এখন করোনার পরিস্থিতিতে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো খুব দরকার। সবসময়ে যে দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়া যায় তাও তো নয়। বরং ঘরোয়া অনেক কিছু আমাদের ভিতর থেকে মজবুত বানাতে সাহায্য করে।
আজকে আপনাদের সঙ্গে গিলয় পাচন কীভাবে আপনাকে যে কোনও ইনফেকশন থেকে বাঁচাতে পারে সেই বিষয়ে আলোচনা করব।
কী দরকার এই পাচন খাওয়ার?
করোনার সময় এখন। তাই আমাদের ভিতর থেকে সুস্থ থাকা খুব দরকার। ভিতর থেকে সুস্থ থাকলেই কিন্তু ইনফেকশন অনেক কম পরিমাণে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারবে। করোনা ছাড়াও আমাদের বাংলায় তো অন্য অনেক রকম রোগ হয়ই।
এখন বর্ষার সময়ে এমনিতেই আমাদের সহজে সর্দি, কাশি, জ্বর হয়। সেগুলির থেকেও তো ভালো থাকতে হবে। তাই সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এই ডিককশন দরকার। এতে যে প্রাকৃতিক উপাদান আছে, যেমন তুলসী, হলুদ, আদা এই সব উপাদানেরই তো নিজস্ব গুণ আছে। এদের নিজস্ব ক্ষমতা আছে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর। আর এই সব উপকরণ যে মিশ্রণে একসঙ্গে মিশছে সেই মিশ্রণ চোখ বুজে আপনার বিশ্বাসের জায়গা নেবে। সবচেয়ে বড় কথা, এর কোনও সাইড এফেক্ট নেই।
উপকরণঃ
এটি বানাতে যে যে উপকরণ লাগবে সেগুলির একটি তালিকা দেখে নেওয়া যাক,
গিলয়।
- ৬টা মতো গোটা গোলমরিচ
- ৬ -৭টা লবঙ্গ
- ১ ছোট চামচ দারচিনি গুঁড়ো
- ১ ছোট চামচ হলুদ গুঁড়ো
- ১২টা মতো তুলসী পাতা
- ৫টা মতো এলাচ
- শুকনো আদার গুঁড়ো বা আদা
কীভাবে বানাবেন?
গিলয় কিনে সেটি এক ইঞ্চি করে কেটে নিন কয়েক টুকরো।

একটু বড় ধরণের বাজারে গেলে গিলয় পেয়ে যাবেন। কয়েক টুকরো কেটে নিয়ে গিলয় আগে জলে খানিক ভিজিয়ে রাখুন। এবার ভিজে খানিক নরম হওয়া গিলয় খানিক থেঁতো করে নিন।
গ্যাসে একটি বড় পাত্র নিন আর তাতে এক লিটারের ওপর জল দিন গরম হতে। একটু ফুটে আসলে এর মধ্যে থেঁতো করা গিলয় দিন। ধীরে ধীরে দিয়ে দিন গোটা গোলমরিচ, লবঙ্গ, দারচিনি গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, সামান্য থেঁতো করা তুলসী পাতা, এলাচ।





যদি আপনার কাছে শুকনো আদার গুঁড়ো থাকে তাহলে এক চামচ দিতে পারেন। না থাকলে এমনি আদা একটু থেঁতো করে দিয়ে দিন ওই জলে।

এবার এই জল খুব ভালো করে ফোটান। আঁচ রাখবেন অল্প, যাতে সব জিনিসের গুণ ভালো করে জলে মেশে। এটি তৈরি হতে মোটামুটি ২০ মিনিট মতো লাগবে।জল যখন অর্ধেক হয়ে আসবে তখন গ্যাস থেকে জল নামিয়ে নিন। ব্যস, তৈরি আপনার গিলয় পাচন।

কীভাবে খাবেন এই পাচন
আগে মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। এই মিশ্রণটি থার্মোস্টল ফ্লাস্কে রেখে দিতে পারেন। সকালে এবং সন্ধ্যেবেলা এই মিশ্রণ বাড়ির বড়দের অবশ্যই খাওয়ান। তবে মনে রাখবেন এই মিশ্রণ কিন্তু গরম গরম খেতে হবে। যদি সকালে খালি পেটে খেতে পারেন তাহলে তো সবচেয়ে ভালো উপকার পাবেন।
কীভাবে সুস্বাদু বানাবেন এই পাচন
গিলয় নিমগাছে হয়। বুঝতেই পারছেন এই নিম গিলয় কতটা তেঁতো এবং বাজে খেতে হতে পারে। তাই আপনারা সাধারণ গিলয় নিন। কিন্তু তাও একটা শিকড় জলে ফুটিয়ে খেতে কতই বা ভালো হতে পারে। তাই কিছু চটপটা জিনিস দিয়ে আপনি এই মিশ্রণ খেতে লোভনীয় করে তুলতে পারেন। কী কী লাগবে এর জন্য? এক গ্লাস হিসেবে আমরা বলে দিচ্ছি।
২ চামচ লেবুর রস, এক চিমটি বিটনুন, খানিক এলাচ গুঁড়ো, আদার গুঁড়ো।


আপনি যে মিশ্রণটি বানালেন তাতে লেবুর রস আর বিটনুন দিলে স্বাদ ভালো খুলবে। তার সঙ্গে আগে থেকে একসঙ্গে গুঁড়ো করা দারচিনি আর শুকনো আদার গুঁড়োও দিতে পারেন। আদা খানিক ঝাঁজ আনবে আর দারচিনি আনবে স্পাইসি ভাব। আর এলাচ তো সবসময়েই যে কোনও কিছুর স্বাদ বাড়ায়। এভাবে বানালে কিন্তু বাচ্চারাও খুব ভালো করে খেয়ে নেবে। ওরা তো নয়তো এই জিনিস খেতেই চাইবে না। কিন্তু বাচ্চাদের খাওয়া তো খুব দরকার।

এবার গিলয় জোগাড় করে এই মিশ্রণ বানান। খুব বেশি উপকরণ নয় আর সব উপকরণ পেয়ে যাবেন সহজে। কাল থেকেই খাওয়া শুরু করে দিন। ভালো থাকবেন।
মন্তব্য করুন