ধর্মে হিজাব, পোশাকে হিজাব, ফ্যাশনে হিজাব। ধর্মীয় রীতিনীতি পালনে পর্দানশীল থাকার জন্যই যে মূলত হিজাবের প্রচলন তা তো জানেন সবাই। কিন্তু বর্তমান ফ্যাশন ওয়ার্ল্ডে হিজাব শুধু আর পর্দাতেই সীমাবদ্ধ নেই। হিজাব হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন ফ্যাশন জগতের এক বিশেষ পরিচিত নাম!
শাড়ির সাথে হিজাব করার স্টাইল
পর্দা করার উদ্দেশ্যে তো বটেই, এখন ফ্যাশন করার জন্যও নারীরা হিজাব ব্যবহার করছেন হরহামেশা। আর তাই হিজাবের জনপ্রিয়তা মুসলিম নারীদের পাশাপাশি অমুসলিম নারীদের মধ্যে এমনকি পশ্চিমা বিশ্বেও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে বাঙালি নারীদের শাড়ির সাথেও কিন্তু হিজাব ব্যবহারের বেশ চল উঠেছে। আসুন আজ দেখে নেই হিজাব নেয়ার ৬টি স্টাইল যেগুলো আপনি শাড়ির সাথেই করতে পারবেন সহজভাবে।
১/ স্কার্ফ স্টাইল
প্রথমে একটি স্কার্ফ মাথার ওপর বসান। স্কার্ফের নিচের অংশ ডান সাইডে ছোট ও বাম সাইডে বড় রাখুন। স্কার্ফের দুই সাইডের কোণা ঘাড়ের পেছনের অংশে টেনে নিয়ে পিন দিয়ে ভালো করে আটকিয়ে দিন। এবার পেছন থেকে ডান সাইডের স্কার্ফের কোণাটা সামনে নিয়ে আসুন। স্কার্ফ ডান সাইড থেকে বাম সাইডে নিন। স্কার্ফের অংশটি কানের উপরে পিন দিয়ে ভালো করে আটকে নিন। বাম সাইডে থাকা অংশটি নিয়ে স্কার্ফের নিচ দিয়ে ডান সাইডে এনে স্কার্ফের ভাঁজ খুলে ফেলুন। এবার স্কার্ফের অংশটি ওপরে তুলুন এবং সেটা তোলার পর হিজাবের প্রধান পার্টটি সামনে আনুন। স্কার্ফের বড় অংশটুকু ওপরে তুলে চুলের খোঁপা কভার করে দিন। প্রথমে কানের যে অংশে পিন লাগিয়েছিলেন সেই অংশে বড় সাইডের স্কার্ফের কোণা এনে বসাতে হবে। কানের উপরে বাকি অংশের স্কার্ফকে পিন দিয়ে সুন্দর করে সেট করে নিন। ব্যাস, হয়ে গেলো আপনার শাড়ির সাথে হিজাব পরার চমৎকার স্টাইল!
২/ কনট্রাস্ট স্টাইল
প্রথমে একটি একটি মেয়েদের চুল ঢাকার টুপি বা ইনার ক্যাপ (শাড়ির রঙের সাথে ম্যাচ করে) পরুন। গলায় ছোট (কনট্রাস্ট) স্কার্ফ নিয়ে গলার পেছন দিয়ে বাঁধুন। তারপর স্কার্ফটি মাথার ওপরে মধ্যম ভাগে দিয়ে দিন, যাতে করে নিচের টুপির অংশ দেখা যায়। স্কার্ফের এক সাইড বড় আরেক সাইড ছোট রাখুন। স্কার্ফের দুই সাইড গলার পেছনে নিয়ে বাঁধুন। স্কার্ফের ছোট অংশ সামনে নিয়ে আসুন এবং অন্য অংশ কাঁধে পিন দিয়ে আটকে নিন। স্কার্ফের বড় অংশ সামনে আনুন। এটি ভালোভাবে মাথার ওপর পেঁচিয়ে কানের উপরের অংশে পিন লাগিয়ে নিন। আর এটাই হচ্ছে শাড়ির সাথে আপনার কন্ট্রাস্ট স্টাইলের হিজাব।
৩/ হিজাবের সাথে পরুন ফুলস্লিভ ব্লাউজ
আপনি হিজাব যে স্টাইলেই পরুন না কেন, তার সাথে অবশ্যই ব্লাউজ পরবেন ফুল স্লিভ দিয়ে। কেননা হাফ হাতা ব্লাউজের সাথে হিজাব একদম বেমানান। আর হাতায় যেন কোনো ধরণের খোলা অংশ বা ডিজাইন না থাকে। হিজাবের সাথে এরকম ডিজাইনের হাতা একদমই যায় না।
৪/ ব্লাউজের গলা ছোট দিন
শাড়ির সাথে হিজাব পরলে ব্লাউজের গলা ছোট দিন। এমনভাবে হিজাব পরুন যেন যেন গলার নিচ পর্যন্ত ঢাকে। বাকিটা ব্লাউজ ও শাড়ি দিয়ে কভার করে নিন, দেখতে সুন্দর লাগবে। ব্লাউজের পিঠের অংশে, গলায় বা কাঁধে কোথাও যেন কোনো উন্মুক্ত বা খোলা ধরণের ডিজাইন না থাকে সে দিকেও খেয়াল রাখবেন। কারণ মনে রাখতে হবে, হিজাব শুধু ফ্যাশনই নয়, এটা শালীনতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করার পোশাকও। তাই খোলামেলা পোশাকের সাথে হিজাব একদমই মানায় না।
৫/ হিজাব পরুন শাড়ির সাথে মানানসই রঙের
আপনাকে একদম শাড়ির সাথে ম্যাচিং কালারের হিজাব পরতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। তবে দেখতে সুন্দর ও আকর্ষণীয় লাগার জন্য শাড়ির সাথে মানিয়ে যায় এমন রঙের হিজাব পরলে ভালো লাগবে।
৬/ হিজাবের সাথে এক্সেসরিজ নিয়ে হয়ে যান গর্জিয়াস
যদি আপনি কোনো পার্টির জন্য তৈরি হতে থাকেন, তাহলে একটু দামি কাপড়ের বা নকশা করা হিজাব পরে নিন শাড়ির সাথে মিলিয়ে। এবার একটু গর্জিয়াস বা স্টোন বসানো ব্রোচ লাগিয়ে নিন। সেই সাথে ম্যাচিং করা ব্যাগ বা পার্স এবং জুতা পরে নিন। আপনাকে পার্টির জন্য লাগবে একদম পারফেক্ট লুক, গর্জিয়াস আর গ্ল্যামারাসও।
আজকের এই লেখায় নিশ্চয়ই আপনি জেনে নিলেন শাড়ির সাথে কিভাবে কোন স্টাইলে হিজাব পরবেন। তাহলে সুন্দর করে হিজাব পরে ফেলুন শাড়ির সাথে- নিজেকে পর্দা করে পবিত্র একটা ভাবও নিয়ে আসুন, একইসাথে হয়ে যান ফ্যাশনেবলও!
মন্তব্য করুন