারা যে কোন বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে, নিজ নিজ ব্যক্তিত্বের আস্ফালন ঘটাতে পারেন।
১. নিভি স্টাইল শাড়ি
এই স্টাইলে শাড়ি পড়তে হলে প্রথমেই শাড়ি-টিকে আপনার কোমর-এর বাম দিক থেকে ডান দিকে পেঁচিয়ে পেটিকোটের ভেতর গুঁজে দিতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই শাড়ির ঝুলটি যেন ভূমির থেকে দু ইঞ্চি ওপরে থাকে।
পেটিকোটের মধ্যে শাড়িটি গোঁজা যেখানে শেষ হয়েছে, সেখান থেকে আটটি কুচি আপনাকে বানাতে হবে। কুচি বানানো হয়ে গেলে, সবগুলো কুচি একত্রিত করে পেটিকোট এর মধ্যে নাভির ওপরে গুঁজে দিতে হবে।
শাড়ীর বাকি অংশ আপনার শরীরের বাম দিক দিয়ে, পেছন থেকে ঘুরিয়ে সামনে এনে কাঁধের ওপরে ফেলতে হবে। দেখুন তো, শাড়িটি পড়ে আপনাকে কেমন লাগছে?
২. বাঙালি স্টাইল (আটপৌরে) শাড়ি
বাঙালি স্টাইলে শাড়ি পড়তে হলে, শাড়িটিকে নাভি থেকে শুরু করে কোমর বরাবর বৃত্তাকার-এ নাভির ওপরে এবং ডান দিক থেকে ঘুরিয়ে পেছনের মাঝামাঝি অংশে, পেটিকোট-এর মধ্যে গুঁজে দিতে হবে।
শাড়ীর বাকি অংশ সরু প্লিট করে বাম কাঁধের ওপর দিয়ে ফেলে দিন, যাতে পায়ের গোড়ালি স্পর্শ করে। ফেলে দেওয়া অংশটি নিয়ে, সামনের দিক থেকে ঘুরিয়ে, ডান কাঁধের ওপর দিয়ে পেছনদিকে ঝুলিয়ে দিন।
নারীত্বের প্রকাশ ঘটাতে, আচল-টিতে একগোছা চাবি-ও আপনি ঝোলাতে পারেন।
৩. গুজরাটি স্টাইল শাড়ি
প্রাথমিক ভাবে গুজরাটি স্টাইলে শাড়ি পরিধান অনেকটাই, নিভি স্টাইল-এর মত। এখানে আপনার শাড়ির আঁচলটি, বাম হাতের নিচের থেকে ডান কাঁধে আড়াআড়ি ভাবে উঠে পেছনে না ঝুলে, সামনের দিকে ঝুলবে।
অতঃপর ঝুলন্ত আঁচলটির থেকে একটি কোনা বের করে পরিহিত ব্লাউজের সঙ্গে ডান দিকে, কাঁধের ওপর পিন-আপ করতে হবে।
৪. তামিল স্টাইল শাড়ি
এই স্টাইলে শাড়ি আপনাকে পড়তে হলে, অবশ্যই একটি কুচির মাথা বের করতে হবে । এই মাথা গুলিকে মুন্ডি বলে।
শাড়িটি পড়ার আগেই আপনাকে শাড়ির আঁচলের উল্টোদিকে আটটি কুচি করে নিতে হবে। এই সময়েই আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে যে, মুন্ডি কি ধরনের হবে। যদি মুন্ডি ফ্ল্যাট হয়, তাহলে বড় বড় ভাজ দিয়ে পাখার মতো করতে হবে আর তা না হলে, ভাঁজ ছোট করলেই কাজ মিটবে।
এরপর ওই কুচি-টি পেছনের পেটিকোটের সঙ্গে লাগিয়ে শাড়ি পরা শুরু করতে হবে। অতঃপর শাড়িটি পেচিয়ে সামনে আনতে হবে আবার কুচির ওপর নিয়ে যেতে হবে।
এবার আঁচলটি, বাম কাঁধের ওপর দিয়ে পেছনে ঝোলাতে হবে। একটি গিট, নাভির কাছে দিতে হবে। এবার পেছনের কুচি গুলোকে পাখার মতো করে সাজাতে হবে।
৫. শ্রীলঙ্কান স্টাইল শাড়ি
এটি খুব ইউনিক স্টাইল। এই পদ্ধতিতে প্রথমেই আচল-টিকে কুচি করে, আড়াআড়ি ভাবে বাম কাঁধে ফেলে, টেনে নাভি পর্যন্ত আনতে হবে। অতঃপর আলাদা একটি কাপড়ের বেল্ট দিয়ে আচল-টিকে কোমরে বেঁধে নিতে হবে।
এখন, শাড়ির অবশিষ্ট অংশটি কোমরের ডান দিক থেকে ঘুরিয়ে সামনে এনে পাঁচটি কুচি করতে হবে। কুঁচির ওপরের অংশটি বেল্টের মধ্যে ঢুকিয়ে, মাথাটি সামনের দিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে।
কাপড়ের বাকি আর একটি অংশ কোমরের ডান দিক থেকে ঘুরিয়ে মাজায় গুঁজে দিতে হবে।
৬. মারাঠি স্টাইল শাড়ি
১৯ অথবা ২০, এদের জন্য এই স্টাইলটা একদম পারফেক্ট। পুরো ১২ হাতের একটা শাড়ি নিন। এখন শাড়িটি কে দুটো অংশে এমনভাবে ভাগ করুন, যাতে একটি অংশের তুলনায়, আরেকটি অংশ বেশ বড় হয়।
নাভির নিচ বরাবর শাড়ি-টিকে একটা গিঁট দিন। গুজার দিক থেকে, দু-পায়ের মাঝ বরাবর ধুতির আকারে শাড়ির কম অংশটুকুকে নিয়ে ব্যাক সাইডে গুঁজে দিন।
শাড়ির বেশি অংশ অর্থাৎ আচল বরাবর সরু ভাঁজ করে (কমপক্ষে পাঁচটি)দুই পায়ের মাঝ বরাবর কোমর বেস করে ঘুরিয়ে, বাম কাঁধ বরাবর পেছনে ফেলুন। নিজেকে আরও মোহময়ী করে তুলতে পিন-টাকে ধরে, একটা কোমর বন্ধনী বেঁধে ফেলুন।
মন্তব্য করুন