সরকারী চাকরী পাওয়ার লক্ষ্যে বর্তমানে গজিয়ে উঠেছে হাজার হাজার ট্রেনিং সেন্টার।অনেকেই সেই সকল ট্রেনিং সেন্টার থেকে সরকারী চাকরীর প্রস্তুতি নেন।কিন্তু সবার কাছেই নিয়ম করে সেইভাবে ট্রেনিং সেন্টারে গিয়ে ট্রেনিং নেওয়ার মত সময়ও থাকে না।তাই তাদের জন্যই নিয়ে এলাম এরম ৫টি সরকারী চাকরীর সন্ধান।যারা বাড়িতে বসে প্রস্তুতি নিতে চান,সরকারী চাকরীর কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি দেখে নিন।
১. ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ
রাজ্যের পুলিশ ডিপার্টমেন্টে খুব ভালো সুযোগ এসেছে মেয়েদের জন্য।২৫৫০ জন মহিলা কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে পুলিশে।তাই যারা পুলিশে যোগ দিতে ইচ্ছুক তারা আবেদন করতেই পারেন।আবেদন শুরু হয়ে গেছে।আবেদনের শেষ তারিখ ১.২.২০১৮।বয়স ১৮ থেকে ২৭ এর মধ্যে হলেই আবেদন করা যাবে।
➡ এইচ.এস পাস আবেদনকারীদের জন্য রেলে সুযোগ আর প্রস্তুতির
যোগ্যতা
মাধ্যমিক পাশ থাকলেই আবেদন করা যাবে।সঙ্গে থাকতে হবে বাংলা ভাষায় দক্ষতা,মানে লিখতে,পড়তে ও বলতে জানতে হবে।
কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি
প্রথমে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে।তাই তার জন্য আগে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিগত কয়েক বছরের নমুনা প্রশ্ন পড়তে পারলে খুবই ভালো।আর যে যে বিষয়গুলো হবে সেগুলোর প্রস্তুতি শুরু করে দিন।তার সঙ্গে তৈরি রাখুন শরীরকে।কারণ লিখিত পরীক্ষায় সফল হলে,শারীরিক পরীক্ষাই হবে পরবর্তী ধাপ।উচ্চতা এবং ওজন মেপে দেখা হবে।এই শারীরিক পরীক্ষা হবে তিনটি পর্যায়ে।কতটা ফিট আপনি সেটাও দেখা হবে।এই তিন পর্যায়ের পরীক্ষায় সফল হলে,তবেই সুযোগ পাবেন ফাইনাল লিখিত পরীক্ষায়।এটার পর পার্সোনালিটি টেস্ট ও সব শেষে ইন্টারভিউ।
বেতন
৫,৪০০ থেকে ২৫,২০০ গ্রেড পে ২,৬০০।
কীভাবে অ্যাপ্লাই করবে
ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশের ওয়েব সাইটে গিয়ে,অনলাইন ফর্ম ফিলআপ করে অ্যাপ্লাই করা যাবে।পরীক্ষার ফিও অনলাইনে দেওয়া যাবে।বয়স ১৮ থেকে ৪০ হলেই অ্যাপ্লাই করা যাবে।
২. লক্ষ্য যদি হয় ডব্লিউ.বি.সি.এস
লক্ষ্য যদি সত্যি হয় ডব্লিউ.বি.সি.এস,তাহলে কিন্তু পরীক্ষার একমাস আগে পরলে হবে না।সারাবছরই পড়তে হবে।এই পরীক্ষা সাধারণত হয় ফেব্রুয়ারী মাসে।এতেও তিনটি পর্যায়ে পরীক্ষা হয় প্রিলিমিনারি,মেইন ও মৌখিক বা ইন্টারভিউ।যারা ডব্লিউ.বি.সি.এসের কথা ভাবছেন,এখন থেকেই শুরু করে দিন প্রস্তুতি।
কোন কোন বিষয় প্রশ্ন হয়
প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ২০০ নম্বরের।সবই হয় এম.সি.কিউ ধরণের প্রশ্ন। ইংরাজি,বিজ্ঞান,সাধারণ জ্ঞান,ভারতের ইতিহাস,ভূগোল ও ভারতের অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান ,জেনারেল মেন্টাল এবিলিটি ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম বিষয়েও কিছু প্রশ্ন থাকে।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সফল হলে,তারপর মেইন পরীক্ষা।যেখানে পাঁচটি আবশ্যিক বিষয় বেছে নিতে হয়।প্রতি পত্রে থাকে ১০০ নম্বর।বিষয়গুলি হল,ইংরাজি,বাংলা,সাধারণ জ্ঞান,অঙ্ক,কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ,ভারতের সংবিধান ও রিজনিং।পাঁচটি আবশ্যিক বিষয়ের সাথে একটা ঐচ্ছিক বিষয়ও বেছে নিতে হয়।প্রতি পত্রে ১০০ নম্বরের জন্য সময় থাকে তিন ঘণ্টা।এই পরীক্ষা পেরোতে পারলে তবেই মৌখিক বা পার্সোনাল ইন্টারভিউ।
৩. রিসার্চ ফেলো
অঙ্কে এম.এস.সি?যদি কেরিয়ার করতে চান রিসার্চ ফেলো হিসাবে,তাহলে আপনার জন্য সুযোগ রয়েছে যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে।বয়স ২৮ বছরের মধ্যে হলেই আবেদন করতে পারবেন।
যোগ্যতা
অঙ্কে এম.এস.সি।
কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি
প্রস্তুতি বলতে শুধু ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি নিলেই হবে।কোনো লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে না।
বেতন
২৫০০০ টাকা ও ১২০০০ টাকা।
কীভাবে অ্যাপ্লাই করবেন
সরাসরি চলে যেতে পারেন যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে। ওখানে গিয়ে অনুসন্ধান অফিসে যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
৪. ডাটা এন্ট্রি অপারেটর
৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নেবে,ডিসট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট অ্যান্ড কালেক্টর পূর্ব মেদিনীপুর।যারা অফিসিয়াল কাজে ইচ্ছুক তারা অ্যাপ্লাই করতেই পারেন।১৮ থেকে ৪৩ বছর বয়সের মধ্যে হলেই আবেদন করতে পারবেন।
যোগ্যতা
উচ্চমাধ্যমিক পাশ থাকলেই আবেদন করা যাবে।সঙ্গে থাকতে হবে কম্পিউটার জ্ঞান ‘ও’ লেবেল।সঙ্গে বাংলা ভাষায় লিখতে ও বলতে জানতে হবে।
কীভাবে অ্যাপ্লাই করবে
পূর্ব মেদিনীপুরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে,অনলাইন অ্যাপ্লাই করতে হবে।
বেতন
৫,৪০০ থেকে ২৫,২০০ গ্রেড পেয়ে ২,৬০০।
কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষা তো হবেই।তার সাথে হবে কম্পিউটার টেস্ট এবং সব শেষে হবে পার্সোনাল ইন্টারভিউ।
৫. বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যালিটি
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন?তাহলে আবেদন করতেই পারেন এই পদের জন্য।একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নেবে বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যালিটি ।তবে বয়স অন্তত ২৪ হতে হবে।
যোগ্যতা
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারে ডিপ্লোমা থাকলেই আবেদন করা যাবে এই পদের জন্য।
কীভাবে অ্যাপ্লাই করবেন
এখানে অনলাইন অ্যাপ্লাই করা যাবে না।বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যালিটির অফিসিয়াল পেজে গিয়ে,ফর্ম ডাউনলোড করে,অ্যাপ্লিকেশান লেটারের সাথে পোস্ট করতে হবে তাদের ঠিকানায়।এটা করতে হবে ১৯.১.১৮ এর মধ্যে।
বেতন
৯০০০ থেকে ৪০,৫০০ গ্রেড পে ৪,৪০০।
কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি
এখানেও নিজেকে তৈরি করতে হবে লিখিত পরীক্ষা ও মৌখিকের জন্য।আরও বিশদে জানতে চলে যান বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যালিটির অফিসিয়াল পেজে।
তাহলে আজ থেকেই সরকারী চাকরীর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন।তারপর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আবেদন করুন আর পরীক্ষা দিন।আপনাকে আটকানোর সাধ্যি কারোর নেই।
মন্তব্য করুন