বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি সকলেরই খুব পছন্দের। বিশেষ করে তাঁর স্টাইল স্টেটমেন্ট কম বেশি সবাই আজকাল ফলো করেন। আর ট্যাটুর কথা এলে অবশ্যই মিমির মত ট্যাটু আঁকতে সবাই এক কথায় রাজী।
ট্যাটু করতে হলে, মিমির শরীরে করা ডিজাইন যে আপনাকেও হুবহু করতে হবে তা বলছি না! সেটা অবশ্যই আপনার পছন্দের ব্যাপার। তবে যেটা খেয়াল রাখবেন তা হল সামান্য কয়েকটি বিষয়। যা ট্যাটু করার আগে মিমি চক্রবর্তী অবশ্যই খেয়াল রেখেছেন। আর তাই এত সুন্দর ট্যাটুও করতে পেরেছেন।
ছবির মেহেরবানিঃ Instagram
ছবির মেহেরবানিঃ Instagram
উপরের ছবিতে দেখতেই পাচ্ছেন মিমির হাতে একটা ও পেটে একটা ট্যাটু করা। দুটো ট্যাটুই মিমির সাথে দারুন মানিয়েছে। একটিতে নটরাজ আর একটিতে পালক দেখা যাচ্ছে। পেটের ট্যাটু সম্পূর্ণ দেখা যাচ্ছে না তবে ওটা পাখির পালকের ডিজাইন।
নিশ্চয়ই ভাবছেন এত কথা কেন লিখছি! আসলে মিমির ব্যাক্তিত্বের সাথে মিলিয়ে কিন্তু তিনি তাঁর ট্যাটু করেছেন। ভালো নাচেন তাই নটরাজ হাতে আঁকা। আর সাফল্যের আকাশ তিনি ছুঁয়েছেন পাখির মতই। এবার আপনারা ভাবুন ট্যাটু করার আগে আপনার ট্যাটু আপনার ব্যক্তিত্বের সম্পর্কে কতটা পরিষ্কার ভাবনা ফুটিয়ে তুলতে পারে। তাই ট্যাটু শুধু করলেই হয় না, করার আগে অনেক কিছু খেয়াল রাখাও জরুরি। চলুন দেখে নেওয়া যাক কি কি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
ট্যাটু করার আগে খেয়াল রাখুন এই ৬টি বিষয়
- ডার্মাটোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করুন অবশ্যই
- রিসার্চ করুন ভালো করে
- ভালো ট্যাটু আর্টিস্টের সন্ধান করুন
- খরচের বিষয় মাথায় রাখবেন
- ব্যথা লাগবে এটা মনে রাখবেন
- নিয়ম মেনে চলা দরকার ট্যাটু সম্পর্কিত
১. ডার্মাটোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করুন অবশ্যই
- অনেকেই এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না ট্যাটু করার আগে। হুজুগে নাচবেন না! ট্যাটু করার আগে ডার্মাটোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ অবশ্যই করবেন।
- আপনার স্কিন কি রকম? ট্যাটু করলে কোন রকমের সমস্যা হবে কিনা এগুলো ভালো করে আগে জেনে নেওয়া দরকার।
- কারন অনেকেরই স্কিনে নানা প্রবলেম থাকে যা আমরা বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন করি না। যেমন দরুন চুলকানি, কোন রকমের ফ্যাব্রিক বা গয়না থেকে র্যাশ হওয়া।
- ট্যাটু একবার করলে তা থেকে যদি সমস্যা হয় তখন কিন্তু বিপদে পড়বেন। সেইজন্যই ডার্মাটোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজের স্কিন সম্পর্কে জেনে নিয়ে তবেই ট্যাটু করুন।
২. রিসার্চ করুন ভালো করে
- ট্যাটু করবেন যখন ঠিক করে নিয়েছেনই তার আগে এই সম্পর্কে ভালো করে আগে রিসার্চ করে নিন। কারন একবার ট্যাটু হয়ে গেলে তা তোলা খুবই যন্ত্রণাদায়ক মনে রাখবেন।
- বিশেষ করে ট্যাটু অনেকের শরীর একসেপ্ট করে না। সেইজন্য বড় ট্যাটু করার আগে ছোট পরীক্ষামূলক ট্যাটু করে নিতে পারেন। কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা বুঝতে পারবেন তাতে।
- ‘কিলোয়েড’ হয় অনেক সময় ট্যাটু করার পর। একধরণের সংক্রমণ যাতে ট্যাটুর অংশের স্কিন ফুলে যায়৷ তাই ভালো করে রিসার্চ করে তবেই ট্যাটু করার কথা ভাববেন।
- ডিজাইন নিয়ে রিসার্চ অবশ্যই জরুরি। উপরেই লিখেছি মিমি চক্রবর্তী নিজের ব্যাক্তিত্বের সাথে মিলিয়ে কিন্তু তিনি তাঁর ট্যাটু করেছেন।
- ট্যাটু আপনার ব্যক্তিত্বের সম্পর্কে কতটা পরিষ্কার ভাবনা ফুটিয়ে তুলতে পারে সেটা মাথায় রেখে ডিজাইন বাছুন।
৩. ভালো ট্যাটু আর্টিস্টের সন্ধান করুন

- ট্যাটু একধরণের আর্ট কিন্তু ট্যাটু আর্টিস্টের কাছে। তাই ভালো আর্টিস্ট বাছা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন ভালো শিল্পী অসাধারণ শিল্পের জন্ম দেন।
- তাই আপনার ট্যাটু ভালো ও সুন্দর হওয়া নির্ভর করে সম্পূর্ণ ট্যাটু আর্টিস্টের উপর।
- নামী ট্যাটু আর্টিস্টের থেকেই সব সময় ট্যাটু করাবেন।
- আর্টিস্টের সম্পর্কে ভালো করে রিসার্চ করাও কিন্তু একটা প্রয়োজনীয় কাজ।
৪. খরচের বিষয় মাথায় রাখবেন
- ভালো জিনিস মানেই তার মূল্য সব সময় বেশি এটা মনে রাখবেন। তাই খরচের বিষয়টা খেয়াল রাখা খুবই জরুরি।
- ট্যাটু করার সময় টাকার কম্প্রোমাইজ করতে যাবেন না। দরকার হলে টাকা জমিয়ে আরও দুমাস পর করান।
- যেমন ধরন- ওই ট্যাটু পার্লারে তো এত কমে হয়ে যাচ্ছে মানে ওখান থেকে করিয়ে নি এরকম ভাবনা রাখবেনই না।
- কারন ট্যাটু করার সামগ্রী, আর্টিস্ট এগুলোর মূল্য অনেক বেশি। সস্তায় করতে গিয়ে পরে পস্তাতে পারেন এই বিষয় মাথায় ঢুকিয়ে নিন।
- ট্যাটু করার সময় নানা সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে ট্যাটুর নিডল থেকে। ভালো খরচে ভালো জায়গায় আপনি পাবেন পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত এবং ডিসপোজেবল নিডেল, যার মূল্য অনেক বেশি।
৫. ব্যথা লাগবে এটা মনে রাখবেন
- পার্লারে গিয়ে কান ফোটানোর ব্যাথার থেকে কয়েক দ্বিগুণ ব্যথা লাগে ট্যাটুর সময়।
- অনেক সময় একদিনের বেশি সময় লাগে ট্যাটু করতে। ব্যথাও থাকে এক দুসপ্তাহ মত।
- ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা না থাকলে ট্যাটু করতে যাবেন না। এতে না ট্যাটু ভালো করে হবে না আপনি মজা পাবেন।
- তাই ব্যথা লাগবে এটা নিজের মন ও মাথাকে বুঝিয়ে রেডি করে নেবেন করার আগে।
৬. নিয়ম মেনে চলা দরকার ট্যাটু সম্পর্কিত
- ট্যাটু করার আগে ও পরে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। যা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। কারন এগুলো আপনার স্কিনের কেয়ারের জন্য করা হয়ে থাকে।
- ট্যাটু করানোর আগে একবার পার্লারে গিয়ে আর্টিস্টের থেকে ভালো করে সব নিয়ম জেনে নেবেন।
- ট্যাটু করার পরে কয়েকদিন ট্যাটুর অংশে জল লাগাতে মানা করা হয়। রোদে বেরোতে অনেকে মানা করেন।
- ভালো করে বিস্তারিত ভাবে সব জেনে সেগুলো অবশ্যই মেনে চলবেন।
বিশেষ টিপস ট্যাটু সম্পর্কিত
- শরীরে কোন অংশে কিরকম ট্যাটু মানাবে তা রিসার্চ ও আর্টিস্টের পরামর্শ মত করবেন।
- গরমকালে ট্যাটু না করে বরং শীতকালে করার চেষ্টা করবেন। এতে গরমের ঘাম, চুলকানি, র্যাশের মত সমস্যা থেকে বাঁচবেন।
- যারা এখন কেরিয়ার শুরু করেন নি তারা খেয়াল রাখবেন আপনার আগামী দিনে আসন্ন প্রফেসানে ট্যাটু অ্যালাও হবে কিনা।
- অনেক কোম্পানি ও কর্মক্ষেত্রে ট্যাটু করা লোকজনদের কাজে না নেওয়ার চল আছে। বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন।
- হুজুগে পরে প্রেমের নেশায় নিজের প্রেমিক বা প্রেমিকের নাম ট্যাটু করার আগে দশবার না দশ হাজারবার ভাববেন। কারন প্রেম না টিকলে চাপ আছে কিন্তু!
মন্তব্য করুন