প্রথমেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জানাচ্ছি বেস্ট অফ লাক।পরীক্ষা তো ভালো হবেই।কিন্তু এরপর কি করবে ভেবেছ?এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সিদ্ধান্ত এরপর কি নিয়ে পড়বে সেটা ভাবার।কারণ এই একটা সিদ্ধান্তের ওপরই তোমার গোটা জীবন নির্ভর করছে।আর এখন আর্টস নিয়ে পড়া মানেই শুধু শিক্ষকতা নয়,কনসেপ্ট অনেক পাল্টেছে।
আর্টস নিয়ে পড়ছো তো কি হয়েছে,আর্টসের স্টুডেন্টদের জন্য এখন আছে দারুণ সমস্ত কেরিয়ার অপশন।তাই যারা তথাকথিত জেনারেল লাইনে একদমই থাকতে চাওনা, তাদের জন্য প্রচুর অপশন রয়েছে, যেগুলোর কোনো একটা ভালোভাবে করলে, সাফল্য আসবে খুব তাড়াতাড়ি। যেটা জেনারেল লাইনে সম্ভব নয়।তাই আর কোনো কনফিউশন নয়, চটপট দেখে নাও কি কি কেরিয়ার অপশন অপেক্ষা করছে তোমার জন্য।
ম্যানেজমেন্ট
১.ব্যাচেলর ডিগ্রি অফ বিজনেস ম্যানেজমেন্ট।
২.ব্যাচেলর ডিগ্রি অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রশন।
৩.হোটেল ম্যানেজমেন্ট।
৪.হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট।
৫.ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট।
৬.ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরিসম ম্যানেজমেন্ট।
ম্যানেজমেন্টের এই প্রতিটা কোর্সই ভালো।নিতান্তই অফিসিয়াল কাজ পছন্দ হলে, ম্যানেজমেন্টের এই কোর্সগুলো নিয়ে পড়তে পারো।এগুলো নিয়ে পড়লে যেমন প্রাইভেট সেক্টরে কাজের সুযোগ রয়েছে, তেমনই সরকারী বিভিন্ন ক্ষেত্রেও অ্যাপ্লাই করতেও পারবে।অর্থাৎ এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটা নিয়ে পড়লে, আর পিছন ফিরে তাকাতে হবে না।বিস্তর কাজের সুযোগ।খুব ঘুরতে ভালোবাসলে ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরিসমকে বেছে নিতে পারো।আবার খুব দায়িত্বপূর্ণ কাজ পছন্দ হলে বাকিগুলো নিয়ে এগোতে পারো।
সময়সীমা
এগুলো সবই ব্যাচেলার ডিগ্রি।তাই সবগুলোর ক্ষেত্রেই সময় ৩ বছর।তবে ইভেন্ট এবং ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অনেক সময় ৪ বছরও লাগে।আবার ডিপ্লোমার অপশনও রয়েছে যেটা ১ বছর।
ডিজাইনিং
এক্ষেত্রে রয়েছে দুটি কোর্সঃ
১.ফ্যাশান ডিজাইনিং।
২.ইন্টেরিওর ডিজাইনিং।
ইন্টেরিওর ডিজাইনের চাহিদা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি।আর খুব ফ্যাশনচর্চা করলে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে এগোতেই পার।ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়লে শুধু যে পোশাক ডিজাইন করবে তাই নয়।আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ।যারা ক্রিয়েটিভ কাজ পছন্দ করো, তাদের জন্য এটা খুব ভালো কেরিয়ার অপশন।
সময়সীমা
ফ্যাশান ডিজাইনের ক্ষেত্রে সময় লাগে ৪ বছর ও ইন্টেরিওর ডিজাইনের জন্য লাগে ৩ বছর।
মাল্টিমিডিয়া
মাল্টিমিডিয়ার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় আছেঃ
১. ওয়েব ডিজাইনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।
২. গ্রাফিক্স ডিজাইন।
৩. অ্যানিমেশন ডিজাইনিং।
কোনো ক্রিয়েটিভ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাও? বা নিজের মধ্যেও আছে সেই ক্রিয়েটিভিটি? তাহলে ভাবনা কি! এগুলোই তোমার জন্য বেস্ট কেরিয়ার অপশন যেখানে অফিসের মত বোরিং রোজ একই কাজ নয়, কাজ সৃষ্টি করবে তুমি নিজেই। আর এখন এই ক্ষেত্রগুলোতে কাজের সুযোগ জাস্ট অসাধারণ। এই তিনটি কোর্সের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কলকাতা তো বটেই,কলকাতার বাইরে রয়েছে আরও ভালো সুযোগ। এখন প্রতিটা কোম্পানিরই নিজস্ব ওয়েব সাইট তৈরি করছে। সব কিছু জন্যই এখন ওয়েব সাইট দরকার পড়ে। ফলে সেই ওয়েব সাইটগুলো তৈরি করা ও এগুলো মেইনটেইন করার জন্য ওয়েব ডিজাইনারের চাহিদা বাড়ছে। আর যেকোনো টিভি অ্যাড, প্রিন্ট মিডিয়া, সিনেমা, সিরিয়ালে এখন বিস্তর কাজ হচ্ছে গ্রাফিক্স ও অ্যানিমেশন নিয়ে।তাই বুঝতেই পারছো কতটা সুযোগ রয়েছে।
সময়সীমা
এগুলো সাধারণত ডিপ্লোমা, অ্যাডভান্স ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স করানো হয়।
মিডিয়া
১.মিডিয়া অ্যান্ড জার্নালিসম।
২.মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট।
৩.মাস কমিউনিকেসন অ্যান্ড জার্নালিসম।
৪.ডিজিটাল মিডিয়া অ্যান্ড মার্কেটিং।
মিডিয়া নিয়ে খুব ইন্টারেস্ট? তাহলে এগুলো বেঁছে নিতে পার নিজের কেরিয়ার হিসাবে।যদি টিভিতে নিজের মুখ দেখাতে চাও, তাহলে মাস কমিউনিকেসন অ্যান্ড জার্নালিসম নিয়ে এগোতে পার। এর সাথে অ্যাঙ্কারিংটা শিখে রাখলে, তুমি হতেই পার কোন পপুলার নিউজ চ্যানেলের নিউজ অ্যাঙ্কার। এছাড়াও ডিজিটাল মিডিয়া ও মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পরলেও রয়েছে বিভিন্ন রকম কাজের সুযোগ। ডিজিটাল মিডিয়া অ্যান্ড মার্কেটিং কোর্সটির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কারণ প্রতিটা কোম্পানি এখন ডিজিটাল মিডিয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই এক্ষেত্রে প্রফেশনাল একজন ডিজিটাল মিডিয়া অ্যান্ড মার্কেটিং এর স্টুডেন্ট এর চাহিদা ব্যাপক।
সময়সীমা
এগুলো তিনটেই ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য সময় তিন বছর।আর ডিপ্লোমার জন্য একবছর।
সাইকোলজি
দিন দিন মনের সমস্যা যেন বেড়েই চলেছে, আর মনের সমস্যা বাড়ার সাথে সাথে মনের এইসব সমস্যা সমাধানের জন্য বাড়ছে চিকিৎসকের চাহিদাও। তাই সাইকোলজি নিয়ে পড়লে, তোমার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে আর ভাবতে হবেনা। যদি মানুষকে বোঝার ক্ষমতা, ধৈর্য্য এসব থাকে তাহলে বিষয়টা নিয়ে ভাবতেই পার। এতে শুধু হসপিটালেই কাজের সুযোগ নেই, এছাড়াও যেকোনো হেল্থ সেন্টার, সোশ্যাল সার্ভিস এজেন্সি। এখন যেকোনো বড় এডুকেশন ইন্সিটিউট, এবং প্রাইভেট কোম্পানি প্রফেশনাল সাইকোলজিস্ট রাখে। এছাড়াও নিজস্ব ক্লিনিকে প্র্যাকটিস তো করতেই পারবে।
তাহলে দেখলে তো, আর্টস নিয়ে পড়লেও এখন কোনো চিন্তা নেই, রয়েছে প্রচুর অপশন।এবার তুমি কোনটা করতে পারবে বা করতে চাও, সেটা ভেবে লেগে পর নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায়।
এইচ.এস পাস আবেদনকারীদের জন্য রেলে সুযোগ আর প্রস্তুতির হাল-হকিকত
মন্তব্য করুন