আজকের দিনে বিউটি পার্লারে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে কোনও পার্লার ট্রিটমেন্ট নেওয়া খুবই সময়সাপেক্ষ ব্যপার। কার এত সময় আছে বলুন তো? কিন্তু যতই ব্যস্ততা থাক আজকের দিনে সৌন্দর্য সচেতন হওয়াটাও কিন্তু খুব জরুরী। তার ওপর সামনেই আবার বিয়ের মরশুম। আর তার আগেই শুধুমাত্র আপনাদের জন্য রইল বিট দিয়ে তৈরি এক অসাধারণ ফেসিয়াল যা এই শীতকালে আপনার ত্বককে দেবে এক আলাদা প্রকারের দীপ্তি।
তবে এর আগে বলে রাখা ভালো যে, বিট কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষেও খুবই উপকারি। বিট কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ রোধ করতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, শরীরে জ্বালা বা প্রদাহ রোধ করতে সাহায্য করে এবং শারীরবৃত্তিয় কাজ সচল রাখতে সাহায্য করে।
এ তো গেল শরীর-স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উপকারিতা। তবে ত্বকের হাজারো সমস্যা রোধ করতেও বিট খুবই কার্যকরী।
বিট দিয়ে কেন করবেন ফেসিয়াল?
- বিটের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি। আর সেই কারণেই বলা হয় যে বিট ত্বকের জন্য খুবই ভালো।
- এমনকী এও বলা হয় বিটের মধ্যে রয়েছে এক বিশেষ প্রকারের অ্যান্টি এজিং ফর্মুলা, যা ত্বকের বয়স বাড়তে দেয় না।
- বিটে ভিটামিন সি থাকার কারণে এর মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপার্টি থাকায় বিট কিন্তু ব্রণ বা অ্যাকনের সমস্যা মেটাতেও ভীষণভাবে কার্যকরী।
- পাশাপাশি একাধিক গবেষণায় এও দেখা গিয়েছে যে বিট হাইপারপিগমেন্টেশনের সমস্যা দূর করতেও বিশেষভাবে কার্যকরী।
- সেক্ষেত্রেও কার্যকরী ভুমিকা নেয় ভিটামিন সি। আর এর কারণেই যাঁরা পিগমেনটেশনের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরাও কিন্তু ত্বকের ওপর অনায়াসেই ব্যবহার করতে পারেন বিট।
এবার আপনাদের সন্ধান দেব এমন এক ফেসিয়াল-এর, যা যেকোনও স্কিন টাইপের জন্য প্রযোজ্য এবং এই ফেসিয়ালটি যদি মাসে কমপক্ষে ১০ দিন এবং সপ্তাহে অন্তত দু-বার ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে এক মাসের মধ্যেই তফাতটা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। আর এই মিশ্রণটি একবার বানিয়ে নেওয়ার পর পাঁচদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারেন।
উপকরণ
- এক কাপ বিটের পেস্ট
- আধ কাপ টমেটো
- লেবুর খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিতে হবে (শীতকালে কমলালেবুর খোসা ব্যবহার করতে পারেন)
- কাঁচা দুধ পরিমাণমতো
- মুলতানি মাটি ২ চামচ
- মধু এক চা চামচ
প্রণালী ও ব্যবহারবিধি
- প্রথমে বিটরুট ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন।
- তারপর তা থেকে ছিবড়ে আলাদা করে নিন।
- এরপর বিটের রসে এক এক করে মুলতানি মাটি, লেবুর খোসা গুঁড়ো, কাঁচা দুধ এবং মধু মিশিয়ে নিন।
- কাঁচা দুধ ততটাই মেশাবেন যতক্ষণ না মিশ্রণটি ঘন হয়ে ওঠে। দুধ খুব বেশি পরিমাণে দিলে কিন্তু পেস্টটি পাতলা হয়ে যাবে এবং মাস্কটি মুখে ভালো করে বসবে না।
- এরপর ঘন গোলাপী রঙের এই প্যাকটি খুব ভালো করে মুখ এবং গলায় লাগিয়ে নিন।
- এরপর প্যাকটি মুখে শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
- এরপর মুখে শুকিয়ে এলে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন।
- মুখ ধুয়ে নেওয়ার পর প্রয়োজন মনে হলে ময়েশ্চেরাইজার অ্যাপ্লাই করে নিন।
- বিটের গুণাগুণের কথা তো আগেই বলেছি। তবে এই ফেস মাস্কে ব্যবহৃত বাকি উপকরণগুলিও কিন্তু ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরিয়ে আনার পক্ষে খুবই কার্যকর।
- টমেটো আপনার ত্বকের ট্যান দূর করবে। মুলতানি মাটি আপনার ত্বকে সুন্দর করে স্ক্রাবিং করতে সাহায্য করবে। কাঁচা দুধে থাকা ল্যাক্টিক অ্যাসিড ত্বককে ডিপ ক্লিন করতে সাহায্য করে।
- লেবুর খোসা ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এবং মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসাবে খুব ভালো কাজ করে।
- তাহলে শীতের রুক্ষ-শুষ্ক দিনেও তারুণ্যে ভরা ত্বক পেতে ব্যবহার করুন বিটের এই ফেসিয়ালটি।
মন্তব্য করুন