চুল ফেটে গেছে? ফ্রিজি চুল? এই সমস্যা তো আজ ঘরে ঘরে। আমরা শরীরে বিভিন্ন ময়েশ্চারাইজার মাখলেও চুলকে কিন্তু সেই ভাবে কন্ডিশনিং করি না। তার ফলে চুল প্রচণ্ড শুকিয়ে যায়। আর চুল ফেটে যাওয়ার সমস্যা শুরু হয়। না, চুলকে কন্ডিশন করার জন্য পার্লারে যেতে হবে না। বাড়িতে বসেই এটা করা যায়। হাতের কাছেই রয়েছে কয়েকটা উপাদান। যেগুলো চুলকে কন্ডিশন করতে সাহায্য করে। কীভাবে ব্যবহার করবেন সেগুলো, দেখুন।
১. দই এর প্যাক
টকদই খেতে খেতে নিশ্চয়ই একটু মুখে লাগিয়ে নেন। তবে শুধু মুখে নয়। চুল ভালো রাখতে একে মাথায়ও লাগান। কারণ দইয়ে আছে প্রচুর ল্যাকটিক অ্যাসিড যা স্ক্যাল্পকে এক্সফোলিয়েট করে। আর সাথে যোগ করুন ডিম। ব্যাস, বাজার থেকে আর আলাদা কন্ডিশনার কিনে লাগাতে হবে না। কারণ এই প্যাকই খুব সুন্দরভাবে চুলকে কন্ডিশনিং করবে।
উপকরণ
১টা ডিম, ৪ থেকে ৫ চামচ দই।
পদ্ধতি
প্রথমে ডিম ভালো করে ফেটিয়ে নিন। তারপর এতে যোগ করুন টকদই। ভালো করে দুটো মেশান। এবার এই ঘন পেস্টটা চুলে লাগান। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন স্ক্যাল্পে ও পুরো চুলে। তারপর ওটা ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। মাইলড শ্যাম্পু হলে ভালো হয়। এটা সপ্তাহে একদিন করলেই দেখবেন চুল কেমন নরম কোমল থাকছে। আর চুল ফাটাও নিয়ন্ত্রণ হবে।
পতঞ্জলির মিল্ক প্রোটিন হেয়ার ক্লিনজার, ২০০ মি.লি.
এটা চুলকে নারিশ করার সাথে সাথে খুশকি ও চুল পড়াও নিয়ন্ত্রণ করবে। কম বাজেটে খুব ভালো মাইলড শ্যাম্পু।
দাম ৯৫/-
২. নারকেল তেল ও মধু
নারকেল তেল নিশ্চয়ই বাড়িতে আছে? এর সাথে যোগ করুন মধু। ব্যাস, হেয়ার কন্ডিশনিং নিয়ে আর দু’বার ভাবতে হবে না। কারণ মধু ও নারকেল তেল দুটোই চুলের স্বাভাবিক ময়েশ্চারকে ফিরিয়ে আনে ও ময়েশ্চারকে ধরে রাখে। হেয়ার ফলিকলসকে ময়েশ্চারাইজড করে।
উপকরণ
৩ থেকে ৪ চামচ নারকেল তেল ও ২ চামচ মধু।
পদ্ধতি
সমস্ত উপকরণগুলি ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এটা স্ক্যাল্প সহ চুলে লাগান। হালকা একটু ম্যাসাজ করে করে লাগান চুলে। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে নিলেই হবে। শ্যাম্পু না করলেও কোনো অসুবিধা নেই। এটা সপ্তাহে দু’দিন করে ফেলুন। ১ মাস পর নিজেই তফাৎটা বুঝতে পারবেন।
৩. দারচিনি, মধু ও দুধ
আমরা আগেই জানলাম মধু চুলের ময়েশ্চারকে ধরে রাখে। আর দুধের মিল্ক প্রোটিন চুলকে কন্ডিশনিং তো করেই। তার সাথে চুলে একটা ভলিউমও অ্যাড করে চুলকে চকচকে করতেও সাহায্য করে। আর দারচিনি স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে চুলকে হেলদি করে তোলে।
উপকরণ
২ চামচ মধু, ৪ থেকে ৫ চামচ দুধ , ১ চামচ দারচিনি গুঁড়ো, ও ১ টা ডিম।
পদ্ধতি
প্রথমে ডিম ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এবার এতে বাকি উপকরণগুলো ভালো করে সব কিছু মেশান। একটা ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এবার এই পেস্টটা চুলে আর স্ক্যাল্পে লাগান। আধঘণ্টা রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এক্ষেত্রেও মাইলড শ্যাম্পু হলে ভালো হয়। সপ্তাহে একদিন করলেই কাজ হবে।
হিমালয়ার মাইলড শ্যাম্পু, ২০০ মি.লি.
এতে আছে জবা ফুলের গুণাগুণ। যা চুলকে কন্ডিশন করার সাথে সাথে, হেয়ার ফলিকলসকে পুষ্টি যোগায়। তার ফলে চুল হয়ে ওঠে সফট, সিল্কি ও স্মুদ।
দাম ১৪৫/-
৪. নারকেল তেল ও ডিম
কোনো ঝামেলায় যেতে না চাইলে, জাস্ট ডিমের সাথে একটু নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। ব্যাস, এটাই চুলকে কন্ডিশন করবে।
উপকরণ
১ টা ডিম ও ১ চামচ নারকেল তেল। কিন্তু চুল যদি বড় হয়, তাহলে উপকরণগুলির পরিমাণ আরও বাড়ানো যেতে পারে।
পদ্ধতি
ডিম আগে ফেটিয়ে নিতে হবে। এরপর এর সাথে নারকেল তেল মেশাতে হবে। ভালো করে দুটো উপকরণ মিশিয়ে নিন। এবার এটা স্ক্যাল্প সহ পুরো চুলে ভালো করে লাগান। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন করলেই দেখবেন, চুল হবে নরম আর সিল্কি।
এই প্রত্যেকটা প্যাকই ভীষণ ভালো কাজ দেয়। চুলকে প্রাকৃতিক ভাবে কন্ডিশনিংও করে। আবার চুল পড়া, খুশকি এসব সমস্যাও নিয়ন্ত্রণ করে। তাই আজ থেকেই ট্রাই করতে থাকুন। প্রতি সপ্তাহে এক একটা ট্রাই করুন। কথা দিচ্ছি ১ মাস পর তফাৎটা চোখে পড়বে।
মন্তব্য করুন