অনিয়মিত পিরিয়ড আজকাল আমাদের জীবনে একটা মারাত্মক সমস্যা হয়ে উঠেছে। প্রতি মাসে পিরিয়ড শেষ হয়ে যাবার পর আপনাদের অনেকেরই হয়ত টেনশন শুরু হয়ে যায় যে পরের বারের পিরিয়ড ঠিক সময় হবে কিনা! বিয়ের আগে বেশীরভাগ মেয়েই আজকাল এই অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভুগছেন।
পিরিয়ড অনিয়মিত হবার কারণ হিসেবে আজকাল ডাক্তাররা বেশীরভাগ সময়েই আমাদের বর্তমান লাইফ স্টাইলকেই দায়ী করছেন। আমাদের রোজকার বাইরের খাওয়াদাওয়া বা অতিমাত্রায় জাঙ্ক ফুড খাওয়া এগুলোই অনিয়মিত পিরিয়ডের জন্য দায়ী করেন তাঁরা। এছাড়া অতিরিক্ত মাত্রায় গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়াও কিন্তু অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণ।
অতিরিক্ত এক্সারসাইজ, পলিসিস্টিক ওভারির অসুখ, বা স্ট্রেসও কিন্তু আমাদের পিরিয়ডকে অনিয়মিত করে তোলে। অনিয়মিত পিরিয়ডকে নিয়মিত করার জন্য আমরা অনেকসময়ই ডাক্তারের পরামর্শ নি। বিভিন্ন ওষুধ খাই। কিন্তু সেইসব ওষুধ কিন্তু অনেকসময়ই আমাদের হরমোনের ক্ষতি করে। বেশী খাওয়াও ঠিক নয়। তাই আসুন আজ জেনে নেওয়া যাক অনিয়মিত পিরিয়ডকে নিয়মিত করার কয়েকটি ঘরোয়া উপায়।
দারুচিনি
দারুচিনি আমাদের শরীরের উত্তাপকে বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া দারুচিনির মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান আছে যা আমাদের পিরিয়ডের সময় পেট ব্যথাকে কমাতে সাহায্য করে। পিরিয়ডকে নিয়মিত করতেও দারুচিনি কাজে লাগে। একটা দারুচিনি গুঁড়ো করে তা চা দিয়ে যদি রোজ খেতে পারেন তাহলে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। দুধে দারুচিনি দিয়ে বা দারুচিনি রোজ এমনিও খেতে পারেন, দেখবেন উপকার পাচ্ছেন।
আদা
পিরিয়ড যদি প্রতিমাসে দেরি করে হয় ও কম হয় তাহলে আপনি আদা খেতে পারেন। আদা পিরিয়ডকে নিয়মিত করতে ও পেট ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আদা কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া রস করেও আদা খাওয়া যেতে পারে। জলে আদাকুচি দিয়ে তা ফুটিয়ে তাতে সামান্য মধু দিয়ে খেতে পারেন। নিয়ম করে খেলে দেখবেন প্রতিমাসেই আপনার ঠিকঠাক পিরিয়ড হচ্ছে।
হলুদ
হলুদ আমাদের শরীরকে গরম করে ও হরমোনের সামঞ্জস্য বজায় রেখে প্রতিমাসে পিরিয়ডকে নিয়মিত করে। এছাড়া হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-স্প্যাসমোডিক গুণ থাকায় তা পিরিয়ডের সময় পেট ব্যথাকেও কমায়। প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদ গুড় বা মধু দিয়ে নিয়ম করে ৩-৪ সপ্তাহ ধরে খান। দেখবেন উপকার পাচ্ছেন।
মৌরি
মৌরির মধ্যেও অ্যান্টি-স্প্যাসমোডিক কিছু গুণ থাকে যার ফলে মৌরি অনিয়মিত পিরিয়ডকে নিয়মিত করতে ও পেট ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ২ চামচ মৌরি ১ কাপ জলে সারারাত ভিজিয়ে রেখে খান। পরদিন সকালে উঠে মৌরিটা ছেঁকে জলটা খেয়ে নিন। টানা ১ মাস নিয়ম করে খেয়ে গেলে দেখবেন আপনার পিরিয়ড নিয়মিত হচ্ছে।
কাঁচা পেঁপে
অনিয়মিত পিরিয়ডকে নিয়মিত করার সহজ একটা ঘরোয়া উপায় হল কাঁচা পেঁপে। কাঁচা পেঁপে জরায়ুর পেশীতন্তুর সংকোচনে সাহায্য করে। এছাড়া মেনোপজ বা স্ট্রেসের কারণে যদি পিরিয়ড দেরি করে হয়, তাহলেও কাঁচা পেঁপে আমাদের পিরিয়ডকে নিয়মিত করে তুলতে সাহায্য করে। নিয়ম করে মাস দুয়েক ধরে কাঁচা পেঁপে খেয়ে যান দেখবেন এই সমস্যার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তবে পিরিয়ড চলাকালীন কাঁচা পেঁপে খাবেন না। ওতে নানারকম সমস্যা হতে পারে।
ধনে
ধনের পেলভিক এরিয়া ও জরায়ুতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। ফলে তা মাসিকে সাহায্য করে। ১ চামচ ধনে ২ কাপ জলে ফোটান যতক্ষণ না দু’কাপ জল কমে এক কাপ হচ্ছে। আপনার পিরিয়ডের আগে ৬-৭ দিন ধরে এটা নিয়ম করে দিনে তিনবার করে খান। দেখবেন চটজলদি উপকার পাচ্ছেন।
অ্যালোভেরা
পিরিয়ডের জন্য যেসমস্ত হরমোন দায়ী অ্যালোভেরা সেগুলিকে সক্রিয় করে তোলে ও পিরিয়ডকে নিয়মিত করে তুলতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা জেল মধুর সাথে মিশিয়ে রোজ সকালে জলখাবারের আগে নিয়ম করে খান। অন্তত তিন মাস টানা এই পদ্ধতিটি করে যান। তবে পিরিয়ড চলাকালীন এটি খাবেন না। দেখবেন সহজেই আপনার অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত হয়ে গেছে।
ফলের রস
আঙুর, গাজর ইত্যাদি কিছু ফল বা সবজির রসও আপনার পিরিয়ডকে নিয়মিত করে তুলতে সাহায্য করে।
এছাড়া নিয়মিত পিরিয়ড প্রতিমাসেই যাতে হয়, এজন্য ব্যায়াম করুন নিয়ম করে। খাবার ঠিক করে খান। ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যুক্ত ফল ও সবজি যোগ করুন ও বাইরের খাবার কম খান। আর স্ট্রেস মুক্ত থাকুন। দেখবেন কোনো ডাক্তারের কাছেই আর আপনাকে ছুটতে হচ্ছে না। পিরিয়ডও নিয়ম করে হচ্ছে আর আপনিও সুস্থ থাকছেন।
https://dusbus.com/bn/stan-baro-korar-swavabik-upay-jene-nin/
কাকলি
পিরিয়ড খুব বেশি হয়