সামনেই বন্ধুদের সাথে শীতের পার্টি। আপনি সুন্দর করে সাজার জন্য একদম রেডি। কিন্তু গালের ওপর কালো ছোপ দেখে ওমনি মন খারাপ হয়ে গেল। কি করবেন? এক্ষুনি তো গালের কালো ছোপ দূর করতে পারবেন না। ব্যাস, তখনই মাথায় হাত! আপনার পুরো সাজার প্ল্যানে জল ঢেলে দিল এই গালের কালো ছোপ! কিন্তু জানেন কি, গালের এই কালো ছোপকে কভার করা সম্ভব। লাগবে জাস্ট কয়েক মিনিট! ব্যাস, সমস্ত কালো ছোপ দেখবেন উধাও! মেকআপ হবে একদম আপনার মনের মত। কীভাবে? দেখে নাও।
১. মুখ পরিষ্কার
পারফেক্ট মেকআপ করার প্রথম শর্ত হল পরিষ্কার মুখ। তাই মেকআপ শুরু করার আগে, মুখ ভালো করে পরিস্কার করে নিন। মুখের জমে থাকা ধুলোবালি পরিস্কার করা খুব জরুরী। ফেশ ওয়াশ দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিন। আপনার স্কিনের সঙ্গে যায় এরকম ফেশ ওয়াশ ব্যবহার করুন। কখনওই নোংরা স্কিনে মেকআপ করা উচিত নয়। এতে স্কিনের সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।
২. ময়েশ্চারাইজার
একেই শীতকাল। মেকআপ লাগালে খুব তাড়াতাড়ি স্কিন শুকিয়ে যায়। তাই মুখ ধুয়েই ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিলে ভালো। যদিও ময়েশ্চারাইজার শুধু শীতে। স্কিনকে সারাবছর ময়েশ্চারাইজ রাখা ভালো। এটা হেলদি স্কিনের একটা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। তাই কোনো হালকা অয়েল ফ্রী ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এতে মুখ তেলতেলে লাগবে না। আবার মেকআপের পারফেক্ট লুকটাও ফুটে উঠবে। তবে গরমকালে মেকআপের আগে একদম অল্প হালকা আর অয়েল ফ্রী ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে।
নিভিয়া লাইট ময়েশ্চারাইজার, ২০০ গ্রাম
ভীষণ হালকা ময়েশ্চারাইজার। মেখে মনেই হবে না মাখা হয়েছে। কিন্তু স্কিন অনেকক্ষণ পর্যন্ত ময়েশ্চারাইজড রাখে। এটা সারা বছরই ব্যবহার করা যায়। এর একদম ছোট রিফিল প্যাক ও এসে গেছে বাজারে।
দাম ২০১/-
৩. কন্সিলার
এবার আসল কাজ করবে কন্সিলার। মেকআপ লাগানোর আগে তাই অবশ্যই প্রাইমার লাগান। বাজারে প্রচুর মেকআপ কন্সিলার পেয়ে যাবেন। বিভিন্ন কোম্পানির রয়েছে। নিজের পছন্দ মত বেছে নিতে হবে। এবার এই কন্সিলারকে একটু একটু মোটা করে দাগের জায়গায় লাগান। যেমন, যদি চোখের নীচে কালি থাকে, তাহলে ব্রাশ দিয়ে কন্সিলার একটু মোটা করে লাগিয়ে নিন। কন্সিলার জাস্ট লাগিয়ে ছেড়ে দিন। এখনই ব্লেণ্ড করবেন না। তারপর কিছুক্ষণ ওয়েট কর। ২ থেকে ৩ মিনিট ওয়েট করলেই হবে। এবার ব্রাশ দিয়ে বা মেকআপ স্পঞ্জ দিয়ে আস্তে আস্তে কন্সিলারকে চেপে দিন। এরকম চেপে চেপেই এক্সট্রা কন্সিলার তুলে নিন। এভাবে আস্তে আস্তে ব্লেণ্ড করে নিন। এরকম ভাবে মুখের যে জায়গাগুলোতে দাগ আছে, সেখানে মোটা করে কন্সিলার লাগিয়ে নিন।
অলিভিয়া ইনস্ট্যান্ট ওয়াটার প্রুফ কন্সিলার, ১৫ গ্রাম
ফর্সা স্কিন টোনের ক্ষেত্রে পারফেক্ট। হালকা পিঙ্ক রঙ মুখের সমস্ত কালো ছোপকে ঢেকে দেবে। আর অনেকক্ষণ থাকেও।
দাম ১৭০/-
৪. কমপ্যাক্ট
এবার সব শেষে এর ওপর কমপ্যাক্ট বা ব্লাশ অন লাগিয়ে নিন। ব্যাস, কন্সিলার তো অর্ধেক কাজ করেই দিয়েছে, তারপর কমপ্যাক্ট ফাইনাল টাচ দেবে। কমপ্যাক্ট অবশ্যই নিজের স্কিন কালারের সাথে যায় এরকম কালার নেবেন। আর ব্লাশ অন একটু অরেঞ্জ কালার ভালো লাগবে। এটা গালের কালো ছোপকে ভালোভাবে ঢেকে দেয়।
৫. আই শ্যাডো
চোখের নীচে খুব কালো দাগ থাকলে, সেক্ষেত্রে আগে একটু আই শ্যাডো লাগিয়ে নিন। চোখের নীচে একটু আই শ্যাডো ব্লেণ্ড করে নিন। এক্ষেত্রে একটু অরেঞ্জ আই শ্যাডো ব্যবহার করবেন। অরেঞ্জ আই শ্যাডো না থাকলেও অরেঞ্জ লিপস্টিকও ব্যবহার করতে পারেন। জাস্ট কন্সিলার লাগাবার আগে লাগিয়ে নিন। তারপর কন্সিলার লাগান। দেখবেন, চোখের নীচের কালো দাগ পুরো উধাও।
৬. সঠিক কন্সিলার
কন্সিলার কিভাবে লাগাবো সেটা তো জানলাম। কিন্তু সঠিক কন্সিলার বেছে নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নিজের স্কিনের সাথে মানিয়ে সঠিক কন্সিলার না লাগালে কিন্তু কোন লাভই হবে না। বরং লুকটাই বিগড়ে যাবে। তাই নিজের স্কিন টোনের সাথে মিলিয়ে কেনা দরকার। সাধারণত স্কিন টোনের থেকে একটু ডার্ক বা ডিপ শেড কন্সিলার লাগানো দরকার। যাতে সেটা মুখের কালো ছোপকে ঢাকতে পারে। কিন্তু স্কিন টোন যদি ফর্সা হয় তাহলে, মিডিয়াম বা ডার্ক পীচ কালার বাছুন। নাহলে অরেঞ্জ কালারের কন্সিলার সবচেয়ে ভালো যাবে। অরেঞ্জ কালার ফর্সা স্কিন টোনের ক্ষেত্রে বেশ ভালো যাবে। ক্রিম বেসের থেকে পেনসিল বা স্টিক কন্সিলার ব্যবহার করুন। স্টিক বা পেনসিল কন্সিলারগুলো বেশী ভালো ভাবে দাগ ঢাকতে পারে।
লোটাস হারবাল ইকো স্টে স্পট কভার কন্সিলার, ৬.৫ গ্রাম
এতে আছে শিয়া বাটার ও ভিটামিন ই। স্কিনের কোন ক্ষতি না করে, মুখের সমস্ত ডার্ক স্পট, সমস্ত প্রকার দাগ, চোখের নীচের কালি নিমেষেই ঢেকে দেয়। ন্যুড বেইজ কালার। সমস্ত স্কিন টোনেই যায়।
দাম ৫১০/-
এবার মেকআপ করুন। দেখবেন আপনার গালের কালো ছোপ মেকআপের চুটকিতে ভ্যানিশ। আর আপনিও বিন্দাস পার্টি রেডি।
মন্তব্য করুন