অনেক দিন হয়ে গেল আপনি মন খুলে হাসতে পারেন না। ভুল বললাম, মন খুলে নয়, মুখ খুলে। বন্ধুদের মধ্যে বা অন্য কোনও পার্টিতে যখনই আপনি হাসেন তখনই মুখ টিপে হাসেন। না হলে তো অন্য উপায়ও নেই। মুখ খুলে হাসলেই যে আপনার ওই হলুদ দাঁত দেখা যাবে। আর সেটা তো খুবই অপ্রস্তুত করে।
অনেক সময়ে বিজ্ঞাপনের অনেক কথায় ভুলে আমরা সেই সেই টুথপেস্ট ব্যবহার করে ফেলি। কিন্তু লাভ আদৌ হয় না। তাই আসুন আজ আপনাদের বলি কীভাবে বাড়িতে বসেই আপনি দাঁতের হলুদ দাগ দূর করতে পারবেন আর মুখ খুলে হাসতে পারবেন।
১. তেল ব্যবহার করুন
তেল ব্যবহার বা অয়েল পুলিং কিন্তু আমাদের দাঁতের হলুদ দাগ তোলার জন্য খুবই কার্যকরী। এটি ভারতে অনেক দিন ধরেই চালু আছে। সাধারণত এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় সূর্যমুখীর তেল বা সিসাম অয়েল।
কিন্তু আপনি নারকেল তেলও ব্যবহার করতে পারেন। নারকেল তেল খুব ভালো ভাবে ব্যাকটেরিয়া দূর করে। আর হলুদ দাগের জন্য কিন্তু ব্যাকটেরিয়া খুব বেশি মাত্রায় দায়ী।
দাঁতের এনামেলের উপর হওয়া এই দাগ নারকেল তেল তাই সহজেই দূর করে দেয়। এর জন্য আপনাকে টুথব্রাশে নারকেল তেল কয়েক ফোঁটা নিয়ে অন্তত ১০ মিনিট ধরে মাজতে হবে। পারলে এটি আপনি রোজ করুন।
২. বেকিং সোডার ব্যবহার
বিভিন্ন স্টাডিতে দেখা গিয়েছে যে যে টুথপেস্টে বেকিং সোডা আছে সেগুলো বেশি কাজের হয় যেগুলোতে বেকিং সোডা নেই সেগুলোর থেকে।
বেকিং সোডা আস্তে আস্তে আপনার দাঁত থেকে হলুদ দাগ তুলতে সাহায্য করে। খুব ভালো স্ক্রাব করে বেকিং সোডা। আর দেখা গিয়েছে বেকিং সোডা ব্যবহার করলে আপনার মুখে ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবও কম হয়।
বেকিং সোডা জলে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে সেটা দিয়ে ব্রাশ করুন। এটি সপ্তাহে বেশ কয়েক বার করুন।
৩. অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের ব্যবহার
অ্যাপেল সিডার ভিনিগার অনেক দিন ধরেই ব্যবহার করা হচ্ছে ন্যাচরাল ক্লিনিং এর উপাদান হিসেবে। অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের মধ্যে যে অ্যাসেটিক অ্যাসিড আছে তা ব্যাকটেরিয়া দূর করতে অনবদ্য কাজ দেয়।
এর পাশাপাশি ভিনিগারের মধ্যেই যে নিজস্ব অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে তা এই হলুদ দাগ তুলতে খুব ভালো কাজ দেয়। কিন্তু এটি পেস্টের মতো ব্যবহার করা যাবে না। এটি ব্যবহার করতে হবে মাউথওয়াশের মতো করে।
জলে খানিক অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিয়ে কুলকুচি করুন ভালো করে। তারপর অবশ্যই পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন।
আর মনে রাখবেন, যেহেতু এই ভিনিগারে অ্যাসেটিক অ্যাসিড আছে, যা দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে, তাই রোজ এটি ব্যবহার করবেন না।
৪. কমলালেবুর খোসা দিয়ে দাঁত ঘষুন
এইটা সম্ভবত আপনারা খুব একটা শোনেননি। কমলালেবুর খোসা কিন্তু খুবই উপকারী আপনার দাঁতের জন্য।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে কমলালেবুর খোসার মধ্যে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান খুব ভালো ভাবে দাঁত পরিষ্কার করে।
এছাড়াও এতে আছে লিমোনিন যা দাঁতের যে কোনও দাগ, বিশেষত ধূমপানের ফলে যে কালচে দাগ হয়ে যায়, তা তুলতে খুবই কার্যকরী।
তাই রোজ অন্তত দু বার এই খোসা দিয়ে দাঁত ঘষুন দিনে অন্তত ৫ মিনিট ধরে। এটি টানা করে যান।
৫. তুলসী পাতার কামাল দেখুন
তুলসী পাতার মধ্যে কিন্তু দাঁত সাদা করার উপাদান আছে। বিশেষ করে দাঁতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, পাইওরিয়া, সেটা থেকে কিন্তু তুলসী পাতা খুব ভালো ভাবে দাঁতকে রক্ষা করে।
এটি শুধু হলুদ দাগ তুলেই দেয় না, হলুদ দাগ যাতে না হয় সেই দিক থেকেও দাঁতের যত্ন করে। তুলসী পাতা আপনি পেস্টের সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন।
তার জন্য বেশ কয়েক দিন আগে রোদে শুকিয়ে নিন তুলসী পাতা। তারপর সেটি গুঁড়ো করে নিন আর সেই গুঁড়ো তুলসী পাতা পেস্টের মধ্যে নিয়ে মাজুন। এটি আপনি চাইলে রোজই করতে পারেন।
উপরে বলা হল যে উপাদানগুলোর কথা সেগুলোর মধ্যে যেটা আপনার ভালো লাগে সেটা ব্যবহার করুন। কিন্তু একটু সময় নিয়ে করুন। সঙ্গে সঙ্গে আপনি কাজ পাবেন না। দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহার করলে আর নিয়ম করে ব্যবহার করলে আপনি আপনার মুক্তোর মতো দাঁত আবার ফিরে পাবেন।
মন্তব্য করুন