সুস্থ থাকা আমাদের সকলের জন্য খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে যখন আমরা আজকের দিনে দূষণ, অনিয়মিত জীবনযাপন, চিন্তা এই সবের জন্য ক্রমেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি, তখন আমাদের বারবার সেই প্রবাদ বাক্যের কথা মনে পড়ছে, স্বাস্থ্যই সম্পদ।
কিন্তু আমরা দেখতেই পাচ্ছি, আজকাল কিছু সামান্য শরীর খারাপ হলেও আমাদের অনেক টাকা খরচ করে ফেলতে হয়। ডাক্তারের ফি, ওষুধের দাম, নানা ব্যয়বহুল পরীক্ষা, সব মিলিয়ে ডাক্তার দেখানোর কথা উঠলেই যেন ভয় লাগে আমাদের।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সরকারী কর্মচারীদের স্বার্থে এনেছেন কম খরচে চিকিৎসা পাওয়ার প্রকল্প, যার নাম স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। আজ আসুন, এই প্রকল্প নিয়েই বিস্তারিত কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
কী এই স্কিম?
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারী সরকারী স্কুলের শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীরা এই প্রকল্পের আওতায় থাকবেন। দেখা যাচ্ছে, এর ফলে প্রায় ৪.৫ লক্ষ মানুষ সুবিধে পাবেন। তাঁরা বিনা খরচে চিকিৎসা পাবেন কারণ টাকার দায়িত্ব নেবে সরকার। শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী ছাড়াও, কন্ট্র্যাকচুয়াল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক, আয়ুশ চিকিৎসক, প্যাথোলজিস্ট, আর্বান ডেভেলপমেন্টের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা আর মিউনিসিপাল বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত কাউন্সিলররাও এই প্রকল্পের সুবিধের আওতায় আসবেন।
কীভাবে এই স্কিম কাজ করে?
এই ইনস্যুরেন্স স্কিম অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতাধীন মানুষদের যে কোনও প্রাইভেট হাসপাতালে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ‘ক্যাসলেস’ চিকিৎসা করানোর সুযোগ রয়েছে। আর যদি কেউ দীর্ঘ দিনের রোগ যেমন ক্যানসারের মতো রোগের চিকিৎসা করাতে যান, তাহলে তার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ থাকছে। এটাও সঙ্গে বলার যে, যিনি কাজ করছেন, তার সঙ্গে তাঁর পিতা-মাতা, স্ত্রী বা সন্তানও এই প্রকল্পের আওতায় আসবে।
কারা এই স্কিমের সুবিধে পেতে পারেন?
এই স্কিমের সুবিধে পাওয়ার জন্য সেরকম কিছুই করতে হয় না। শুধু দুটো জিনিস আপনাকে মাথায় রাখতে হবে-
১. যিনি এই সুবিধে পেতে চান তাঁকে সরকারী চাকুরিজীবী হতে হবে।
২. এই প্রকল্পের সুবিধে পাওয়ার জন্য ইনস্যুরেন্সের প্রকল্পের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হবে।
কীভাবে নাম নথিভুক্ত করা যায়
এই প্রকল্পের সুবিধে পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদক নিজে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন না। প্রথমে নিয়ম ছিল, শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীরা নিজেদের সংশ্লিষ্ট স্কুলেই যাবতীয় তথ্য জমা দেবেন। সেখান থেকে সমস্ত তথ্য যাবে জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে। কিন্তু বর্তমানে বিকাশ ভবন সূত্রে বলা হয়েছে, নাম তোলার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুরসভা বা বিডিও অফিসে যেতে হবে। সেখান থেকে একটি আবেদন পত্র নিয়ে এসে তাতে নাম, ঠিকানা, আধার নম্বর, পরিবারের সদস্যের বিবরণ সব দিতে হবে আর তারপর সেই আবেদন পত্র জমা দিতে হবে সেই সংশ্লিষ্ট দফতরে।
সেখান থেকে আধিকারিকরা সমস্ত তথ্য অনলাইনে আপলোড করবেন এবং একটি এনরোলমেন্ট নম্বর জেনারেট হবে। তারপর সেই আবেদকের বাড়িতে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড চলে যাবে। যদি তারপরে আপনি দেখেন যে আপনার পরিবারের কোনও সদস্যের নাম ওঠেনি তখন আবার গিয়ে সেই দফতরে জানান। আর কোনও কারণে কেউ যদি ফোনে যোগাযোগ করতে চান, তাহলে এই টোল ফ্রি নম্বরে কল করুন- ১৮০০৩৪৫৫৩৮৪
কীভাবে দেখবেন আপনার নাম তালিকায় আছে কিনা
নাম তো তোলা হয়েছে। কিন্তু বুঝবেন কি করে যে আপনার পরিবারের সকলের নাম আছে এই প্রকল্পে? আসুন জেনে নিই সেই পদ্ধতিও।
১. প্রথমে গুগলে গিয়ে ট্যাবে লিখুন ‘swasthya sathi’। তারপরে সার্চ করুন। দেখবেন একটি সাইট আসবে, swasthyasathi.gov.in বলে। এতে ক্লিক করুন আর স্বাস্থ্যসাথী অফিশিয়াল পেজে যান।
২. এই সাইটে গিয়ে একটু নিচের দিকে স্ক্রল করলেই দেখবেন বাঁ দিক ঘেঁষে আছে URN Search বলে একটি অপশন। এতে ক্লিক করুন। দেখবেন একটি পেজ বেরোবে যেখানে ডেটা সোর্স, আপনার ডিস্ট্রিক্ট আর সার্চ করতে বলবে হয় আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে বা আপনার আধার নম্বর দিয়ে।
৩. নম্বর দিয়ে আপনি নিচে show data অপশনে ক্লিক করুন। ক্লিক করলেই দেখবেন আপনার আর আপনার পরিবারের সদস্যদের নাম দেখাবে পরপর। এভাবেই আপনি দেখতে পারবেন আপনার পরিবারের সকলের নাম তালিকায় আছে কিনা।
এখন তাহলে আর টাকার চিন্তায় রোগ নিয়ে ঘরে বসে থাকা নয়। সরকারের হাত ধরে চলুন আর সুন্দর স্বাস্থ্য পান, তাও খুব সহজেই।
Sayani Mitra
যারা সরকারী চাকরী করে না…তারা এর সুবিধা পাবে না?
স্কীমটা তো তাদের জন্য হওয়া উচিত যারা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না…যাদের ক্ষমতা আছে, তাদের তো আলাদাভাবে সাহায্য পাওয়ার কথা নয়
পুসী
সরকারের কাজ তেলা মাথায় তেল দাওয়া ।
Snigdha roy
গৃহপরিচারিকারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেনা? তারা কিভাবে উপকৃত হবে?
Sakir Ali khan
Sasto sate Kat korar jonnay