পুজোর আর মাত্র সপ্তাহ দুয়েক বাকি। আপনাদের শপিং নিশ্চয়ই প্রায় শেষের দিকে? চারদিকে প্রস্তুতিও তো প্রায় শেষেরই মুখে। পুজো মানেই আড্ডা, প্যান্ডেল হপিং আর খাওয়াদাওয়া, তবে গত এক কি দু বছর ধরে কিন্তু পুজোর ‘টু ডু’ লিস্টে যোগ হয়েছে আরও একটা জিনিস—সেটা হল সেলফি তোলা। একটা ভালো ফ্রন্ট ক্যামেরাওয়ালা স্মার্টফোন, ফ্রন্ট ফ্ল্যাশ থাকলে তো আরও ভালো। অন্ধকারেও যখন খুশি খচাখচ তুলে ফেলতে পারবেন আপনার সাধের সেলফি। গত কয়েকবছর ধরেই সেলফি তোলা এমন একটা নেশার মতো দাঁড়িয়ে গেছে যে আগের বছর পুজোয় প্যান্ডেলে যাতে ভিড় না হয়, তার জন্য বেশ কিছু প্যান্ডেলে আলাদা করে সেলফি জোন করে দেওয়া হয়েছিল। আর এই সেলফি ম্যানিয়া থেকে আপনিই বা বাদ যাবেন কেন? তাই আজকের লেখায় থাকলো আপনাদের জন্য অসাধারণ সেলফি তোলার ট্রিক্স।
নিজেকে সুন্দর তো দেখাতেই হবে
সেলফি তো তুলবেন বটেই। কিন্তু কীভাবে ক্যামেরায় নিজেকে আরও সুন্দর, মোহময়ী করে তুলবেন? জানেন না তো? সেটাই কিন্তু সেলফি তোলার গোপন রহস্য। সুন্দর ক্যামেরার কারসাজিতে কতজনকেই যে কত রূপবতী লাগে তা তো আপনি জানেনই।
আলোকে ঠিক অ্যাঙ্গেলে রাখুন
একটা সামান্য আলোর অ্যাঙ্গেল কিন্তু আপনার সেলফিকে অসাধারণ করে তুলতে পারে। সেলফি তোলার আগে যখন পোজ দেবেন, তখন দেখে নিন আলো কোনদিকে আছে। আলোকে কিন্তু বেস্ট ন্যাচারাল বিউটি প্রোডাক্ট বলা হয়। দিনের বেলায় সেলফি তোলার জন্য সূর্যের আলো বেস্ট। যা আপনার মুখের দাগ, ব্রণ সব ঢেকে দিতে পারে বিনা এডিটে! আর রাতের বেলা সেলফি তোলার জন্য প্যান্ডেলের আলো বা রাস্তার আলো বেছে নিন। ঠিক অ্যাঙ্গেলে আলো ব্যবহার করে সেলফি তুলতে পারলে আপনাকে কিন্তু মোহময়ী দেখাবে।
ছায়া এড়ান
মুখের সামনে ছায়া কেই বা আর চায়! সেলফি তুললেন, কিন্তু তারপর দেখলেন আপনার মুখটাই কালো ভুতের মতো অন্ধকার হয়ে গেছে! মুড আর সেলফি—দুটোরই তো তাহলে দফারফা। সূর্য বা যেকোনো আলোর উৎস মাথার ওপর থাকলে দেখবেন সেলফি তুললে চোখের তলা কেমন ফোলা ফোলা লাগছে! ওতে আপনাকেও বিশ্রী লাগবে। তাই ছায়ার সাথে কুস্তি করার থেকে ছায়ার থেকে মানে মানে দূরে থাকুন।
ফ্ল্যাশ ব্যবহার করবেন?
ফ্ল্যাশ দিয়ে সেলফি তুললে অনেকসময় কেমন চকচক করে মুখ। ওতে মোটেও ভালো লাগে না। বিশেষ করে পুজোর সময় ঘুরেটুরে ঘেমে লাল হয়ে গেছেন, ক্লান্ত মুখ তেলতেলে হয়ে গেছে। তখন যদি ফ্ল্যাশ দিয়ে সেলফি তুলে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আপলোড করেন বা ফেসবুক- হোয়াটস অ্যাপে ডি.পি. বানান—তাহলেই হয়েছে! যাদের ইমপ্রেস করতে সেলফি তুলেছিলেন সব্বাই পালাবে। তাই ফ্ল্যাশ ব্যবহার করুন, কিন্তু বুঝে শুনে।
হাসুন, ভালো করে পোজ দিন
আর হ্যাঁ। ভালো করে হাসবেন কিন্তু। গোমড়া মুখে পুজোর সেলফি! মোটেই ভালো না। আপনি তো আর রামগরুড়ের ছানা নন। তাই এমন করে হাসুন, যেন হাসিটাকে সত্যি লাগে, জোর করে আনা নয়। আয়নায় গুচ্ছ খানেক পোজ দেখে প্র্যাকটিস করে নিন কোনটায় আপনাকে ‘মস্ত’ লাগছে। তারপর সেই পোজগুলো ট্রাই করুন পুজোয়। প্যান্ডেলে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের মাঝে আপনি সেলফি তোলার পোজের এক্সপেরিমেন্ট করছেন—এটা মোটেও ভালো ব্যাপার নয়। দেখবেন আপনার বন্ধুরা হয়তো সেলফি তলা থেকে আপনাকে বয়কটই করে দিলো শেষে!
এডিট করার ভালো অ্যাপ নামান
আপনি নর্মাল ক্যামেরার বদলে ফিল্টার দিয়েও সেলফি তুলতে পারেন। সেজন্য রেট্রিকা, বিউটি প্লাস, B612 ইত্যাদি অ্যাপ নামান। আর এডিট করার জন্যও স্ন্যাপসিড বা অন্য কোনো ভালো এডিট করার অ্যাপ নামান। তবে ছবি বেশী এডিট করবেন না। ওতে আপনাকেই ভূতনীর মতো লাগবে।
টুকরো টিপস
আর সেলফি তোলার সময় অবশ্যই দেখে নিন ব্যাকগ্রাউন্ডে কি আছে। প্যান্ডেলে দাঁড়িয়ে সেলফি যখন তুলবেন তখন দেখবেন প্যান্ডেলের ব্যাকগ্রাউন্ডটাও যেন ভালো করে আসে। আর বোকা বোকা পোজে সেলফি তুলে লোক না হাসিয়ে একটু নর্মালভাবে সেলফি তুলুন। ওতে আরও ভালো লাগবে আপনাকে।
তাহলে পারফেক্ট সেলফি তোলার পারফেক্ট ট্রিকস তো জেনেই নিলেন। এবার পুজোয় নতুন মোবাইলে তাই ফটাফট সেলফি তুলুন। দেখবেন কোনো প্যান্ডেল যেন বাদ না যায়। আফটার অল আপনাকে তো সব আপলোড করতেই হবে! আর বন্ধুদের মধ্যে সেলফি কুইনের তকমাটা নিশ্চয়ই এবারও হাতছাড়া করবেন না?
ভারতের প্রথম মিস ট্রান্সকুইন-২০১৭ বদলে যাওয়া চিন্তার নামই নিতাশা
মন্তব্য করুন