ত্বক কালো বলে নিশ্চয়ই আপনার মুখ গোমড়া? কিন্তু আপনার ত্বকের কমপ্লেকশান যদি বাড়াতে চান, তাহলে শুধু ক্রিম, প্রসাধনী ব্যবহার করে কোন লাভ নেই।
কমপ্লেকশান উজ্জ্বল করতে দরকার ভেতর থেকে যত্নের। তাই আজ দেব এমন কিছু টিপস, যদি নিয়মিত এগুলো করতে পারেন তাহলে, বেশি না, এক থেকে দু’মাসের মধ্যেই নিজের কমপ্লেকশনের তফাৎটা নিজেরই চোখে পড়বে।

১. প্রচুর জল খান
রোজ তিন থেকে চার লিটার জল খেতে হবে। বেশি করে জল খেলে শরীরে ক্ষতিকর টক্সিন জমতে পারে না। যেটা গ্লোয়িং স্কিনের একটা রহস্য। আর পরিমিত জল শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। খাবার ঠিকমত হজম হতে সাহায্য করে। ঠিকমত রক্তসঞ্চালন না হলে, শরীরে নানান সমস্যা দেখা দেয়। তাই হেলদি শরীর ও হেলদি কমপ্লেকশন পেতে জল বেশি করে খান।
২. স্ট্রেস ফ্রি থাকুন
যদি মনে খুব স্ট্রেস থাকে সেটার জন্য শরীরে প্রভাব তো পরেই স্কিনেও এর প্রভাব পড়ে। স্কিন তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়। অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত টেনশন, স্ট্রেস এসবের কারণে স্কিনের বিভিন্ন সমস্যাও হয়। তাই যদি কমপ্লেকশন বাড়াতে হয়, তাহলে অবশ্যই নিজেকে স্ট্রেস ফ্রি রাখতে হবে যতটা সম্ভব। নিজেকে আনন্দে রাখলে তবেই নিজেকে হেলদি এবং গ্লোয়িং রাখা সম্ভব।
৩. হারবাল টি

দুধ চা এর বদলে খান হারবাল টি। এতে অতিরিক্ত ওজনও যেমন নিয়ন্ত্রণে আসবে তেমনি স্কিনও উজ্জ্বল হবে। হারবাল টি-তে থাকে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা শরীর ও স্কিনকে রাখে ভেতর থেকে তরতাজা।
৪. দূষণ থেকে দূরে থাকুন
বাইরের দূষণ পরিবেশের ক্ষতি করার সাথে সাথে আমাদেরও ক্ষতিসাধন করছে। তাই দূষণ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন। জানি এটা প্রায় অসম্ভব ।বাইরে তো বেরোতেই হবে, কিন্তু যতটা পারেন নিজেকে বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করুন। রাস্তায় বেরোলে স্কার্ফ দিয়ে মুখ ও মাথা ঢেকে নিন। আজকাল প্রচুর স্টাইলিশ স্কার্ফ পাওয়া যায়। এছাড়াও এয়ারকণ্ডিশন এবং রুম হিটারও অনেক সময় স্কিনের জন্য ক্ষতিকর হয়। তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন যতটা পারেন।
৫. সানস্ক্রিন
বাইরে বেরোবার আগে সানস্ক্রিন যে মাস্ট, এটা নিশ্চয়ই আর বলে দিতে হবে না। ১০ মিনিটের জন্যও যদি বাইরে রোদে কোন কাজ থাকে, তাহলেও সানস্ক্রিন মেখে যান। আর বাড়িতেও যদি রোদ লাগার সম্ভাবনা থাকে তবে দিনের বেলাটা সানস্ক্রিন মেখে থাকাই ভালো। কারণ রোদের জন্য শুধু ট্যান পড়ে না, সূর্যরশ্মির ক্ষতিকর উপাদানের প্রভাবে ত্বক খুব তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যায়। আর স্কিনের বিভিন্ন রোগ স্কিন ক্যান্সারও হতে পারে। তাই সাবধান।
৬. স্কিনকে পরিষ্কার রাখুন
সারাদিন পর বাড়ি ফিরে অবশ্যই স্কিনকে পরিষ্কার করা দরকার। তাই আপনার নিত্য সঙ্গী করে নিন কোন ভালো ক্লিনজারকে। অবশ্যই নিজের স্কিন টাইপ বুঝে ক্লিনজার ব্যবহার করুণ। মনে রাখবেন কমপ্লেকশন বাড়ানোর জন্য কিন্তু স্কিনকে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখা খুব জরুরী। বাইরের ধুলো, ময়লা, মুখের মেক আপ এসব জমে থাকলে কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি স্কিন এজিং চলে আসে।
৭. যদি ব্রণ থাকে
যদি খুব বেশি ব্রণর সমস্যায় ভোগেন তাহলে, চুলে খুব বেশি তেল, অয়েলি কন্ডিশনার মাখবেন না। কোন ভারী হেয়ার অয়েল নয়। হালকা নন-স্টিকি অয়েল ব্যবহার করুন। আর মুখেও খুব বেশি অয়েলি ক্রিম, বা ক্রিমি ফাউণ্ডেশনের বদলে ওয়াটার বেসড মেক আপ ব্যবহার করবেন। অর্থাৎ ব্রণর সমস্যা থাকলে অয়েলি প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই শ্রেয়।
৮. প্রতিদিন টোনার
ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করার পর অবশ্যই টোনার ব্যবহার করুন। কারণ ক্লিনজার স্কিন পোরস্গুলোকে খুলে ময়লা বের করে আনে। আর টোনার সেগুলিকে বন্ধ করে। আর স্কিন পোরস্গুলি বন্ধ না হলে, ওপেন পোরসে্র সমস্যা হয়। এছাড়াও টোনার মুখের অতিরিক্ত তেল বার করতেও সাহায্য করে। আপনি যদি কোন ডিপ ক্লিনজার, ভারী কোন ময়েশচারাইজার ব্যবহার করেন, তাহলে অবশ্যই একটা মাইলড টোনার সঙ্গে রাখুন।
৯. বেসন ও দই
বেসন ও দই মিশিয়ে প্যাক বানান। সপ্তাহে দু তিনদিন লাগান। বেসন ব্রাইট কমপ্লেকশন দিতে সাহায্য করবে। আর দই স্কিনকে এক্সফোলিয়েট করবে ও স্কিন টোন হালকা করতে সাহায্য করবে। তাই ব্রাইট, রেডিয়েন্ট কমপ্লেকশন পেতে এই প্যাক ব্যবহার করুন।
তাহলে আর দেরী না করে আজই লেগে পড়ুন! দেখবেন এক সপ্তাহের মধ্যে আপনার স্কিন টোন ফেয়ার অ্যান্ড লাভ্লি হয়ে যাচ্ছে, আর আপনার বন্ধুরাও চমকে যাচ্ছে!
মন্তব্য করুন