গ্রীষ্মকালের দাবদাহের ঠিক উল্টোদিকে বিরাজ করছে শীতকালের আবহাওয়া। শীতকালের হিম শীতল বাতাসে শরীর খুবই ভাল থাকে। আরও একটা কারণে শীতকালে শরীর ভাল থাকে আর তা হল এই সময়ে ঘামের পরিমাণ অনকটাই কম হয়।
শরীর থেকে অতিরিক্ত জল ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায় না বলেই এই সময়ে জল পিপাসাও কম হয়। ফলে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতকালে কিন্তু জল খাওয়ার পরিমাণ অনেকটাই কম হয়। অনেকে আবার শীতকালে গলা ব্যথা করবে এবং কাশি হবে ভেবেও কম জল পান করেন।
কেন খাবেন ইনফিউজড ওয়াটার
- জানলে অবাক হবেন জল কম খাওয়ার কারণেই কিন্তু ত্বকের আর্দ্রতার পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। যার ফলে ত্বক আরও রুক্ষ-শুষ্ক-প্রাণহীন হয়ে পড়ে।
- এইসব কারণে শীতকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা বিশেষভাবে জরুরী। কিন্তু শীতকালে জল ঠান্ডা হয়ে যায় বলে খেতে ইচ্ছা করে না।
- তবে আপনাদের জন্য রয়েছে এমন এক জলের সন্ধান যা পান করলে কিন্তু আপনার জল খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যাবে দ্বীগুণ। এর নাম হল ইনফিউজড ওয়াটার।
- ইনফিউজড ওয়াটার যে শুধু খেতে সুস্বাদুই নয়, এর মধ্যে রয়েছে ভরপুর নিউট্রিয়েন্টস।
- তাই শীতের দিনগুলি জমে উঠুক ইনফিউজড ওয়াটারের হাত ধরে।
কীভাবে বানাবেন ইনফিউজড ওয়াটার
- এর জন্য একটা বড় মুখওয়ালা জলের বোতল নিন, এবার তাতে কয়েকটি ফলের টুকরো দিন।
- তারপর প্রায় ১২ ঘণ্টা মতো পাত্রের মুখ বন্ধ করে রেখে দিন। এতে করে ফলের নির্যাস খুব ভালভাবেই জলের সঙ্গে মিশে যাবে।
- পাশাপাশি ব্যবহার কর তে পারেন এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনির মতো কয়েকটি সুগন্ধি মশলাও।
- এই জল পান করলে এই শীতে পাবেন কাজ করার বাড়তি এনার্জি।
কয়েকটি সুস্বাদু ইনফিউজড ওয়াটার তৈরির রেসিপি
এই রেসিপিগুলো বানানো খুবই সহজ। খেতেও টেস্টি হয়। নানা রকমের ফল দিয়ে এগুলো বানানো হয়ে থাকে। তারমধ্যে কয়েকটির রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
১) শসা, লেবুর ইনফিউজড ওয়াটার
- শসা এবং লেবু আপনার ইমিউনিটি সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।
- শসার ইনফিউজড ওয়াটার আপনার শরীরকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদান প্রদান করে।
- এর সঙ্গে ব্লুবেরি মেশালে তা হয়ে ওঠে ভরপুর ভিটামিনের উৎস। যদি এটি পেয়ে যান মার্কেটে, তাহলে মেশাবেন।
- বড় মুখওয়ালা জলের বোতল নিন, এবার তাতে ফলের টুকরো দিন।
- প্রায় ১২ ঘণ্টা মতো পাত্রের মুখ বন্ধ করে রেখে দিন।
- তারপর এই জল পান করুন।
২) কমলালেবু, ভ্যানিলা বিন এবং দারুচিনির ইনফিউজড ওয়াটার
- এই ইনফিউজড ওয়াটারটি আপনার শরীরে বিপুল পরিমাণ ভিটামিন-সি সরবরাহ করে থাকে।
- আর দারুচিনি রক্তে থাকা শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- এর সঙ্গে ভ্যানিলা বিনসের খোসা যদি জলে ভিজিয়ে দেন, তাহলে এই ইনফিউজড ওয়াটারের সুগন্ধে মন ভরে যাবে।
- বড় মুখওয়ালা জলের বোতল নিন, এবার তাতে ফলের টুকরো দিন।
- প্রায় ১২ ঘণ্টা মতো পাত্রের মুখ বন্ধ করে রেখে দিন।
- তারপর এই জল পান করুন।
৩) আপেল, লেবুর এবং ডালিমের বীজের ইনফিউজড ওয়াটার
- দিনে একটি আপেল আপনাকে ডাক্তারের থেকে দূরে রাখে।
- আপেলের ইনফিউজড ওয়াটার কি তাই করবে? উত্তর, অবশ্যই করবে।
- আপেলের মধ্যে থাকা পলিফেনল, পেকটিন এবং ফাইবার হার্টকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।
- সেইসঙ্গে লেবু এবং ডালিমের বীজের সংমিশ্রণে আপনার ইনফিউজড ওয়াটারে সংযোজিত হবে বাড়তি পুষ্টিগুণ।
- বানানোর পদ্ধতি ঠিক আগের রেসিপির মত এক। এছাড়াও আরও দু রকমের ইনফিউজড ওয়াটার পান করতে পারেন।
- নাসপাতি, ডালিমের বীজ এবং লবঙ্গের ইনফিউজড ওয়াটার।
- জলের মধ্যে এই ফল, বীজ ও মশলার সংমিশ্রণ এনার্জি বৃদ্ধিতে, হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং বুক বা পেটের জ্বালাভাব দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- আর একটি হল নাসপাতি, রাস্পবেরি এবং রোজমেরির ইনফিউজড ওয়াটার।
- রাস্পবেরির স্বাদ খুব ভাল একটি মুড লিফ্টার হিসাবে কাজ করে।
- অন্যদিকে যারা বদহজম, বুক জ্বালা, ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা রোজমেরীর চা খেলে আরাম পাবেন।
- আর লবঙ্গ কাশি দূর করতে বিশেষ কার্যকর।
- এই ইনফিউজড ওয়াটার এক কথায় দুর্দান্ত রোগ প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে।
মন্তব্য করুন