গরম বলে বাইরে কাজ থাকবে না তা তো নয়। আর বাইরে যাওয়া মানেই ঘাম হয়ে শরীর থেকে সব জল বেরিয়ে যাওয়া। এরপর শুধু জল খেলে কিন্তু ওই ঘাটতি পূরণ হয় না। এর জন্য দরকার এমন পানীয় সঙ্গে রাখা যা আপনার শরীরে অল্প অল্প করে ভিটামিন, মিনারেলসের যোগান বজায় রাখবে। তাই গরমে বাইরে যেতে হলে এই পাঁচটির মধ্যে যে কোনও একটি পানীয় সঙ্গে রাখা খুবই দরকার।
১. বাটার মিল্কঃ
বাটারমিল্ক খুবই রিফ্রেসিং একটি পানীয়। সাধারণ বাংলায় একে আমরা ছাঁচ বলি। খুব সহজে হাতের কাছে থাকা জিনিস দিয়ে তৈরি করা হয়ে যায় এই বাটারমিল্ক।
উপকরণঃ
- টক দই
- জিরে গুঁড়ো
- বিটনুন
- সাধারণ নুন
- অল্প আদা-কাচা লঙ্কা বাটা
- ঠাণ্ডা জল
পদ্ধতিঃ
একটি বড় পাত্রে বেশ ভাল পরিমাণে টক দই নিয়ে নিন। এর মধ্যে এবার ধীরে ধীরে জিরে গুঁড়ো, বিটনুন, সাধারণ নুন, আদা আর কাঁচা লঙ্কা বাটা দিয়ে দিন আর ভাল করে ফেটিয়ে নিন দই। একটা ক্রিমের মতো টেক্সচার না আসা পর্যন্ত মেশাতে থাকুন। তারপর বেশ ঠাণ্ডা জল দিন।
ছাঁচ না হবে খুব মোটা, না খুব পাতলা। সেই বুঝে জল দিন। এবার ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে অল্প ধনেপাতা ছড়িয়ে একটি বোতলে করে নিয়ে যান কাজের জায়গায়। এটি মাঝে মাঝে খেলে বেশ রিফ্রেসিং লাগে।
২. লেবুর জলঃ
সবার আগে আমাদের মনে আসে এই লেবুর জলের কথা। খুব সহজেই এটি হয়ে যায় বলে সবচেয়ে বেশি আমরা লেবুর জলই সঙ্গে রাখি।
উপকরণঃ
- ঠাণ্ডা জল
- পাতিলেবুর রস
- অল্প বিটনুন
- পুদিনা পাতা কুচি
পদ্ধতিঃ
আগে একটি পাত্রে লেবুর রস নিয়ে তাতে বিটনুন আর পুদিনা পাতা কুচি মিশিয়ে নিন। এবার ঠাণ্ডা জল দিন আর জলে সব উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর বোতলে করে সঙ্গে রাখুন নিজের কাছে এই জল। যখনই মনে হবে অল্প খেয়ে নিন। সঙ্গে সঙ্গে তাজা হয়ে যাবেন।
৩. শশা আর লেবুর জলঃ
লেবুর জল সঙ্গে নেওয়াটা সাধারণ হলেও তার সঙ্গে শশা নেওয়াটা খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু শশার মধ্যে যে পরিমাণ জল আছে তা আমাদের শরীর ঠাণ্ডা রাখতে খুব সাহায্য করে। শরীরের অতিরিক্ত তাপ কমিয়ে আনে শশা।
উপকরণঃ
- ঠাণ্ডা জল
- শশার কুচি
- লেবুর রস
- অল্প চিনি
- অল্প বিটনুন
পদ্ধতিঃ
শশা কুচি কুচি করে কেটে নিন। আপনার জলের বোতলে নিতে পারবেন এরকম কুচি করুন। আগে একটি পাত্রে এই শশা কুচি নিয়ে তার সঙ্গে লেবুর রস, চিনি, নুন দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে বোতলে নিয়ে নিন। ইচ্ছে হলে অল্প পুদিনা পাতা দিতে পারেন।
৪. আম পান্নাঃ
গরমের দিনে আম পান্না সঙ্গে থাকবে না তা তো হয় না। এটি খেতেও যেমন ভাল, তেমনই শরীর খুব ঠাণ্ডা রাখে।
উপকরণঃ
- কাঁচা আম
- অল্প গুড়
- চিনি
- বিটনুন
- লেবুর রস
- অল্প জিরে গুঁড়ো
পদ্ধতিঃ
আগে একটি কাঁচা আম আগুনে পুড়িয়ে নিন। তারপর খোসা ছাড়িয়ে আম ভাল করে চটকে নিন। এবার ওই আমের মধ্যে জিরে গুঁড়ো, অল্প গুড়, চিনি, বিটনুন দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার দিন অল্প জিরে গুঁড়ো বা চাট মশলা। এবার ঠাণ্ডা জল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে বোতলে নিয়ে নিন। খাওয়ার সময়ে পারলে ঠাণ্ডা খাবেন। তাহলেই খুব ভাল লাগবে।
৫. ডাবের জলঃ
যদি আপনি এমন কোনও পানীয় চান, যেটা ঠাণ্ডা হবে, খেতে ভাল হবে আর সঙ্গে উপকারীও, তাহলে এই ডাবের জল সঙ্গে নিয়ে নিন। এতে আছে প্রচুর মিনারেল, যা পেট ঠাণ্ডা রাখে।
উপকরণঃ
- ডাবের জল
- অল্প শাঁস কুচি
- বরফ
পদ্ধতিঃ
ডাবের জল নিয়ে নিন। একটু বড় ডাব হলেই ভাল। পারলে শুধু ডাবের জল নিন। দরকার পড়লে অল্প ঠাণ্ডা জল মিশিয়ে নিন। এবার ডাবের শাঁস কুচি কুচি করে তার মধ্যে মিশিয়ে নিন। অল্প একটু চিনি দিতে পারেন। তবে না দিলেও ক্ষতি নেই। ডাবের জলের মধ্যে স্বাভাবিক একটি মিষ্টি স্বাদ আছে। এবার এই জল নিজের সঙ্গে নিয়ে নিন। এর মধ্যে আর কোনও মশলা দেওয়ার দরকার নেই। সাধারণ ডাবের জলই খুব উপকারী।
আপনার ইচ্ছে হলে সপ্তাহে পাঁচ দিন এই পাঁচ রকম পানীয় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিতে পারেন। এর মধ্যে যে কোনও একটি পানীয়ও আপনি নিতে পারেন। গরমে স্বাদ আর স্বাস্থ্যের মেলবন্ধন ঘটাবেই এই পানীয়।
মন্তব্য করুন