সিট্রাস জাতীয় যেকোনো ফল সাধারণত শরীরের জন্য খুব উপকারী হয়। কমলালেবু,পাতিলেবু ,মুসাম্বি ইত্যাদি সবই সাইট্রাস জাতীয় ফল। আজকের আলোচ্য মুসাম্বি। এই ফলটি কমলালেবুর মতোই অত্যন্ত উপকারী। এটি সাধারণত সারাবছরই পাওয়া যায়। প্রতিদিন একটি করে মুসাম্বি আমাদের অনেক রকম রোগমুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আসুন দেখেনি মুসাম্বির উপকারিতা
১. হজম ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে
মুসাম্বি আমাদের হজম ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। এতে প্রচুর মাত্রায় ফ্লাভোনোইড থাকে যা আমাদের হজমে সাহায্যকারী অ্যাসিড গুলিকে বেশি মাত্রায় নির্গত হতে সাহায্য করে। চিকিৎসকেরা ও হজমের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার জন্য মুসাম্বি খাওয়ার উপদেশ দিয়ে থাকেন। এছাড়া এটি আমাদের শরীরের অশুদ্ধি গুলিকে স্বাভাবিক উপায়ে নির্গত করতে সাহায্য করে। ফলত কনস্টিপেশনকে কম করতে সাহায্য করে।
২. ভিটামিন সি
মুসম্বিতে বর্তমান ভিটামিন সি আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলকে স্বাভাবিক রাখে। আমাদের রক্তের অশুদ্ধিকে দূর করে,আমাদের হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখে।
৩. অন্যান্য সমস্যা দূর করে
অনেক সময় আমাদের দাঁতের গোড়া বা মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে দেখা যায়। যারা মুখের ভেতর ছোট ছোট যন্ত্রনাদায়ী ফোঁড়া, ঠোঁট ফেটে যাওয়া, ঠোঁটের আশেপাশে ফোঁড়া হতে দেখা যায়। এগুলি সবই আমাদের শরীরে ভিটামিন সি র অভাবে হয়ে থাকে। এছাড়া অনেক সময়ই অনেকের সারা বছরই সর্দিকাশি হতে দেখা যায়। মুসম্বিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি বর্তমান। প্রতিদিন মুসাম্বির রসে এক চিমটি বিটনুন মিশিয়ে খেলে এই সমস্ত রকম রোগগুলি থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।
৪. শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে
মুসম্বিতে বর্তমান ভিটামিন সি এবং আমাদের শরীরের জন্য জরুরি নিউট্রিশনস গুলি প্রচুর মাত্রায় থাকে। ফলত এটি আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
৫. মিনারেলস এর অভাব পূরণ করে
গরমকালে আমাদের শরীর ডিহাইড্রেড হয়ে যায়। অর্থাৎ জলের অভাব দেখা যায়। আমরা অনেকেই বেশিরভাগ সময়ে কোল্ড ড্রিংক পান করে সাময়িক আরাম পেয়ে থাকি। কিন্তু এইগুলি সবই আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। মুসাম্বি বা মুসাম্বির রস গরম কালে রোজ খেলে আমাদের শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলস এর অভাব পূরণ করে এবং আমাদের শরীরকে ডিহাইড্রেড হতে দেয় না।
৬. আর্থারাইটিস হওয়ার সম্ভাবনাকে কম করে
মুসম্বিতে ভিটামিন সি এর সাথে বর্তমান ফলিক অ্যাসিড আমাদের শরীরের মাংসপেশি গুলিকে মজবুত রাখে। আমাদের হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখে এছাড়া হাড়গুলিকে ভালো করে পরস্পরের সাথে জুড়ে রাখে। ফলত আর্থারাইটিস হওয়ার সম্ভাবনাকে কম করে।
৭. জ্বর ও বমিভাব কে কম করে
জন্ডিস রোগকে সারাতে মুসাম্বি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যেকোনো চিকিৎসক জন্ডিস হলে মুসাম্বি খাওয়ার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। জন্ডিস লিভার এর সমস্যা জনিত রোগ। মুসাম্বি সহজপাচ্য।এটি আমাদের লিভারকে ঠান্ডা রাখে। জ্বর ও বমিভাবকে কম করে। হজম ক্ষমতাকে এবং লিভার এর কার্যক্ষমতাকে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।
৮. ব্লাডারের অশুদ্ধি দূর করে
ইউরিনারি ডিসঅর্ডার জনিত সমস্যা আজকাল খুব বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে শরীরে নানাধরণের সমস্যা হতে দেখা যায়। মুসাম্বির প্রচুর পরিমানে পটাসিয়াম থাকে। যা কিডনি বা ব্লাডারের অশুদ্ধি গুলিকে দূর করে এবং কোনোরকম ইনফেকশন হতে দেয় না। ফলত প্রতিদিন একটি বা দুটি করে মুসাম্বির রস খেলে এই ধরণের সমস্যা হয় না।
৯. গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মুসাম্বি অত্যন্ত ভালো। এতে বর্তমান ভিটামিন সি গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশকে ত্বরান্বিত করে।
১০. ত্বকের জন্য অত্যন্ত ভালো
মুসাম্বি আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত ভালো। মুসাম্বির রস খেলে বা মুখে মাখলে আমাদের ত্বকের মৃতকোষগুলি পরিষ্কার হয়। আমাদের ত্বক নমনীয় থাকে,ফলত রুক্ষতা দূর হয়। এছাড়া স্কিনটোন হালকা করতে মুসাম্বি অত্যন্ত কার্যকরি। মুসাম্বির রস, দুধ এবং শসার রস বা থেঁতো করা শসা দিয়ে তৈরী করা মিশ্রণ মুখে মাখলে আমাকে স্কিনটোন হালকা হয়।শীত কালে ঠোঁট ফেটে যায় অনেক সময় ,ভিটামিন সি এর অভাবেও ঠোঁট ফেটে যায়। মুসাম্বির রস মধুর সাথে মিশিয়ে ঠোঁটে মাখলে ঠোঁট নরম ও গোলাপি হয়।
জল খান ঠিকঠাক না অতিরিক্ত? সঠিক পরিমাণ জল না খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে জানুন
মন্তব্য করুন