পিরিয়ডের সময় এলো এলো হলেই আপনার নিশ্চয়ই আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়!এমনিতেই তো পেট ব্যথার জ্বালায় আপনি ওই সময় কাতর হয়ে যান।তার পর যদি বাইরে থেকে ব্রণর উৎপাত শুরু হয়,তাহলে তো আপনার রীতিমতো ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি হাল হয়!বুঝি বুঝি।আপনার মনের দুঃখ আমরা বুঝি।আর তাই তো কেবলমাত্র আপনারই জন্য ‘দাশবাসে’র পক্ষ থেকে আমরা নিয়ে এসেছি পিরিয়ডের আগে হওয়া ব্রণকে দূরে রাখতে স্পেশাল কেয়ার টিপস।জানুন আর ব্রণকে দূরে হটান।
পিরিয়ডের সময় ব্রণ কেন হয়
জানেনই যে,পিরিয়ডের সময় শরীরে হরমোনের নানা সমস্যা হয়।পিরিয়ডের ওই কটা দিন হরমোনের মাত্রা নানা ভাবে ওঠাপড়া করে।পিরিয়ডের সময় তো বটেই,পিরিয়ডের পরেও বেশ কিছু দিন ধরে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেশী থাকে।এর পর ইস্ট্রোজেনের মাত্রা যখন আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে,তখন প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।আর এই প্রোজেস্টেরনের কারণেই আমাদের মুখের তৈলগ্রন্থিগুলোর তেল উৎপাদন বেড়ে যায়।তৈলগ্রন্থি থেকে এইসময় সিবাম নামক একরকম তেলজাতীয় পদার্থ নিঃসৃত হয় যা এইসময় মুখের পোরসকে বন্ধ করে দেয়। ফলে ব্রণ হয়।
পিরিয়ডের আগে ব্রণ কখন হয়
পিরিয়ডের আগে ব্রণ সাধারণত ২থেকে ৭ দিনের মধ্যে হয়ে থাকে।পিরিয়ড শুরু হবার পর সাধারণত এই ব্রণ হওয়া থেমে যায়,কারণ ওই সময় প্রোজেস্টেরনের মাত্রা কমে গিয়ে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যায়।সাধারণত ৩০ বছরের পর থেকে পিরিয়ডের আগে ব্রণর সমস্যা শুরু হয়।আর ওইসময় আপনি যদি কিছু সহজ টোটকা ফলো করেন,তাহলেই কিন্তু ব্রণর হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
বার্থ কন্ট্রোল পিল খান
অবাক হচ্ছেন তো?বার্থ কন্ট্রোল পিল কিন্তু আপনার ওই পিরিয়ডের আগে হওয়া বিচ্ছিরি ব্রণগুলো থেকে আপনাকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে।এই বার্থ কন্ট্রোল পিলগুলো কিন্তু আপনার শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।নিউ ইয়র্কের ‘সেন্টার ফর ডারমাটোলজি,কসমেটিক অ্যান্ড লেজার সার্জারি’র ডিরেক্টর ডেভিড ব্যাঙ্ক জানান এই বার্থ কন্ট্রোল পিল খেলে কিন্তু ব্রণর সম্ভাবনা অনেকটাই কমে!
মুখে হাত দেবেন না
টিভি তো নিশ্চয়ই দেখেন।আর টিভি দেখলেই নিশ্চয়ই আপনার গালে অজান্তেই হাত চলে যায়।গালে হাত দিলে কিন্তু আপনার হাত থেকে ব্যাকটেরিয়া আপনার গালে লাগবে।আর ব্যাকটেরিয়া লাগা মানেই কিন্তু আপনার গালে রীতিমতো ব্রণর স্বর্গরাজ্য তৈরি হওয়া।তাই গালে হাত দেওয়া থেকে সতর্ক থাকুন।
মোবাইল ফোনকে পরিষ্কার রাখুন
ভাবুন তো, আপনার গালে ব্রণ হয়েছে।আর সেইসময় আপনার গরম মোবাইল ফোন নিয়ে আপনার কানের কাছে ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলেই যাচ্ছেন।আর ফোনের স্ক্রিনে এমনিতেই গুচ্ছ ব্যাকটেরিয়া জমা হয়ে থাকে।সেই ব্যাকটেরিয়াওয়ালা ফোন কানে লাগালেই তো চিত্তির।ব্রণ তো কমবেই না।উল্টে আরও বেড়ে যাবে।তাই আপনার মোবাইল ফোনের স্ক্রিনটিকে নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
ব্যায়ামের পর স্নান করুন
জানেনই শরীর সুস্থ রাখতে হলে ব্যায়ামের জুড়ি নেই।তবে পিরিয়ডের সময় ব্যায়াম করলেও তাড়াতাড়ি পরিষ্কার হয়ে যাবার চেষ্টা করুন।নয়তো কিন্তু ঘাম আর সেই থেকে ব্যাকটেরিয়া জমে ব্রণ আরও বাজে চেহারা নিতে পারে।ভালো করে মুখ তো ধোবেনই,তাছাড়া ভালো করে স্নানও করুন।
রেটিনল ক্রিম ব্যবহার করুন
রেটিনল বা ভিটামিন এ কিন্তু আপনার ত্বককে পরিষ্কার আর উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।রেটিনল আপনার মুখের পোরসগুলোকে পরিষ্কার করে।ফলে মুখে তেল জমা ময়লা জমা থেকে ব্রণর সম্ভাবনা কমে।অন্তত আট সপ্তাহ ধরে রেটিনল ক্রিম লাগান।দেখবেন সহজেই উপকার পাচ্ছেন।
বয়স বাড়ান
আজ্ঞে হ্যাঁ।ব্যাঙ্ক কিন্তু এরকম কথাই বলে থাকেন।ওনার মতে পিরিয়ডের আগে ব্রণর সমস্যা একটা নির্দিষ্ট বয়সে হয়েই থাকে।এই সমস্যা থেকে স্থায়ী সমাধান যদি পেতে চান,তাহলে একমাত্র রাস্তা বুড়ো হওয়া!বুড়ো হন।দেখবেন ব্রণ এমনিতেই পালাচ্ছে!কারণ আপনার শরীরে ওই যে প্রোজেস্টেরন আর ইস্ট্রোজেন হরমোন,যার সামঞ্জস্যের অভাবে ব্রণ হয়, সেগুলোর মাত্রাও কমতে শুরু করে।ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রণও কমতে থাকে!
বেশী করে শাক-সবজি খান
নিয়ম করে শাক-সবজি খেলে তা কিন্তু এমনিতেই আপনার ব্রণকে দূরে রাখবে।শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্টস থাকে।বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা গেছে জিঙ্ক আমাদের শরীরে ব্রণর পরিমাণ এমনিতেই কমায়।তাই জিঙ্ক যুক্ত সবজি,প্রোটিন জাতীয় খাবার,বাদাম,পালংশাক ইত্যাদি বেশী করে খান। তাছাড়া বেশী করে শাক-সবজি খেলে তা আপনার ত্বককে এমনিতেই ভালো রাখবে।
ক্লিনজিং-টোনিং-ময়েশ্চারাইজিং
ক্লিনজিং-টোনিং-ময়েশ্চারাইজিং—আপনার ত্বককে পরিষ্কার আর সুস্থ রাখার জন্য এই তিনটে জিনিস কিন্তু আপনার ডেলি স্কিন কেয়ার রুটিনে থাকা মাস্ট।মুখের যত্ন নিন।মুখকে পরিষ্কার রাখুন নিয়মিত।মরা চামড়া এক্সফোলিয়েট করে ফেলুন।মুখে নিয়ম করে ময়েশ্চারাইজার দিন।তাহলেই দেখবেন পিরিয়ডের আগে ব্রণ কেন,এমনি ব্রণও আর আপনার কাছে ঘেঁষতে সাহস পাচ্ছে না।
জল খান
সব রোগের সেরা ওষুধ জল।তাই নিয়ম করে জল খাবেন।জানেনই তো, জল আমাদের শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের করে দেয়।ফলে ত্বক পরিষ্কার আর হেলদি হয়ে ওঠে।ব্রণর সমস্যা এতে কমে।
ওপরের টিপসগুলো ফলো করুন।তাহলেই দেখবেন আপনি এবার থেকে পিরিয়ডের আগেই আপনার ব্রণহীন সুন্দর ত্বক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন!আর আয়নায় নিজেকে দেখে আপনার খুশি আর ধরবেই না!
মহিলাদের পিরিয়ড বন্ধ হবার আগে কি কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
https://dusbus.com/bn/period-bondho-hoyar-agei-bujhun-apni-pregnant-kina/
মন্তব্য করুন