বিয়ে করবেন বলে ভাবছেন নাকি? আপনার পার্টনারের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চয়ই বিয়ের সবকিছু ফাইনালও করে ফেলেছেন? সব যোগাড়-যন্ত্র করে শপিং-ও নিশ্চয়ই আপনার শেষের মুখে? কিন্তু তার আগে মেডিক্যাল টেস্টের কথা ভেবেছেন কি? জানি ভাবেননি। বিয়ের আগে মেডিক্যাল টেস্ট করানো কিন্তু মাস্ট। কারণ যে মানুষটার সাথে থাকতে যাচ্ছেন সারাটা জীবন, তার বা আপনার কোনো শারীরিক অসুবিধা আছে কিনা, যার ফলে আপনি আর আপনার পার্টনার এবং আপনাদের সন্তান সমস্যায় পড়তে পারে, তার জন্যেই মেডিক্যাল টেস্ট করানো খুব দরকার। জেনে নিন কোন পাঁচটা মেডিক্যাল টেস্ট আপনাকে বিয়ের আগে আপনাদের দু’জনের জন্যেই মাস্ট।
১. HIV এবং সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিসেজ (STD)
বিয়ের আগে HIV এবং অন্য কোনো সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিসেজ (STD), যেমন গনোরিয়া, সিফিলিস, ওয়ার্টস, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস আছে কিনা আপনার বা আপনার পার্টনারের এটা টেস্ট করা কিন্তু মাস্ট। গনোরিয়া, সিফিলিস, ওয়ার্টস, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস যদি ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হয়, তবে সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু HIV-র ক্ষেত্রে সেটা হয় না। এমনকি যদি কোনো একজনের এই রোগ থাকে, তাহলে সেক্সের মাধ্যমে আরেকজনের শরীরেও চলে যেতে পারে, এবং সন্তান হলে সেক্ষেত্রেও এই রোগ তার মধ্যে বাহিত হয়। আর একবার যদি কারুর HIV ধরা পড়ে, তাহলে বুঝতেই পারছেন!
২. ফার্টিলিটি টেস্ট
বন্ধ্যাত্ব সমস্যা কিন্তু এখন বাড়ছে। আর আমাদের দেশে জানেনই, এখনও সন্তান আসতে কোনো সমস্যা হলে দোষ দেওয়া হয় মেয়েটিকেই। বিয়ের আগে ফার্টিলিটি টেস্ট করার চল আমাদের দেশে সেভাবে না হলেও সম্প্রতি এ বিষয়ে সচেতনতা দেখা দিয়েছে। বিবাহিত জীবনের ক্ষেত্রে সন্তান কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিয়ের আগে আপনাদের দু’জনেরই উচিত এই ফার্টিলিটি টেস্ট করা। পুরুষের ফার্টিলিটি চেক করার জন্য সিমেন টেস্ট আর মেয়েদের জন্য ওভিউলেশন টেস্ট করানো হয়। আর আপনার জননতন্ত্রে কোনো জেনেটিক অ্যাবনর্মালিটি আছে কিনা তা দেখার জন্য পেলভিক আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করানো দরকার। তাছাড়া প্রোল্যাক্টিন, FSH, LH, টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ইত্যাদি হরমোনের পরীক্ষা করতে ভুলবেন না।
➡ সন্তান ধারণ ক্ষমতা নিশ্চিত করতে কয়েকটি বিষয় জানুন।
৩. ব্লাড টেস্ট
রক্তে কোনোরকম ডিসঅর্ডার কিন্তু জন্মানোর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একটা বাচ্ছার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। রক্তবাহিত রোগ, যেমন হিমোফিলিয়া, থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদি যদি আপনাদের কারুর একজনের থেকে থাকে, তাহলে সন্তান কিন্তু জন্ম থেকেই ওই রোগের বাহক হয়ে জন্মায়। আর নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের মেয়ে যদি পজিটিভ ব্লাড গ্রুপের ছেলেকে বিয়ে করে, তাহলে দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে ব্লাড গ্রুপ ইনকমপ্যাটিবিলিটি তৈরি হয় যা খুবই সমস্যার। তাই বিয়ের আগে ভালো করে ব্লাড টেস্ট করিয়ে নিন।
৪. জেনেটিক টেস্ট
জেনেটিক কোনো ডিসঅর্ডার কিন্তু এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সংক্রামিত হয়। তাই বিয়ের আগে জেনেটিক টেস্ট করা খুবই জরুরী। আপনার বা আপনার পার্টনারের যদি সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ব্রেস্ট ক্যান্সার, লাং ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার থেকে থাকে, তাহলে সন্তানেরও তা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এমনকি আপনাদের পরিবারের কারুর এই রোগ থেকে থাকলেও তা সন্তানের হতে পারে। তাই বিয়ের আগে দুই পরিবারেরই মেডিক্যাল হিস্ট্রি জেনে নিন।
৫. সিকল সেল জিন
লোহিত রক্তকণিকার একধরণের ক্রনিক আর দুর্বল অবস্থা হল সিকল সেল ডিসিস। এই রোগে লোহিত রক্তকণিকার কোষগুলি কাস্তের মতো দেখতে হয়, আর সূক্ষ্ম রক্তবাহের মধ্যে দিয়ে কোষ এবং কলায় অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে না। বুঝতেই পারছেন সমস্যাটা। তাই আপনাদের কারুর যদি সিকল সেল জিন থেকে থাকে, তাহলে সতর্ক হন। এক্ষেত্রে যদি একজন সিকল সেলের বাহক হন, তাহলে ৫০% সম্ভাবনা থাকে বাচ্চাটিরও সিকল সেলের রোগী হওয়ার।
যে রোগগুলির কথা ওপরে বললাম, সেগুলি কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ আপনাদের বিবাহিত জীবনের ক্ষেত্রে তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। তাই আগামী বিবাহিত জীবন সুখের করতে হলে বিয়ের আগেই করান এই ৫ টি মেডিক্যাল টেস্ট। আর সুস্থ থাকুন। আপনাদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক!
গোপন অঙ্গকে সবসময় পরিষ্কার রাখুন ৫ টি ঘরোয়া টিপস দিয়ে। না হলে হতে পারে নানা ইনফেকশন।
মন্তব্য করুন