সামনেই তো শীতকাল আসছে। এই শীতের মরসুমে নিশ্চয়ই আপনার গরম ভাতে কালোজিরে বাটা-সর্ষের তেল দিয়ে খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে! জানি এতে অনেক সময় ঠান্ডা লাগার বা হঠাৎ সর্দি-কাশি হবার প্রবণতা অনেক কমে যায়। কিন্তু, কালোজিরা এখানেই থেমে থাকে না বন্ধুরা। উপকারিতার দিক থেকে কালোজিরা কিন্তু লম্বা রেসের ঘোড়া। আজকে আপনাদের এরকমই পাঁচটি উপকারের কথা বলব যা কালোজিরা এক চুটকিতে দিতে পারে।
ক্যানসার প্রতিরোধে
ঘরে ঘরেই আজ এই রোগটি নিজের দাঁত-নখ বসিয়ে রোগীকে তো কষ্ট দিচ্ছেই, পরিবারকেও সব দিক থেকে শেষ করে দিচ্ছে। ‘হু’র মতে এই রোগে নতুন কেস ২০২০ সালের মধ্যে ১৫ মিলিয়ন হবে। তাই আমাদের আজ থেকেই সতর্ক থাকা উচিৎ। আমরা জানি এই মারণ রোগের কোনো ওষুধ আজ অবধি তৈরি হয় নি, বা হলেও সাধারণের নাগালের মধ্যে নয় তা। তাই আমাদের বাঁচাতে কালোজিরার ওপর খানিক ভরসা করা যেতে পারে।
কালোজিরা লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী ‘আফলাটাক্সিন’ নামের বিষ ধ্বংস করে। জার্মান গবেষকরা দেখিয়েছেন যে কালোজিরার মধ্যে আছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল আর অ্যান্টি-মাইকেটিক প্রভাব যা বোন ম্যারো ও প্রতিরক্ষা কোষগুলোকে সজাগ রাখে আর শরীরে ক্যানসার উৎপাদক ফ্রি-র্যাডিকেল অপসারিত করে। আমেরিকার বিজ্ঞানীরা প্রথম কালোজিরার টিউমার বিরোধী প্রভাব সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে মতামত দেন। তাই যেমন ভাবে হোক, কালোজিরা খান।
ফোঁড়া সারাতে
ফোঁড়ার ব্যথা থেকে বাঁচতে কালজিরার কাছে আসতেই পারেন। কালোজিরায় আছে অ্যান্টি-মাইক্রোরিয়াল এজেন্ট মানে যার জন্য আমাদের শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংস হয়। তাই ফোঁড়া সারাতে বা সংক্রমণ কমাতে কালোজিরা খুব উপকারী।
উপকরণ
পরিমাণ মতো তিলের তেল, কালোজিরার তেল বা বাটা।
পদ্ধতি
তিলের তেল ও কালোজিরার তেল মিশিয়ে ফোঁড়ার জায়গায় লাগান। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে উপকার পাবেন।
মেদ কমাতে
আজকের দিনে অতিরিক্ত মেদ নিয়ে ভ্যাদভ্যাদে চেহারার মানুষ হয়ে ঘুরলে কেউ পাত্তা দেবে না। হতে হবে স্লিম আর ফিট। আর ব্যস্ত সময়ের ফাঁকে জিমেই বা যাবেন কখন! তাই কালোজিরাকে সাথী করে দেখুন, কি খেল দেখায়!
উপকরণ
জল, চা পাতা, সম পরিমাণ কালোজিরা।
পদ্ধতি
প্রথমে জল ফুটিয়ে নিন। এবার ওতে চা পাতা আর সম পরিমাণ কালোজিরা দিন আর ফুটতে দিন। এবার রঙ হয়ে এলে নামিয়ে পারলে গরম গরম সাধারণ চায়ের মতোই খেয়ে নিন। চিনি না দেওয়াই ভালো। একটু কষ্ট করে খান, কেষ্ট পাবার গ্যারান্টি আমার।
দাঁতের ব্যথায়
দাঁতে ব্যথা হলে আপনার সব শেষ! ওইরকম ব্যথা যার হয়েছে সেইই বোঝে। কালোজিরা নিজেই অ্যান্টি-বায়োটিক বা অ্যান্টি-সেপটিক। তাই মাড়ি ফোলা বা রক্ত পড়া বা যে কোনো মুখের ইনফেকশনে কালোজিরা অসাধারণ কাজ দেয়।
পদ্ধতি
জলে কালোজিরা দিয়ে তা ফুটিয়ে নিন। হাল্কা গরম থাকতে থাকতে কুলকুচি করুন। দিনে বেশ কয়েকবার করুন, দেখবেন উপকার হাতে হাতে পাবেন।
মাথা ব্যথা কমাতে
ঠান্ডা লেগে হোক বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্যই হোক, যে কোনো মাথা ব্যথা সারাতে অব্যর্থ কালোজিরা। তেমন কিছুই করতে হবে না।
উপকরণ
১টা সুতির কাপড়, পরিমাণ মতো কালোজিরা।
পদ্ধতি
শুধু একটা সুতির কাপড়ের মধ্যে খানিকটা কালোজিরা নিয়ে পুঁটলি বানান। এবার সেটা নাকের কাছে এনে শ্বাস টানতে থাকুন। দেখবেন মাথা ব্যথা পালানোর পথ পাচ্ছে না।
আবার, কপালের পাশে বা কানের পাশ দিয়ে দিনে ৩-৪ বার কালোজিরার তেল মালিশ করলেও উপকার পাওয়া যায়।
তাহলে আজ দেখে নিলেন কালোজিরের পাঁচটি মহান দাওয়াই। এবার যারা কালোজিরের নাম শুনলেই নাক সিটকান তারা ভেবে দেখুন কালোজিরে খাবেন কি খাবেন না! তবে সুস্থ থাকার জন্য কালোজিরের বিকল্প কিছু হতেই পারে না।
মন্তব্য করুন