কোরিয়ান সুন্দরীদের কথা আর নতুন করে কীই বা বলব! আপনারা তো এতদিনে কোরিয়ান সুন্দরীদের সৌন্দর্য নিয়ে অনেক কথাই শুনেছেন। কীভাবে কোরিয়ান মেকআপ করতে হয় তাও দেখেছেন।
এবার না হয় জেনে নিন কীভাবে আপনি ওই সৌন্দর্য আপনার মধ্যেও আনতে পারেন, তাও নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমেই।
১. ক্লিঞ্জার ব্যবহার করুন
প্রতিদিন রাতে ঘুমনোর আগে ক্লিঞ্জার ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করুন, নিয়মিত। এতে সারাদিনের জমে থাকা ময়লা মুখ থেকে ভালো ভাবে সরে যেতে বাধ্য হয়।
যারা নিয়মিত মেকাপ করেন তারা প্রথমে আপনার মুখ থেকে সমস্ত মেকআপ তুলে ফেলুন। এক্ষেত্রে অয়েল বেস ক্লিঞ্জারই উপযুক্ত। কিছুক্ষণ হাল্কা হাতে ম্যাসাজ করে নিন। তারপর হাল্কা গরম জল দিন মুখে। অয়েল বেস ক্লিঞ্জার মুখ থেকে সহজেই মেকআপ তুলে দেয়।
২. ওয়াটার বেসড ক্লিঞ্জার ব্যবহার করুন
ওয়াটার বেসড ক্লিঞ্জার মুখের ভিতর থেকে ময়লা বের করে আনে তাই এটি চাইলে রোজ রাতে ব্যবহার করতে পারেন আপনারা। বিশেষ করে যারা চড়া মেকাপ করেন।
অয়েল বেসড ক্লিঞ্জার দিয়ে পরিষ্কার করার পরেও খানিক মেকআপ থেকে যেতে পারে, যেটা তোলার জন্যই দরকার ওয়াটার বেসড ক্লিঞ্জার। এর জন্য প্রথমে মুখ জল দিয়ে ভিজিয়ে নিন। আর তারপর মুখে আর গলায় ক্লিঞ্জার দিয়ে হাল্কা হাতে ম্যাসাজ করুন। তারপর জল দিয়ে তুলে ফেলুন। এতে স্কিন সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হয়।
৩. এক্সফোলিয়েট করুন
ত্বকের ওপর থেকে মরা চামড়া দূর করে স্কিনের ব্রাইটনেস বাইরে আনতে ত্বককে রোজ এক্সফোলিয়েট করা দরকার। এক্সফোলিয়েশন স্কিন পোরস পরিষ্কার করে, যার ফলে স্কিন স্মুথ হয়ে ওঠে।
এক্সফোলিয়েট করার জন্য যে কোনো ভালো স্ক্রাব কিনে নিন। প্রথমে মুখ ধুয়ে তারপর স্ক্রাব মুখে আর গলায় নিয়ে হাল্কা হাতে ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজ সবসময় সার্কুলার মোশনে করতে হয়। এটা সপ্তাহে তিনবার করুন, ভালো ফল পাবেন।
৪. টোনার ব্যবহার করুন
টোনার আসলে স্কিনকে রিফ্রেশ করে ভেতর থেকে। ত্বকের পি.এইচ লেভেল আর ময়েশ্চার লেভেল ধরে রাখে টোনার। শুধু তুলোর বলে করে মুখে ড্যাব করে করে লাগান টোনার, তারপর রেখে দিন। ব্যাস, এতেই কাজ হবে।
৫. এসেন্স ব্যবহার করুন
কোরিয়ান সৌন্দর্যের অন্যতম রহস্য কিন্তু এসেন্স ব্যবহার করা। দেখুন, আপনার স্কিনের কিছু অতিরিক্ত ময়েশ্চার লাগেই। দু’ধাপে ক্লিঞ্জিং করার পর, আপনি এই এসেন্স ব্যবহার করতে পারেন। এটা আসলে টোনার কাম সিরাম হাইব্রিড, যেটা মূলত জলীয় হয় আর স্কিনকে রিপেয়ার করে।
আপনি আঙ্গুলে নিয়ে বা তুলোয় করে এটি মুখে আর গলায় লাগাতে পারেন। এতে আপনার মুখের উজ্জলতা বাড়বে, আবার পি.এইচ লেভেলও বজায় থাকবে।
৬. ট্রিটমেন্ট করুন
আপনার স্কিনকে রিপেয়ার করতে ট্রিটমেন্ট কিন্তু করতে হবেই। যদি আপনার ডার্ক স্পট, অসমান স্কিন টোন, পিগমেনটেশন থাকে, তাহলে কিন্তু আপনার সিরাম, অ্যামপূলস বা বুস্টার ব্যবহার করা উচিত।
এগুলো অ্যাকনে, অনুজ্জ্বল ত্বকের সমস্যা হতে দেয় না। শুধু আপনার আঙ্গুলে নিয়ে নিন এই উপাদানগুলো আর ড্যাব করুন সমস্যার জায়গায়। তারপর দেখুন ম্যাজিক।
৭. শীট মাস্ক ব্যবহার করুন
শীট মাস্ক স্কিনকে খুব সুন্দর ভাবে নরিশ করে। এটাও কিন্তু কোরিয়ান বিউটি টিপসের অন্যতম দিক। শুধু ১৫-২০ মিনিটের জন্য শীট মাস্ক মুখে লাগিয়ে রাখুন, তারপর তুলে ফেলুন। একটা রিজিউভিনেটেড ফিলিংস হবে আপনার। সপ্তাহে এক থেকে দু’দিন করুন।
৮. আই ক্রিম ব্যবহার করুন
আপনার মুখের যথার্থ যত্ন হয় না, যদি না চোখের যত্ন না হয়। ওই চোখেই তো সবাই মরে। মনে রাখবেন আমাদের চোখের আশেপাশের স্কিন কিন্তু খুবই ডেলিকেট হয়, তাই আলাদা যত্নের দরকার হয়। আই ক্রিম কিন্তু এই যত্নে সাহায্য করে। তাছাড়া ডার্ক সার্কেল দূর করে। আন্ডার আই ক্রিম একটা আলাদা সুরক্ষা দেয় চোখের নীচের ত্বককে, হাইড্রেটেড রাখে আর ফ্রেশ দেখতে লাগে। রোজই ব্যবহার করতে পারেন আন্ডার আই ক্রিম।
৯. ময়েশ্চারাইজ করুন
আপনার ত্বকের সঙ্গে যাবে, এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। হতে পারে এটি ক্রিম, জেল বা লোশনের আকারে, কিন্তু তা যেন আপনার স্কিনের জন্য বেস্ট হয়। রোজ সকালে একবার আর রাতে একবার ব্যবহার করুন। দেখবেন আপনার স্কিন কোমল আর সুন্দর থাকছে।
১০. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
সানস্ক্রিন দিয়ে নিজের ত্বককে সুরক্ষা দিন। বাইরে তো আমাদের বেরোতেই হয়। আর বাইরে বেরোনো মানেই রোদের কবলে পড়া। একটি ভালো সানস্ক্রিন আপনাকে যেমন ক্ষতিকর ইউ.ভি রশ্মি থেকে বাঁচায়, তেমনি আবার ডার্ক স্পট, পিগমেনটেশন, ট্যান এইসব থেকেও রক্ষা করে। তবে সানস্ক্রিন মেখেই বাইরে যাবেন না, ১৫ মিনিট আগে মাখবেন।
মন্তব্য করুন