আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব না। কিন্তু আজও এমন কিছু কিছু কথা আছে যেগুলো শুনলে অনেক ডাকাবুকো মেয়েও লজ্জা পায়। আর তার মধ্যে অন্যতম, বলা ভাল সবার ওপরে থাকবে নিজেদের বিয়ের কথা। আর লজ্জা পেয়ে তাঁরা এই দশটি কাজ করে থাকে, নিজের অজান্তেই।
১. বিয়ের কথা এড়িয়ে যাওয়া
যত বিয়ের দিন এগিয়ে আসে ততই সকলে বিয়ে নিয়ে বেশি কথা বলতে শুরু করেন। বন্ধু থেকে আত্মীয়, সকলেই মেয়েটিকে বিয়ে, বর এই সব নিয়ে কথা বলতে থাকেন। আর তখনই দেখা যায় মেয়েটি কথাটি অন্য দিকে নিয়ে নেয়। মানে সে কথাটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এটা যে সবও সময়ে খুব সচেতন ভাবে করে মেয়েটি তা কিন্তু নয়। অনেক সময় আবার অন্য জায়গায় চলে যায় কথা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য। এই সবই লজ্জার বহিঃপ্রকাশ।
২. বারবার ভুল করা আর অস্বীকার করা
প্রথম প্রেম হোক কি বিয়ের আগের সময়টি, মেয়েরা এই জিনিসটি করেই। আর বুঝতে পারছেন, বারবার ভুল তো মানুষ নিজের অজান্তেই করে। ধরুন আপনি বিয়ের কথা বলছেন মেয়েটিকে, আর সেই সময়েই কেউ মেয়েটিকে কিছু একটা আনতে বলল। মেয়েটি কথা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য কাজটা করতে তো যাবে, কিন্তু খানিক পড়ে এসেই জিজ্ঞেস করবে কি যেন ছিল কাজটা। আর বন্ধুরা খ্যাপানো শুরু করলে লজ্জায় চলবে অস্বীকারের পালা।
৩. হবু বরের নাম না নেওয়া
প্রেম করার সময় থেকে হয়তো নাম ধরে ডাকছে, তুইতোকারি করছে। আজকাল যা হয়, একসঙ্গে পড়তে পড়তে প্রেম। তাই এইগুলোই স্বাভাবিক। কিন্তু হঠাত আপনি খেয়াল করবেন বিয়ে ঠিক হওয়ার পরেই কেমন যেন সবার সামনে এই নাম ধরে ডাকাটা কমে যায়। তখন ওই ‘ও’ বলল, ‘ওকে’ বলে দাও, এভাবে চলতে থাকে। কোথাও গিয়ে ওই স্বামীর নাম মুখে না আনার ব্যাপারটা অবচেতনে কাজ করে। আর এটা কিন্তু মেয়েটার অজান্তেই হয়ে যায়।
৪. পুরনো কথা বেশি ভাবা
সব সম্পর্কেই কিছু ভাল দিন থাকে, কিছু খারাপ দিন। যারা প্রেম করে বিয়ে করছেন না, তাঁরাও এখন বিয়ে ঠিক হওয়ার পড় একটা সময় কাটান। ছাদনাতলায় একেবারে দেখা হওয়ার দিন তো এখন আর নেই। তাই বিয়ে ঠিক হওয়ার পরেই মেয়েটি এই কথাগুলো ভাবতে থাকে। নিজের অজান্তেই মনে আসে কথাগুলো।
৫. একটু আড়ালে থাকা
বিয়ের কিছু দিন আগে থেকেই মেয়েরা একটু কেমন যেন আড়ালে চলে যায়। খুব কথা বলা মেয়েটাও কেমন চুপচাপ হয়ে যায়। সামনে আগত দিনের চিন্তা, বাড়ি ছাড়ার দুঃখ যেমন আছে, তার চেয়েও বেশি থাকে একজন মানুষকে কাছে পাওয়ার কথা ভাবার একান্ত সময়। সবার সামনে কি আর ভাবা যায়, লজ্জা লাগে না!
৬. বিছানার চাদর আঙুলে জড়ানো
সত্যি বলছি, এখনও মেয়েরা এটা করে। নিজের অজান্তে করে বলেই এখনও করে এটা। ধরুন আপনি মেয়েটির সামনে বিয়ের আত্মীয়ের লিস্ট, কি কি আনতে হবে এসব হিসেব করছেন। মেয়েটি হয়তো সব শুনছে, নিজে অংশগ্রহণও করছে। কিন্তু আপনি কিছু জিজ্ঞাসা করলে হয়তো দেখবেন একসময়ে বিছানার চাদর নিজের আঙুলে জড়াচ্ছে। লজ্জা থেকে এরকম একটু হয়।
৭. নখ খোটা
এটা আরেকটি লক্ষণ লজ্জা পাওয়ার। সব সময়ে তো আর বিয়ের কথা এড়িয়ে চলে যাওয়া যায় না। কিছু সময় সামনে বসেও থাকতে হয়। আর তখন হয়তো আপনি দেখবেন মেয়েটি পায়ের আঙুলের নখ খুঁটছে, নেলপালিশ নখ দিয়ে তুলছে। এগুলিও যে জেনে বুঝে করছে তা নয়। জেনে করলে রিমুভার ছাড়া নেলপালিশ মেয়েরা তুলতোই না।
৮. ফোন করা কমে যাওয়া
এটা ভাল বুঝবেন যার সঙ্গে বিয়ে হবে তিনি। আগে হয়তো দিনে চোদ্দবার ফোনে কথা হত। মেয়েটি নিজেই হয়তো অনেকবার ফোন করত। কিন্তু বিয়ে ঠিক হওয়ার পরই আস্তে আস্তে মেয়েটি যেন ফোন করা কমিয়ে দেয়। ফোন করলেও কথা কম বলে।
৯. গলার স্বর কমে আসা
সারাদিন যে মেয়ের চিৎকারে আপনি বলতেন বাড়িতে কাল চিল বসবে না, সেই মেয়েই আস্তে আস্তে কেমন গম্ভীর হয়ে যায়। ভবিষ্যত জীবন, নতুন জায়গা আর আরেকটি মানুষকে নিজের মতো করে পাওয়ার স্বপ্নপূরণ, সব মিলে লজ্জা কাজ করে যা একটু হলেও মনের মধ্যে থিতু করায় মেয়েটিকে।
১০. বেশিই মুচকি হাসা
একটা শুধু মেয়ে কেন, ছেলেদের মধ্যেও খুব কমন। বিয়ের কথা উঠলেই বা কিছু জিজ্ঞাসা করলেই তেমন সদুত্তর মেলে না। শুধু মেলে মুচকি হাসি। এই হাসিই সব উত্তর দিয়ে দেয়। লজ্জা পাওয়ার অন্যতম বড় দিক এটি।
বিয়ের কথা শুনে আপনার এর মধ্যে কোনগুলো হয়েছিল আপনি দেখুন দেখি। অন্য কিছু হলে এই লিস্টির বাইরে আমাদের জানাবেন কিন্তু, লজ্জা পাবেন না।
মন্তব্য করুন