আজ কথা বলবো ঘৃতকুমারী (Aloe Vera) সম্পর্কে। আমরা অনেকেই নায়িকাদের চুলের স্টাইল নিজেদের চুলে করার চেষ্টা করে থাকি। কিন্তু তা করতে গিয়ে আমরা প্রায়শই বুঝতে পারিনা যে সেই সব স্টাইল করার সামগ্রী আমাদের চুলে কতটা ক্ষতি করে দিচ্ছে। ঘৃতকুমারী চুলে লাগালে এই সব ক্ষতিকারক কেমিক্যালের থেকে আমাদের চুলকে রক্ষা করা যায়। তার ওপর আরো অনেক উপকার করে। জানতে ইচ্ছা করছে কি সেই উপকারগুলি? চলুন তাহলে আজ জেনে নিন ঘৃতকুমারীর গুনাগুন আমাদের চুলের জন্য।
আমাদের চুলের পুষ্টি যোগায়
ঘৃতকুমারীর মধ্যে থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১ ,ভিটামিন বি ২, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন সি আর ভিটামিন ই, খনিজ,এমাইনো অ্যাসিড। যা আমাদের চুলের পুষ্টি যোগায়। ঘৃতকুমারী আমাদের চুলের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করে। ভেজা চুলে ঘৃতকুমারী দিলে আমাদের চুল ময়শ্চারাইজ হয়ে ওঠে। প্রাকৃতিক ভাবে চুলের যত্ন নেয় ঘৃতকুমারী।
পলিউসান থেকে বাঁচায়
ঘৃতকুমারী আমাদের মাথার তালুতে দিলে চুলে লাগা ধুলো বালি দূর হয়। তাই ঘৃতকুমারী চুলে লাগালে আমাদের মাথায় চুলকানি ভাবও কমে যায়। আমাদের মাথার বাড়তি ত্বকের কোষকেও কমিয়ে তোলে এবং এর ফলেও মাথার চুলকানিও কমে যায়।
চুলের বৃদ্ধি ঘটায়
আমাদের মাথার তালুতে মৃত কোষ জমে যাওয়ার ফলে আমাদের চুল গজায় না। ঘৃতকুমারীর মধ্যে একটি এনজাইম আছে যা আমাদের মাথার তালুর উপর জমে থাকা মৃত কোষকে দূর করে এবং তার ফলে আমাদের চুল সহজেই বেড়ে ওঠে। আমার মাথার তালুর স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং তালুতে অতি চুলকানোর ফলে ফোঁড়া হওয়া বা লাল হওয়া ভাবকে কমায়।
চুলের ড্যানড্রাফ কমায়
ঘৃতকুমারী আমাদের মাথার তালুর শুষ্কতা কমায়। এর ফলে ড্যানড্রাফও দূর হয়। ঘৃতকুমারীর আরেকটি সুবিধা হল যে ঘৃতকুমারী লাগানোর পর আমাদের চুল তেলতেলে হয় না। ঘৃতকুমারীতে অ্যান্টি ফাঙ্গালেরও গুন আছে যা আমাদের চুলের ড্যানড্রাফের হাত থেকে বাঁচায়।
প্রাকৃতিক চুলের তেল বা সিবামকে কমায়
সিবাম হলো আমাদের মাথার চুলের প্রাকৃতিক তেল। বাইরে থেকে তেল চুলে না লাগালে সিবাম আমাদের মাথায় নিঃসৃত হয়। এই সিবাম আমাদের চুলের পোর্সের মুখ আটকে দেয় যার ফলে আমাদের চুল সঠিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারেনা। সিবাম আমাদের চুলকে তেলতেলে করে তোলে। ঘৃতকুমারী আমাদের চুলে লাগালে আমাদের মাথার সিবাম দূর হয়।
চুলের পি.এইচ. মান বজায় রাখে
আমাদের চুলের পি.এইচ. মান ঘৃতকুমারী বজায় রাখে। ঘৃতকুমারী লাগালে আমাদের শুষ্ক চুল নরম হয়ে ওঠে এবং চুলের তেলতেলে ভাবও কমে। তাই বলা যেতে পারে যে ঘৃতকুমারী যে কোনো ধরণের চুলে লাগালেই আমাদের চুলের উন্নতি হয়।
চুলে কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে
শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুলে ঘৃতকুমারী লাগিয়ে তারপর কিছু মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এইভাবে ঘৃতকুমারী আমাদের চুলে কন্ডিশনার হিসেবেও কাজ করে। এর ফলে আমাদের চুল নরম হয়ে ওঠে এবং চুলের জটও ছেড়ে যায়। ঘৃতকুমারী চুলের জৌলুস আর উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
চুল পড়া কমায়
ঘৃতকুমারীর মধ্যে প্রটিওলাইটিক এনজাইম থাকে যা আমাদের মাথার তালুকে পরিষ্কার করে তোলে। তার ফলে আমাদের চুলের ডগায় এবং তালুতেও রক্তের চলাচল বেড়ে ওঠে এবং আমাদে চুল পড়ার প্রবণতা কমে যায়।
চুলে শ্যাম্পুর মতোও কাজ করে
আগেও যেমন লিখেছি যে ঘৃতকুমারীতে প্রচুর পরিমানের ভিটামিন, খনিজ থাকে যা আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারী। ঘৃতকুমারীর রসের সাথে নারকেলের দুধ, চুলে মাখার তেল,এবং জাজোবা তেল মিশিয়ে সেইটা চুলে লাগাতে হবে।এই মিশ্রণটি শুধু চুল পড়া কমায় তার সাথে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।
আমাদের চুল সম্পূর্ন পুষ্টি যোগায় ঘৃতকুমারী। বাইরে থেকে ঘৃতকুমারী না কিনতে চাইলে আমরা ঘৃতকুমারীর গাছ বাড়িতেই লাগাতে পারি। ঘৃতকুমারী পাতা নিয়ে তার উপরের সবুজ অংশটা কেটে বের করে দিতে হবে। তার পর ভিতরের জেলটা বার করে চুলে লাগাতে হবে। এইভাবে আমরা সহজেই ঘৃতকুমারীর গুণের লাভ গ্রহন করতে পারি।
সুন্দর চুলের মালকিন হতে চান তাহলে সপ্তাহে একদিন রিঠা ব্যবহার করুন
মন্তব্য করুন