স্কিনকে টাইট রাখতে ব্যবহার করুন দুটি ঘরোয়া ফেস প্যাক, যা বানাতে পারবেন একদম কম খরচে এবং কম ঝামেলায়। জেনে নিন ফেসপ্যাক দুইটির ব্যবহারবিধি এবং উপকারিতা।
১. ডিম-দইয়ের ফেস প্যাক
কি কি উপকরণ লাগবে
- ডিমের সাদা অংশ – ১টি
- টকদই – ১ টেবিল চামচ
- চিনি – ১ চা চামচের আট ভাগের এক ভাগ (চাইলে এটা বাদ দিতে পারেন)
কিভাবে ব্যবহার করবেন
ডিমের সাদা অংশ আলাদা করে একটি বাটিতে নিয়ে নিন। এর সাথে চিনি ও টকদই মিশিয়ে নাড়তে থাকুন। মিশ্রণটি যখন একদম মসৃণ হয়ে আসবে তখন নাড়া বন্ধ করে দিন। পুরো মুখে মিশ্রণটি লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার এই ফেস প্যাক ব্যবহার করবেন, দুইবার করলে আরো ভালো হয়।
কেন এই প্যাকটি ব্যবহার করবেন
বলা হয়ে থাকে, ডিম হচ্ছে স্কিন টাইট করার জন্য অব্যর্থ একটি উপাদান। ডিমের সাদা অংশে থাকা অ্যালবুমিন এবং কমপ্লেক্স পেপটাইড ঝুলে যাওয়া স্কিনকে টাইট করে। টকদই মুখের দাগছোপ কমিয়ে স্কিনকে উজ্জ্বল করে। প্যাকটিতে যদি চিনি ব্যবহার করেন তাহলে বাড়তি সুবিধা পাবেন। চিনির অ্যাব্রেসিভ ন্যাচার ত্বকের উপরিভাগে জমে থাকা ডেড স্কিন সেলস দূর করে।
২. ক্যাস্টর অয়েলের ফেস প্যাক
কি কি উপকরণ লাগবে
- ক্যাস্টর অয়েল – ২ টেবিল চামচ
- লেবুর রস – ১ চা চামচ (চাইলে লেবুর পরিবর্তে ২-৩ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন)
কিভাবে ব্যবহার করবেন
এই ফেস প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করবেন রাতে ঘুমানোর আগে। ক্যাস্টর অয়েলের সাথে লেবুর রস বা ল্যাভেন্ডার অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন। প্যাকটি মুখে ও ঘাড়ে সার্কুলার মোশনে মাসাজ করতে করতে উপরের দিকে উঠবেন। ৫ থেকে ১০ মিনিট এভাবে মাসাজ করতে হবে। তারপর সারারাত প্যাকটা মুখে রেখে ঘুমান। সকালে প্রথমে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিবেন, তারপর ঠান্ডা পানিতে পুনরায় ধুয়ে নিবেন। যাদের নরমাল বা ড্রাই স্কিন তারা এই প্যাকটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু অয়েলি ও সেনসিটিভ স্কিনের জন্য এই প্যাক ব্যবহার না করাই ভালো।
কেন এই প্যাকটি ব্যবহার করবেন
স্কিন কন্ডিশনিং এজেন্ট হিসেবে ক্যাস্টর অয়েল সুপরিচিত। এটি ত্বকের কোলাজেন এবং ইলাস্টেন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে মুখের ত্বকের ঝুলে যাওয়া চামড়া হয়ে টানটান, নরম, এবং কোমল। ক্যাস্টর অয়েলের প্রধান উপাদান হচ্ছে রিসিনোলেইক অ্যাসিড। এই অ্যাসিডে থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান স্কিন ইনফ্লেমেশন কমায়। ভিটামিন সি-তে ভরপুর লেবুর রস স্কিনকে টাইট এবং গ্লোয়িং করে। ল্যাভেন্ডার অয়েল স্কিনের ব্যারিয়ার ঠিক করে স্কিনকে রিপেয়ার করে। পাশাপাশি এটি স্ট্রেস কমায় এবং ঘুমের উদ্রেক করে, যা স্কিন টাইট রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাড়তি টিপস:
ফেসপ্যাক ছাড়াও ন্যাচারালি স্কিন টাইট করার জন্য মেনে চলুন কিছু টিপস।
- প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১০ মিনিট ফেসিয়াল এক্সারসাইজ করুন। এটা স্যাগিং স্কিন ঠিক করতে সাহায্য করবে।
- ত্বকের যে অংশটা ঢিলে হয়ে যাচ্ছে মনে করবেন, সেখানে মাসাজ করবেন। রেগুলার মাসাজে ঐ অংশের ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এবং ঢিলে চামড়া আস্তে আস্তে টাইট হবে।
- দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। পরিমিত পরিমাণে ঘুম হলে ত্বক পর্যাপ্ত শক্তি পাবে পুনর্গঠিত হওয়ার। ফলে ত্বক থাকবে টানটান দীর্ঘ সময় ধরে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ও পানি বেশি করে খাবেন। এগুলো কোলাজেন এবং ইলাস্টেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ত্বকের সার্বিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
- সূর্যের আলোর নিচে কম যাওয়ার চেষ্টা করুন। বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন এবং রোদে ছাতা ব্যবহার করুন।
মন্তব্য করুন