ফল আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী একথা আমরা সবাই জানি।প্রতিদিন একটি করে ফল খেলে অনেক রকম রোগের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যেতে পারে। আমরা সাধারণত মোটামুটি সব ফলেরই খোসাটিকে বাদ দিয়েই ভেতরের অংশটি খেয়ে থাকি। কিন্তু এই বাদ দেওয়া খোসা অংশটিও যে আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী।
আসুন আজ আমরা জেনে নি কোন কোন ফলের খোসা কিভাবে আমাদের জন্য ভালো। আপেল, কমলালেবু, কালো আঙুর, কলা, আম ইত্যাদি ফলগুলি আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তা আমরা জানি। কিন্তু এর খোসাগুলিও সমান ভাবে উপকারী।
কমলালেবু
কমলালেবু ছোট বড় সবার প্রিয় ফল। এটি একটি সিট্রাস জাতীয় ফল। এর খোসায় প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকে। এর খোসাটি আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।এটি আন্টি এলার্জিক, আন্টি -ভাইরাল, আন্টি -ক্যান্সার। এটি আমাদের ত্বককে গভীর ভাবে পরিষ্কার করে, ত্বকের নমনীয়তা রক্ষা করে। কমলালেবুর খোসা শুকিয়ে নিয়ে বেটে, দুধ বা মধু বা গোলাপজল ইত্যাদি সঙ্গে মিশিয়ে মুখে মাখলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল হয়। সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি, বা ধুলো বালি লেগে আমাদের ত্বক এ নানা রকম সমস্যা হয়, যেমন ফোঁড়া, মুখে লাল লাল ছোপ, চুলকানি ইত্যাদি এছাড়া অতিরিক্ত ক্ষতিকারক রশ্মির প্রভাবে স্কিন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়। কমলালেবুর খোসার নিয়মিত ব্যবহার এই সমস্ত থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে।
আপেল
আপেল এর খাদ্যগুন সম্পর্কে সবাই জানি। রোজ একটি করে আপেল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আপেল অনেকে খোসা সমেত খান আবার অনেকে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে খেতে পছন্দ করেন। আপেলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি, ভিটামিন -এ, এবং ভিটামিন-কে থাকে এছাড়া এতে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম থাকে। আপেলের খোসায় এই উপাদান গুলির অর্ধেক অংশ বর্তমান থাকে। তাই যখন আমরা আপেলের খোসাটি বাদ দিয়ে শুধু ভেতরের অংশটি খাই তখন এর খাদ্য গুন অর্ধেক কমে যায়। আপেলের খোসায় ট্রিটেরপর্নোইডস থাকে যা আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া আর্সলিক অ্যাসিড থাকে যা আমাদের শরীরের মাংস পেশিতে মেদ জমতে দেয় না। এছাড়া এতে কর্সেটিন থাকে যা আমাদের হৃদযন্ত্রের দেখাশোনা করে। তবে আপেল কেনার সময় লক্ষ রাখতে হবে যে ওতে কোনো রকম ভাবে মোমের প্রলেপ না থাকে।
লেবু
কমলালেবুর মতো এটিও সিট্রাস জাতীয় ফল। লেবু আমাদের হজমে সাহায্য করে, আমাদের শরীরে মেদ জমদে দেয় না। লেবুর খোসাও সমান ভাবে উপকারী। লেবুর খোসাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের হাড়কে শক্ত করে, এছাড়া এটি আমাদের হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। আমাদের ত্বকের জন্যও লেবুর খোসা উপকারী।এছাড়া লেবুর খোসার নিয়মিত ব্যবহার আমাদের মাড়ি ও দাঁতকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
কলা
কলার খাদ্য গুনের বেশির ভাগ অংশই কলার খোসা বহন করে। এতে প্রচুর পরিমানে লুটেইন নামক উপাদান থাকে যা আমাদের চোখকে ভালো রাখে।এছাড়া কলার খোসা আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী। মুখে বা শরীরে যে কোনো অংশে চুলকানি বা ফোঁড়া হলে সেই অংশে কলার খোসা হালকা করে প্রতি দিন ঘষলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া পোকামাকড় কামড়ালে সেই অংশটিতে কলার খোসা ঘষে দিলে আরাম পাওয়া যায়।
কালো আঙুর
এই ফলটিও অত্যন্ত উপকারী। এর খোসাতে রেসভেরাট্রল নামক উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরে ব্যাড কোলেস্টেরলকে বাড়তে দেয় না এবং আমাদের হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখে। এছাড়া এটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এ সাহায্য করে। এছাড়া এটি আন্টি টক্সসিক এবং আন্টি-ক্যান্সার। এছাড়া এর খোসা আমাদের ত্বকের জন্যও উপকারী। এটি আমাদের ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে।
আম
আমের খোসাতে প্রচুর পরিমানে পলিফেনোলস, ওমেগা -৩, ওমেগা ৬ থাকে যা আমাদের ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ জনিত রোগ প্রতিরোধ এ সাহায্য করে। এছাড়া এর খোসা মেদ কমাতে সাহায্য করে।এছাড়া এটি হজম ক্ষমতা বাড়াতে বা হজমে সাহায্য করে এবং কনস্টিপেশনকে কম করতে সাহায্য করে। এছাড়া এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে আমাদের ত্বক ও চোখের জন্য আমের খোসা উপকারী।
শশা
শশার খোসা শরীরে পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন থাকে এছাড়া এতে প্রচুর পরিমানে আন্টি অক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম ও ফাইবার থাকে।
তরমুজ
তরমুজ এর খোসাতে প্রচুর পরিমানে সিট্রুলিন থাকে, এই সিট্রুলিন অ্যামিনো অ্যাসিড এ পরিণত হয় যা আমাদের আমাদের শরীরে ব্লাড সারকুলেশনকে ঠিক রাখে। এছাড়া এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
https://dusbus.com/bn/blackberry-benefits-qualities-bengali/
মন্তব্য করুন