সুস্থতা আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।একজন মানুষ অসুস্থ হলেই কেবল তা উপলব্ধি করতে পারে।আমরা সকলেই নিয়মিত সুস্থ থাকতে চাই,কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ছোট বড় অসুখে আক্রান্ত হই।অনিয়ম এবং শরীরের প্রতি অযত্নের কারণে আমরা রোগে-শোকে আক্রান্ত হয়ে থাকি।শরীরের বাড়তি ওজন অসুস্থতা না হলেও এটি অনেক বড় একটি সমস্যা।বাড়তি ওজনের কারণে বিভিন্ন রোগও হয়ে থাকে।অতিরিক্ত ক্লান্তি,উচ্চ রক্তচাপ,হৃদরোগ ইত্যাদি সমস্যাগুলো প্রতিদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
ওজন বেড়ে যাওয়া আসলে কী
অতিরিক্ত ওজন বলতে শরীরের অতিরিক্ত চর্বির পরিমাণকে বোঝায়।বাড়তি ওজন শুধু দৈহিক সৌন্দর্যই নষ্ট করে না,মানসিক ভাবেও দুশ্চিন্তায় ফেলে।তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরী বিষয় এটা মনে রাখতে হবে।এজন্য অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে,হতে হবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও শরীরচর্চার কর্মসূচি মেনে চলতে হবে।স্বাভাবিক অবস্থায় মানবদেহে চর্বির পরিমাণ মোট ওজনের ১৪ ভাগ।যখন দেহে চর্বির পরিমাণ প্রয়োজনীয় পরিমাণের চেয়ে বেশি হতে শুরু করে তখন থেকে সজাগ হওয়া উচিত।নতুবা বাড়তি ওজনের কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে
আঁশজাতীয় খাদ্য,শাক-সবজি,ফল ইত্যাদি খাদ্য গ্রহণ করলে আপনার খাদ্য তালিকায় পুষ্টি উপাদান অপরিবর্তিত থাকবে।কলা বাদে যত ইচ্ছে ফল খান,তবে সেক্ষেত্রে অন্য খাবার গ্রহণও নিয়ন্ত্রণের ভিতর রাখতে হবে।খাদ্য তালিকা থেকে তেল,চর্বি জাতীয় খাদ্য বাদ দিন।অতিরিক্ত ওজন হওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া।কিছু চর্বি দেহের জন্য দরকার,শরীরের শক্তি সরবরাহ করার জন্য।অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলুন।দৈনিক সর্বনিম্ন ৬/৭ লিটার পানি পান করুন।লেবু পানি,সোডা,কফি,চা পান করলে কোনো সমস্যা নেই,তবে ক্রিমজাতীয় খাবার বর্জন করুন।
ডায়েট চার্ট করে নিন
আপনি সুবিধানুযায়ী ডায়েট চার্ট তৈরি করে নিন (১ সপ্তাহের জন্য)।প্রথমদিনের খাদ্য তালিকায় ফল রাখুন,শুধু ফল খান অন্য কিছু নয়।এভাবে ২য় দিন,বিভিন্ন মশলা ছাড়া রান্না করে আপনার পছন্দের সবজিগুলো খান।এর সাথে শসা খান নিয়মিত।এর পরের দিন,শাক-সবজি ও কলা খান।এর সাথে অন্য কিছু খাবেন না।তার পরের দিন আপনি মাঝারি সাইজের ১টা কলা খান সাথে আধা লিটার দুধও।৫ম দিনে,অল্প পরিমাণ চর্বিহীন মাংস ও ২০০ গ্রাম শসা খান।এর পরের দিনে,চর্বিহীন মাংসের সাথে অন্য কোনো সবজি রান্না করে খান।৭ম দিনে জুস,বাদামী চাল,সব রকম সবজি ইচ্ছেমতো খান।
ঘরোয়া কিছু শরীর চর্চা
নিজেকে ফিট রাখতে ঘরোয়া কিছু এক্সারসাইজ করতে পারেন।আপনার শরীরের জন্য সহজ হবে এমন কিছু উপায় গ্রহণ করুন।তবে সারা শরীরের মুভমেন্ট যাতে হয় সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।প্রতিদিন ৪০-৬০ মিনিট হাঁটুন,অন্তত সপ্তাহে ৪ দিন।খাদ্য নিয়ন্ত্রণে আপনার ওজন যে পরিমাণ কমবে,হাঁটার কারণে এর দ্বিগুণ পরিমাণ ওজন কমবে।ওজন কমানোর জন্য শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি ক্ষয় করতে হবে শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে।লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি বেয়ে উঠুন।তাহলে এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী করবেন
এক্সারসাইজ ১
অনেকক্ষণ একই জায়গায় বসে থাকবেন না।হাঁটুন,এটাই আপনার অনুশীলনের প্রথম ধাপ।সম্ভব হলে দৌড়াতে চেষ্টা করুন।খুব বেশি প্রেসার নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
এক্সারসাইজ ২
খেলাধুলা করতে পারেন,এতে বিনোদন আর শরীরচর্চা দুইই হবে।
এক্সারসাইজ ৩
সপ্তাহে ২/৩ দিন যোগ ব্যায়াম করলে ভালো হয়।এতে মানসিক ক্লান্তিও অনেকটা দূর হয়ে যায়।
ওজন কমানোর ব্যাপারে নিজেকে সচেতন হতে হবে।এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের সহায়তা অনেক বেশি দরকার।তারা আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন।যে কোনো বিষয়ে তাদের পরামর্শ আপনার জন্য অনেক গুরুত্ব রাখে।
মন্তব্য করুন