সন্তান হওয়ার পর চেহারা ভারী হয়ে গেছে?নিজেকে আয়নার সামনে,আর তেমন ভালো লাগছে না?কি ভাবছেন কবে ফিরে পাব সেই আবার আগের মত চেহারা।এত মন খারাপ করার কিছু নেই।কারণ মাত্র একমাসেই আবার আপনি হয়ে উঠতে পারবেন আগের মত।বিশ্বাস হচ্ছে না?হ্যাঁ এটা সম্ভব যদি মন দিয়ে পড়েন আজকের এই লেখা।
মাইন্ড সেট করে নিন
একমাসের মধ্যে ওজন ঝরানোর জন্য আগে দরকার মাইন্ড সেট করা।মনে মনে ঠিক করে নিন যে একমাসের মধ্যেই আপনাকে ওজন ঝরাতে হবে।তার জন্য প্রতিদিন কি কি করবেন,কি করবেন না তার একটা চার্ট করে নিন।এটাও ঠিক করুন কতটা করে ওয়েট কমাতে চান।সাধারণত একমাসে ৬ থেকে ৮ পাউণ্ড ওয়েট ঝরালেই যথেষ্ট।তাহলে এক এক সপ্তাহে সেটা এক থেকে দু পাউণ্ড হবে।এবার প্রতিদিনের একটা রুটিন ঠিক করে নিন।একদম সকাল থেকে রাত অবধি একদম সময় ধরে কি কি করবেন একটা চার্ট করে নিন।রোজ সেই চার্ট দেখে কাজ করুন।
ক্যালোরি কমাতে হবে
খাবার থেকে ক্যালোরি কমাতে হবে।এই জন্য লো ক্যালোরি খাবার খান।তবে ক্যালোরিকে আবার একদম বাদ দেবেন না।ক্যালোরিও কিন্তু দরকার শরীরের জন্য।তাই ক্যালোরি যুক্ত খাবার খান তবে কম খান।রোজ ৫০০ মত ক্যালোরি বাদ দিন।ব্যাস তাহলেই একমাসের মধ্যে ওয়েট কমাতে পারবেন।বিভিন্ন ফুড ডায়েট অ্যাপ দেখুন কিভাবে ক্যালোরিকে প্রতিদিনের খাবার থেকে বাদ দিতে পারবেন।প্রয়োজনে ডায়েটেসিয়ানের পরামর্শ নিন।
সঠিক ডায়েট
একমাসের মধ্যে ওয়েট কমাতে কিন্তু না খেয়ে থাকলে একদমই চলবে না।হেলদি ডায়েট মেনে চলতে হবে।সকাল শুরু করুন গ্রীন টি দিয়ে।সারাদিন প্রচুর ফল,শাকসবজি বেশী করে খেতে হবে।খাবারে হোল গ্রেইন জাতীয় উপাদান বেশী করে রাখুন।প্রোটিন,ভিটামিন,ফাইবার যুক্ত খাবার বেশী করে খান।ভাজাভুজি এই একমাস বন্ধ রাখলেই ভালো।স্ন্যাকসে বেশী ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড একদমই না এই একমাস।বদলে লো ফ্যাট দুধ,কর্ন,ফল,টকদই এসব খান।এই একমাস ভাজাভুজি,অ্যালকোহল,মিষ্টি জাতীয় খাবার,দুধ জাতীয় খাবার,সোডা,এনার্জি ড্রিঙ্ক,চকোলেট,চিপস এসব বাদ দিলেই ভালো।ডার্ক চকোলেট খাওয়া যেতে পারে।খাবারের একটা সঠিক সময়ও কিন্তু দরকার।শুধু খাবার খেলেই হবে না।সকালে ঘুম থেকে উঠে দুঘণ্টার মধ্যে ব্রেকফাস্ট।তারপর ১টার মধ্যে লাঞ্চ।আবার রাতে ৯টার মধ্যে ডিনার।
এক্সারসাইজ
একমাসের মধ্যে রোগা হতে চাইছেন,অথচ শরীরচর্চা করবেন না তা কি করে হয়।জানি এই সময়ে আগের মত ব্যায়াম করা সম্ভব নয়।চিন্তা কি। রোজ জাস্ট ১০ মিনিট হাঁটুন আর হালকা কিছু ফ্রী হ্যান্ড।ব্যাস এতেই কাজ হবে।কি ভাবছেন?মাত্র ১০ মিনিট হেঁটে কি আর একমাসের মধ্যে ওয়েট কমবে নাকি?আমি বলব কমবে।তবে হাঁটতে হবে স্মার্টলি।মানে সকালে অতক্ষণ হাঁটার দরকার নেই।দুপুরে বা রাতে খাবারের পর বেশী না ১০ মিনিট হাঁটুন।১০ মিনিট ছাদেই ঘুরে বেড়ান।এতে অসাধারণ কাজ হয়।এতে অনেকটা ফ্যাট ওই একটুখানি সময়ে বার্ন হয়।শুধু যে ফ্যাট কমে তা নয়,রিসার্চ বলছে,এটা শরীর ভালো রাখার জন্য খুব ভালো।এতে ব্লাডসুগার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে যেটা সকালে হাঁটার থেকে অনেকবেশী ভালো কাজ দেয়।যদিও মাত্র ১০ মিনিট হাঁটলে কোন অসুবিধাই হবে না,কিন্তু তাও একবার ডাক্তারের থেকে পরামর্শ নিয়ে নিতেই পারেন যদি কোন অসুবিধা মনে করেন।
প্রচুর জল খান
জল আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।প্রতিদিন সকালে উঠে খালি পেটে ২গ্লাস জল খেয়ে নিন।এতে শরীরে জমে থাকা টক্সিন বেরিয়ে যাবে যেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।আবার টক্সিন জমে থাকার কারণে শরীরে ওজন বেশী হয়।তার ফলে টক্সিন বেরিয়ে গেলে ওজন কমবে এবং জল আমাদের পেট ভরার একটা অনুভূতি দেয়।তাই খাবার এক থেকে আধঘণ্টা পর,যদি একগ্লাস জল খান তাহলে,মেপে ডায়েট চার্ট মেইনটেইন করলেও,মানে মেপে খেলেও পেট ভর্তি লাগবে।তাই রোগা হওয়ার অভিযানে জল কিন্তু অপরিহার্য।
ফাইবারকে প্রাধান্য দিন
যেহেতু ওই সময়ে খুব বেশী ব্যায়াম করা যাবেনা,তাই খাবারের দিকেই বেশী মন দিতে হবে।তাই খাবারের তালিকায় রোজ বেশী করে রাখুন ফাইবার।বেশী করে ফাইবার জাতীয় খাবার খান।ফাইবার যেমন ওয়েট কমাতে দারুণ সাহায্য করে,তেমনই ফাইবার জাতীয় খাবার একটু খেলেই পেট ভরে যায়।আর অনেকক্ষণ পেট ভর্তি থাকে।তার ফলে খিদে কম পায়।ফাইবার খাবার জন্য,যেমন ব্রেকফাস্টে শুধু একটু ওটস আর স্যালাড বা বিকেলের দিকে খেলেন একটু ভুট্টা।এভাবেই টিফিন টাইমে শুধু রাখুন ফাইবার।আর সব খাবারই খাবেন কম নুন যুক্ত।যতটা পারেন ওই একটা মাস নুন কম খান।কারণ নুন শরীরে জলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।তার ফলে ওজন বেড়ে যায়।
তাহলে এই টিপসগুলো প্রতিটা মাথায় রাখুন।প্রতিটা রুটিন মেনে করতে থাকুন।আর এই একমাস বাড়ির খাবারই খান।জানি বাইরের খাবার খেতে কার না ভালোলাগে।কিন্তু একমাসে বাইরের খাবার একটু কষ্ট করে ভুলে থাকতে পারলে,একমাসে রোগা হওয়ার মিশনে আপনি সফল হবেনই।
মন্তব্য করুন