বহু বছর ধরে আমরা জেনে এসেছি যে ত্বকের পরিচর্যার জন্য বেসন খুবই উপকারী। ত্বকের অনেক সমস্যার সমাধান বেসনের কাছে থাকে। শুষ্ক ত্বক হোক বা তৈলাক্ত ত্বক-দুই ধরণের ত্বকের জন্যই বেসন ভীষণ ভাবে উপকারী। বেসনের সাথে আরো কিছু উপকরণ মিশিয়ে আমরা ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগাতে পারি।
এই সবকটি ফেসপ্যাকই খুব কার্যকারী। বিভিন্ন ত্বকের অসুবিধাকে এক নিমেষেই বেসন দূর করে দেয়। তাহলে আজ কয়েকটি বেসনের ফেস প্যাক বানানোর পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক যা আমাদের ত্বককে আরো সুন্দর এবং মসৃণ করে তোলে।
বেসনের সাথে দুধ বা দই মিশিয়ে বানানো ফেসপ্যাক
বহুজনের জন্যে তৈলাক্ত ত্বক একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বেসনের এই ফেসপ্যাকটি আমাদের ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমায় এবং আমাদের ত্বককে নরম এবং নমনীয় করে তোলে। ২ চামচ বেসনের সাথে ১ চামচ দুধ বা দই মিশিয়ে তার একটা মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। তারপর সেই মিশ্রণটি ভালো করে মুখে লাগাতে হবে। তারপর ২০ মিনিটের মতো মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এই ফেসপ্যাক আমাদের মুখের তৈলাক্ত ভাব এবং ময়লা দূর করে।
বেসন,কমলা লেবুর রস পেঁপে দিয়ে বানানো ফেসপ্যাক
বাইরে রোদে বেরোলেই আমাদের মাথায় ট্যানের চিন্তা চলে আসে। ট্যানের সমস্যা থেকে বাঁচার জন্যও কিন্তু বেসন খুবই উপকারী। পেঁপের খোসা ছাড়িয়ে তারপর সেইটা থেতো করতে হবে। তার সাথে ২ চামচ লেবুর রস এবং ১ চামচ বেসন মিশিয়ে একটি প্রলেপ তৈরি করতে হবে। এই প্রলেপ মুখে লাগাতে হবে ২০ মিনিট থেকে আধ ঘন্টার জন্য। তারপর ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।এই মিশ্রণ কয়েকদিনের জন্য লাগালেই আমরা আমাদের ট্যান সহজেই দূর করতে পারি।
বেসনের সাথে লেবুর রস দুধের ক্রিম মিশিয়ে ফেসপ্যাক
২ চামচ বেসনের সাথে ১ চামচ দুধের ক্রিম এবং তার সাথে বেশ কয়েক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করতে হবে। সেই মিশ্রণটি আমাদের মুখে লাগাতে হবে। তারপর মোটামুটি ১৫-২০ মিনিট রাখার পর ধুয়ে ফেলতে হবে। ধোয়ার সময় জল ব্যবহার করার আগে যদি টোনার বা গোলাপ জল ব্যবহার করা হয় মুখের থেকে প্রলেপটি তোলার জন্য তাহলে ফেসপ্যাকটি আরো কার্যকরী হবে। বেশ কয়েকদিন এই পদ্ধতিতে ফেসপ্যাকটি মুখে লাগালে আমাদের মুখ উজ্জ্বল দেখায়।
বেসন সাথে চন্দনের গুঁড়ো জল মিশিয়ে ফেসপ্যাক
আমাদের মুখের ব্রণ আমাদের দুঃখের কারণ হয়ে ওঠে। অনেক কিছু মুখে লাগানোর পরও সহজে ব্রণ যায় না। বেসন কিন্তু ব্রণকেও দূর করে। বেসনের সাথে চন্দনের গুঁড়ো মিশিয়ে তার সাথে জল মেশাতে হবে। তারপর এই ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিটের মতন। প্রতিদিন এই ফেসপ্যাকটি মুখে লাগালে আমাদের ব্রণ আমাদের মুখের ত্বকের সাথে মিশে যাবে।
বেসনের সাথে মধু মেশানো ফেসপ্যাক
শুষ্ক ত্বক একদমই পছন্দ না। বেসনের সাথে মধুর মিশ্রণ আমাদের মুখের ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং তার ফলে সহজেই আমরা পেয়ে যেতে পারি নরম এবং নমনীয় ত্বক। বেসনের সাথে মধু মিশিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে তা সারা মুখে লাগাতে হবে। তারপর মুখে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর ওই মিশ্রণটি মুখ থেকে ধুয়ে ফেলতে হবে।
তাহলে দেখছেন যে বেসনের ফেসপ্যাক ত্বকে কত রকম ভাবে উপকার করতে পারে। কিন্তু তাও আমাদের সব সময় যেকোনো বেসনের ফেসপ্যাক লাগানোর আগে আমাদের ত্বকের একটা ছোট অংশে তা লাগিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত যে ফেসপ্যাকটি লাগানোর পর কোনো জ্বালা অনুভব হচ্ছে কিনা।
যদি জ্বালা অনুভব না হয় তাহলে সারা মুখে ফেসপ্যাকটি লাগিয়ে তার উপকার অনুভব করা যেতেই পারে। জ্বালা লাগলে কিন্তু কোনোভাবেই ফেসপ্যাকটি আর লাগানো যাবে না এবং বেশ কিছু সময়ের পরও অতিরিক্ত জ্বালা অনুভব করলে ডাক্তার দেখানো আবশ্যক।
মন্তব্য করুন