করোনা ভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য আমরা সবাই এখন গৃহবন্দী। কিন্তু তাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা। যেহেতু এখনও কোনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা যায় নি তাই সরকারকে নতুন নতুন পন্থা বা স্ট্র্যাটেজি নিতে হচ্ছে এই কোভিড ১৯ এর সঙ্গে লড়াই করার জন্য।
এবার সেই রকম একটি পন্থা হল সারা দেশকে তিনটি ‘কালার জোন’ এ ভাগ করে দেওয়া-রেড জোন, অরেঞ্জ জোন আর গ্রিন জোন । স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে সম্প্রতি এই রকম নির্দেশ এসেছে রাজ্য সরকারগুলির কাছে। আসুন আমরা দেখে নিই এই তিনটি রঙের কোন জোন ঠিক কী ইঙ্গিত করছে।
রেড জোন
![রেড জোন](https://dusbus.com/wp-content/uploads/2020/04/Red-Zone.jpg)
সবচেয়ে আশঙ্কা করার মতো অঞ্চলগুলিকে রাখা হয়েছে এই রেড জোনে। সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে বা ছড়াচ্ছে এই অংশ থেকেই। গোটা দেশে ১৭০ টি জেলা চিহ্নিত করা হয়েছে এই অংশের মধ্যে। এদের ‘হটস্পট’ ও বলা যেতে পারে। এই অংশকে আবার দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেমন অতি স্পর্শকাতর অঞ্চল বা ‘লার্জ আউটব্রেক’ অঞ্চল যার সংখ্যা ১২৩টি জেলা, আর ৪৭ টি হল স্পর্শকাতর বা ‘ক্লাস্টার আউটব্রেক’ অঞ্চল। দেশের ৮০ শতাংশ রোগের খবর আসছে এই রেড জোন থেকেই। ভারতের সকল মেট্রো শহর যেমন মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতা, দিল্লি, বেঙ্গালুরু আর হায়দ্রাবাদ পড়ছে এই জোনের মধ্যে।
- এই জোনের মানুষের বাইরে যাওয়া বা বাইরে থেকে এই অঞ্চলে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
- এই জোনের সব মানুষ ঘরেই থাকবেন।
- প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া হবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে।
- একটি হেল্প লাইন নম্বর থাকবে যেখানে ফোন করে সমস্যার কথা বলা যাবে।
- কলকাতা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা, হাওড়া আর মেদিনীপুর পূর্ব এই অঞ্চলে পড়ছে।
অরেঞ্জ জোন
যে সব অঞ্চলে সংক্রমণের খুব বেশি সংখ্যা অতীতে পাওয়া যায় নি আর বর্তমানে এখনও অবধি নতুন সংক্রমণ আর হয়নি, সেই সব অঞ্চল পড়বে এই জোনের মধ্যে। অবশ্য তার জন্য ১৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে। ১৪ দিনের মধ্যে নতুন সংক্রমণের খবর না এলে তা হবে অরেঞ্জ জোন। উল্লেখ্য, অরেঞ্জ জোনে সংক্রমণের সংখ্যা কমার ইঙ্গিতও থাকবে।
- এই সব অঞ্চলের মানুষও বাইরে যেতে পারবেন তবে নির্দিষ্ট সময় সরকার দিয়ে দিতে পারে। তার মধ্যে সব কাজ করতে হবে।
- সামান্য চাষবাস করা যেতে পারে।
- আটা, তেল বা ডাল প্রস্তুতকারক ছোট ব্যবসায়ী দূরত্ব মেনে নিজেদের কাজ চালাতে পারেন।
গ্রিন জোন
![A Man Going with Grocery.](https://dusbus.com/wp-content/uploads/2020/04/Green-Zone.jpg)
গত ২৮ দিনে যে অঞ্চলে একটিও করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া যায় নি সেই সব অঞ্চল পড়বে গ্রিন জোনে অর্থাৎ সুরক্ষিত অংশে। এখনও পর্যন্ত মোট ২০৭ টি জেলা এই জোনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- এই অঞ্চলের মধ্যে যেহেতু সংক্রমণ তেমন ছড়ায়নি, তাই এই অঞ্চলের মানুষ বাইরে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারবেন। অবশ্যই তাঁদের সামাজিক দূরত্ব বা লকডাউনের নিয়ম মানতে হবে।
- কেউ জমায়েত করতে পারবেন না।
- এই অঞ্চলে লকডাউনের নিয়ম খানিক শিথিল থাকবে। তবে যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন তাঁরা বাইরে একদমই যেতে পারবেন না।
- এই অঞ্চলে কোনও অফিস থাকলে তাতে কাজ চলতে পারে, কিন্তু সীমিত কর্মী নিয়ে নিয়ম মেনে।
আমরা আশা করতে পারি এই নতুন ভাবে গোটা দেশকে ভাগ করতে প্রতি অংশে গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা হলে অনেক তাড়াতাড়ি আমরা সুস্থ হয়ে উঠবো।
মন্তব্য করুন