হ্যান্ডসাম, টল নায়ক বলতেই আমরা বরাবর বলিউডের দিকে তাকিয়েছি। ঋত্বিক রোশান, জন আব্রাহাম, বরুন ধাওয়ান থেকে বিদ্যুৎ জামওয়াল তালিকাটা কিন্তু বেশ লম্বা।
বাঙালি নায়ক আর সেরকম টল, ডার্ক, হ্যান্ডসাম কোথায়! এই হতাশার দিন কিন্তু এখন শেষ। বাংলা সিনেমার জগতে এখন হ্যান্ডসাম হাঙ্কদের ভালোই রমরমা। নানা অর্থেই কিন্তু তাঁরা লেডি কিলার।
১. জিৎ
জিতেন্দ্র মাদনানি বললে আমরা কেউ তাঁকে চিনব না। কিন্তু জিৎ বলার সঙ্গে সঙ্গেই সামনে ভেসে উঠবে একজন লম্বা, সুপুরুষ নায়কের ছবি। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। আমরা সেই জিতের কথাই বলছি যার এই কয়েকদিন আগে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি অসুর দেখেছেন আপনারা।
গুগুলে বলছে বয়স এখন একচল্লিশ। কিন্তু জিৎ দেখিয়ে দিয়েছে বয়স বাড়লে বরং রূপ আরও খোলে। একবার গুগুল ইমেজে গিয়ে জিৎএর ছবিগুলো সার্চ করে দেখুন। আমি হলফ করে বলতে পারি ওইরকম ন্যাচারাল গ্লো, ওইরকম টানটান চোখ খুব কম বাঙালি অভিনেতার আছে। এর একটা কারণ হতে পারে তিনি সিন্ধ্রি পরিবার থেকে এসেছেন। তবে হ্যান্ডসাম বাঙালির মধ্যে কিন্তু জিৎ এক নম্বরে থাকবে।
২. দেব
এখন বলতে গেলে টলিউডে দেব হায়েস্ট পেইড অভিনেতাদের মধ্যেও প্রথম দিকে। এর সঙ্গে হ্যান্ডসাম হওয়ার দৌড়েও কিন্তু দেব লম্বা রেশের ঘোড়া। অনেক দিন মুম্বইতে থাকার জন্য নিজেকে তৈরি করেছেন ওই ঘরানায়। তাই বাংলায় অভিনয় করতে এসেই বেশ নজর কেড়েছেন।
দেবের মধ্যে একদিকে যেমন ওই পাশের বাড়ির ছেলের মতো সারল্য আছে, তেমনই সে আবার একটা পার্সোনালিটিও বজায় রাখে। সব মিলিয়ে দেব সামনের দিকে থাকবেই।
৩. আবীর চট্টোপাধ্যায়
আবীরের অভিনয় নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। কিন্তু আবীর কেমন দেখতে সেই নিয়ে কিছু বলার অবকাশ আছে। আবীর কিন্তু সেই অর্থে সিক্স প্যাক করা জিমে যাওয়া হ্যান্ডসাম নায়ক নয়। কিন্তু আবীরের সৌন্দর্য তাঁর ব্যক্তিত্বে, যাতে ফিদা অনেক অনেক রমণী।
আবীরের মতো স্মার্ট ভাবে ধুতি পরে ব্যোমকেশ চরিত্রটি আর কেউ কিন্তু ফুটিয়ে তুলতে পারেননি। বরং ওই লুকটিতেই আবীরকে বেশ মাচো লাগছিল। আর আবীরের উচ্চতা নিয়ে তো নতুন করে কিচ্ছু বলার নেই। টলিউডের হায়েস্ট পেইড নায়ক হওয়ার পাশাপাশি হায়েস্ট অ্যাট্রাক্টিভ নায়কও বটে আবীর।
৪. অনির্বাণ ভট্টাচার্য
অভিনয়ে তুখর, তাঁর সঙ্গে সমান তুখর কথা বলায়। যে কোনও চরিত্রে সাবলীল। কিন্তু দেখতে? আপনি বলবেন এমন কী আর! আমি বলব আছে আছে। মেয়েমহলে কান পাতলেই অনির্বাণের ক্রেজ বুঝতে পারবেন।
অনির্বাণের ইউএসপি ওর বাঙ্গালিয়ানা বজায় রাখার মধ্যে। হ্যান্ডসাম হতে গেলে যে শুধু জিম যথেষ্ট নয়, তার সঙ্গে ব্যক্তিত্ব, ঝকঝকে কথা বলা, আর স্মার্টনেসও সমান দরকার সেটার প্রমাণ অনির্বাণ।
আরও ভালো করে বলতে হলে অনির্বাণের চেহারা অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত। সব মিলিয়ে অনির্বাণকে হ্যান্ডসামের লিস্টে ওপরের দিকেই রাখতে হচ্ছে।
৫. অঙ্কুশ
ভিলেন সিনেমা থেকে অঙ্কুশের একদম ভোলবদল হয়েছে। আগে যে অঙ্কুশকে দেখা যেত সেখান থেকে একদম ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে এখনকার অঙ্কুশ হাজরা। নিয়মিত জিমে গিয়ে কসরত করে কীভাবে চেহারা বানাতে হয় সেটা কিন্তু অঙ্কুশ দেখিয়ে দিয়েছে।
আমরা ইন্সটাগ্রাম, টুইটারে অঙ্কুশকে ফলো করলেই বুঝতে পারবো কীভাবে অঙ্কুশ নিজেকে বদলেছে। সিক্স প্যাক, ভাঙা গাল, চওড়া কাঁধ, সব মিলে অঙ্কুশ এখন ভেতো বাঙালি থেকে অনেক দূরে। গুগুলে গিয়ে ইমেজ চেক করলেই আপনাকে খানিক থামতে হবেই।
৬. টোটা রায়চৌধুরী
বরাবর শরীর সম্পর্কে সচেতন। নিয়ম মেনে জিমে যাওয়া, যোগাভ্যাস, শরীর চর্চা আর পরিমিত আহার, এই সব একসঙ্গে যদি কারোর মধ্যে দেখতে চান, তিনি হলেন টোটা রায়চৌধুরী। ইদানীং শ্রীময়ী সিরিয়ালে রোহিত সেন হিসেবে আপনারা ওনাকে দেখছেন।
বাঙালিদের মধ্যে এরকম বর্ন হ্যান্ডসাম খুব কম আছে। উচ্চতা, শারীরিক গঠন, কথা বলা, তাকানো সব মিলিয়ে অত্যন্ত সুপুরুষ একজন অভিনেতা। তবে তাঁর এই নির্মেদ ঝকঝকে চেহারার রহস্য কিন্তু আরেকটাও। আমরা অনেকেই জানি না যে তিনি একজন মার্শাল আর্টিস্ট। তিনি আর্মিতে যাবেন ভেবেছিলেন। এবার বুঝতে পারছেন তো, এই হ্যান্ডসাম হাঙ্ক কেন এতো হ্যান্ডসাম।
৭. বিক্রম চ্যাটার্জী
বিক্রম সম্পর্কে প্রথম যে শব্দটা আসে সেটা হল কিউট। অতিরিক্ত সিক্স প্যাক না, অতিরিক্ত কায়দা করা নয়। একটা সুন্দর প্রেসেন্টেবল লুক নিয়ে অনেক অনেক তরুণীর বুকে ঝড় তোলে যে সে বিক্রম। একটা সুন্দর মার্জিত, দুষ্টু-মিষ্টি লুকের ছেলে বিক্রম। ইচ্ছেনদী সিরিয়াল হোক, কি এলার চার অধ্যায়, বিক্রমের সচেতন উপস্থিতি আমাদের নজর কাড়েই।
৮. যশ দাসগুপ্ত
তা গুগুল উচ্চতা বলছে প্রায় ৬ ফুটের কাছাকাছি। জিম করা পেটাই চেহারা, টি-শার্ট, জিন্স, সানগ্লাস, যশের মেয়েদের মন ভোলাতে আর কিছু লাগেনি। বোঝেনা সে বোঝেনা সিরিয়াল যশের জন্যই কিন্তু অন্যতম হিট সিরিয়াল ছিল।
যশ হলেন সেই কয়েকজন বাঙালি অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম যারা বাঙালি চেহারা প্রায় রাখেননি নিজেদের মধ্যে। আমরা অনেকেই যশকে দেখে ভেবেছিলাম যে বাঙলায় এরকম চেহারার মানুষও হয় বুঝি! অনেকটা বলিউডি টাচ আছে যশের মধ্যে।
৯. যীশু সেনগুপ্ত
মহাপ্রভুর চরিত্রে যে যীশু অভিনয় করেছিলেন তাঁর সঙ্গে আজকের যীশুর আকাশপাতাল পার্থক্য। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চেহারার পরিপক্কতা, বুদ্ধিমত্তা সব মিলিয়ে টলিউডের অন্যতম হ্যান্ডসাম কিন্তু যীশু সেনগুপ্ত। তবে যীশুর সৌন্দর্যের আসল রহস্য কিন্তু যীশুর মনে। যীশুর ভালো মনের বহিঃপ্রকাশই ঘটে রূপের মধ্যে দিয়ে।
১০. ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত
যদিও তিনি বেশি কাজ করেছেন মুম্বইতে, তাও বাঙালি বলে তো কথা। যেহেতু বেশির ভাগ সময়েই মুম্বইতে থাকেন, তাই শরীরচর্চা, জিম এইসবে অভস্ত ইন্দ্রনীল খানিক আলাদাই। মডেলিং করার জন্য চেহারার প্রতি নিখুঁত পর্যবেক্ষণ বরাবরই ছিল। আর তাই তো ৪৫ বছর বয়সেও হ্যান্ডসাম অভিনেতাদের মধ্যে তিনিও একজন।
আপনার পছন্দের কে সবচেয়ে বেশি এদের মধ্যে? আর আপনিও কী আমাদের এই ক্রমের সঙ্গে একমত? জানাতে কিন্তু ভুলবেন না।
মন্তব্য করুন