দাদ তো সারিয়েছেন। কিন্তু দাদের ওই বিচ্ছিরি দাগ কিছুতেই যাচ্ছে না? আর আপনার তাই মন খারাপ? দাদের দাগ কিন্তু আসলে দাদ সেরে যাবার পরেও অনেকদিন পর্যন্ত থেকে যায়। জানি খুবই বাজে একটি সমস্যা। যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্যই আজ থাকল চারটি দারুণ টিপস। যাতে বাড়িতে বসেই এই জেদি দাগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
দাদ কেন হয়?
দাদ এক ধরনের চামড়ার রোগ। যেটি ছত্রাকের আক্রমণে হয়ে থাকে। সাধারণত শরীরের কোনো অংশ অনেকক্ষণ ভিজে থাকলে বা শরীরের কোন অংশের ক্ষত সহজে না শুকোলে বা অন্তর্বাস খুব টাইট পড়লেও এই সমস্যা হয়। স্যাঁতস্যাঁতে, অপরিষ্কার জায়গায় এই ছত্রাকের আক্রমণ হয়। আর সঠিক সময় চিকিৎসা না করালে আবার বেড়ে যেতে পারে।
১. লেবুর রস
আমরা জানি লেবুর রস যেকোনো দাগ তোলার ক্ষেত্রেই দারুণ কাজ দেয়। এক্ষেত্রেও যে বিফল হবে না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
পদ্ধতি
লেবুর রসের সাথে একটু জল মিশিয়ে নিন। এবার এতে তুলো ভিজিয়ে রাখুন। ভিজে গেলে সেটি দাদের জায়গায় লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। এটি একদিন অন্তর সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন করুন। তবে এটি লাগিয়ে রোদে যাবেন না। সূর্যরশ্মি এক্ষেত্রে ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সন্ধ্যা বা রাতে করার চেষ্টা করুন।
২. গ্রীন টি
গ্রীন টি-তে আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা দাদের সমস্যা তো কমায়ই। তার সাথে দাদের দাগ থেকেও মুক্তি দেয়।
পদ্ধতি
গ্রীন টি ব্যাগ কিনে আনুন। এই টি ব্যাগ এবার গরমজলে কিছুক্ষণ চুবিয়ে রাখুন। এবার এই টি ব্যাগ একটু চিপে অতিরিক্ত জল বার করে নিন। জল বার করে নেবার পর, টি ব্যাগ দাদের জায়গায় রাখুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। দিনে দু’বার করে করুন নিয়ম করে। উপকার পাবেন।
৩. মধু
মধুও কিন্তু দাদের দাগ তোলার ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ দেয়। মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে। আর আপনার দাদের জায়গাটিকে ময়েশ্চারাইজড করে। তাছাড়া মধু খুব ভালো ব্লিচের কাজও করে। তার ফলে দাদের দাগ সহজেই হালকা হয়ে যায়।
পদ্ধতি
ঘন মধু দাদের জায়গায় লাগান। হালকা একটু ম্যাসাজ করুন। একঘণ্টা পর হালকা গরম জলে ধুয়ে নিন। এটাও দিনে দু’বার করে করতে পারেন যদি তাড়াতাড়ি ফল পেতে চান। দেখবেন দাদের জেদি দাগ কেমন আস্তে আস্তে হালকা হচ্ছে!
৪. কমলালেবুর খোসা
দ্রুত দাদের দাগ দূর করতে কাজে লাগান কমলালেবুর খোসাকে।
উপকরণ
২ চামচ মুসুর ডাল বাটা, ২ চামচ কমলালেবুর খোসা গুঁড়ো, ১ চামচ চন্দন পাওডার, ১ চামচ মুলতানি মাটির গুঁড়ো।
পদ্ধতি
মুসুর ডাল বাটা, কমলালেবুর খোসা গুঁড়ো, চন্দন পাওডার আর মুলতানি মাটির গুঁড়ো একসাথে মিশিয়ে ভালো করে পেস্ট বানান। এবার সেটি ওই দাগের জায়গায় ভালো করে লাগান। হালকা শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন করুন। এটি খুব ভালো কাজ দেবে দাদের দাগ দূর করার ক্ষেত্রে।
মনে রাখবেন
১. জামাকাপড় সব সময় পরিষ্কার রাখবেন।
২. যদি বাড়িতে কারুর এই সমস্যা হয় তাহলে তার গামছা, সাবান, জামাকাপড় ব্যবহার করবেন না।
৩. খুব টাইট অন্তর্বাস একদম পরবেন না।
৪. শরীর পরিষ্কার রাখবেন।
৫. নিয়মিত শ্যাম্পু করবেন। মাথায় অতিরিক্ত খুশকি থেকেও ইনফেকশন হয়ে এই সমস্যা হয়। আর খুশকি থাকলে তার চিকিৎসা করবেন।
৬. এক্ষেত্রে ভিটামিন ডি, সি এই দাগ তুলতে বেশ উপকার দেয়। তাই ভিটামিন ডি, সি যুক্ত খাবার বেশি করে খান। আর ভিটামিন ডি অয়েলও কিনতে পাওয়া যায়। সেটিও লাগাতে পারেন।
৭. শরীরে ক্ষত থাকলে সেই সময় তেল মাখবেন না। বা খুব অয়েলি খাবারও খাবেন না। ক্ষতকে তাড়াতাড়ি শুকোতে দিন। ক্ষত শুকিয়ে যাবার পর তেল মাখতে পারেন আবার।
৮. একই মোজা, অন্তর্বাস প্রতিদিন ব্যবহার করবেন না। পাল্টে পাল্টে পরিষ্কার ব্যবহার করুন।
এই টিপসগুলো অবশ্যই মাথায় রাখবেন। তাহলে দাদের যন্ত্রণা থেকেও থেকেও বাঁচবেন। আর দাদের দাগ থেকেও।
মন্তব্য করুন