পূজোর কাজে চন্দন একটি অপরিহার্য উপাদান। চন্দনের ফোঁটা না দিয়ে পূজার কাজ সম্পূর্ণ হয় না বাঙালীদের। তবে শুধু পূজা নয় চন্দন রূপচর্চার একটি উপাদানও। ত্বককে সুন্দর রাখতে এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। চন্দনে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ, যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে ও ত্বককে সুন্দর রাখতে প্রয়োজনীয়। আসুন জেনেনি চন্দনের গুনাগুণ।
ব্রণর সমস্যা
আমরা অনেকেই হয়তো জানি, চন্দন ব্রণর সমস্যা সমাধানে কাজে আসে। চন্দনে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ, যা ত্বকের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে নির্মূল করে। ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। তার ফলে ব্রণ কমে যায়। এবং ত্বককে ব্রণ হবার হাত থেকে বাঁচায়।
বলিরেখার সমস্যা
বলিরেখার মত সমস্যায় চন্দন দারুন ভাবে সাহায্য করে। চন্দনে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং রক্তকে পরিষ্কার রাখে। যেটা বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে তরতাজা রাখে।
ট্যানের সমস্যা
রোদে ট্যান পড়ে গেছে খুব? কি করবেন বুজতে পারছেন না? বাড়িতে চন্দন আছে তো? ব্যাস তাহলেই সমাধান আছে বাড়িতেই। কারণ চন্দন রোদের থেকে পরা ট্যানকে দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে। আবার অনেক সময় দেখা যায়, ত্বক ফর্সা হলেও তেমন উজ্জ্বল নয় ফ্যাকাসে দেখায়। এই সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে চন্দন। কারণ চন্দন ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল রাখতে খুবই উপকারি।
ডার্ক সার্কেলের সমস্যা
আপনার কি ডার্ক সার্কেলের সমস্যা হচ্ছে? চোখের চারপাশে কালো দাগ? মন খারাপ করার দরকার নেই। ঘরোয়া উপায়ে আপনি এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। সমাধানের নাম হল চন্দন। ডার্ক সার্কেল ছাড়াও মুখে অন্যান্য দাগ দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন চন্দন। উপকার পাবেন।
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা
যাদের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক তারা চন্দন ব্যবহার করতে পারেন। চন্দন এই অতিরিক্ত তেলকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তৈলাক্ত ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাকেও। এছাড়া চুলকানির মত সমস্যা হলেও চন্দন কাজে দেয়। কারন এতে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ যা চুলকানির মত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
চন্দনের কিছু ফেসপ্যাক তৈরি করে এই সকল সমস্যার সমাধান পাওয়া যেতে পারে।
ব্রনর সমস্যায় এক চামচ চন্দন পাউডার এর সঙ্গে হলুদগুঁড়ো ও তিন চামচ গোলাপজল মিশিয়ে একটি পেস্ট বানাতে হবে।
সেই পেস্টটি ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর পরিষ্কার জলে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুদিন করুন এটা। উপকার পাবেন।
ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে চন্দন ও দুধের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এক চামচ চন্দন পাউডার ও তার সাথে একটু দুধ মিশিয়ে ত্বকে লাগান। একটু শুকিয়ে এলে, ধুয়ে ফেলুন। কিন্তু মনে রাখবেন পুরো খটখটে করে শুকিয়ে ফেলবেন না। তার আগেই ধুয়ে ফেলবেন।
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় একচামচ চন্দন পাউডার এর সঙ্গে এক চামচ মুলতানি মাটির গুঁড়ো ও গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট বানান এবং সেটি ত্বকে ভালো ভাবে লাগিয়ে রাখুন ২০ থেকে ২৫ মিনিট। দেখবেন মিশ্রণটি যেন খুব পাতলা বা খুব ঘনও যেন না হয়। এটি সপ্তাহে দু থেকে তিন দিন করুন। ভালো ফল পেতে।
ডার্ক সার্কেলের সমস্যায় একটু চন্দন পাউডার ও সমপরিমান গোলাপ জল মিশিয়ে ডার্ক সার্কেলের জায়গায় লাগান।
কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। সারারাতও রাখতে পারেন। কিন্তু দেখবেন চোখের ভেতরে যেন না যায়।
ট্যানের সমস্যায় চন্দনের গুঁড়ো ও লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করুন। বা চন্দন গুড়ো, শসার রস, দই, গোলাপ জল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলবেন। সমস্যার সমাধান হবে।
চোখের কাজল না তুলেই শুয়ে পড়ছেন? এতেই হচ্ছে মারাত্মক ক্ষতি। জেনে নিন।
মন্তব্য করুন