পিরিয়ড প্রত্যেক মাসে সব মেয়েরই হয়ে থাকে। এটি একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া যা প্রত্যেক মাসে হয়। এইজন্য অনেকে একে মাসিকও বলেন। তবে এই পিরিয়ড নিয়ে এখনো বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে স্পষ্ট কোন ধারনা নেই। তাই এখনো মেয়েরা লুকিয়ে এইসব কথা বলে। কিন্তু এতে লুকবার বা লজ্জার কিছু নেই। কারণ এটি একটি স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়া।
পিরিয়ড কেন হয়?
বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের শরীরে কিছু পরিবর্তন হয়। ফলে প্রত্যেক মাসের একটা সময়ে মেয়েদের ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু তৈরি হতে থাকে। তা জরায়ুতে চলে যায়। এগুলি একটা সময় পর্যন্ত ঠিক থাকে। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে ডিমগুলি যদি কাজে না লাগতে পারে অর্থাৎ, জরায়ুতে যদি পুরুষের শুক্রাণু প্রবেশ না করে, তাহলে ডিম্বাণু নষ্ট হয়ে যায়। তখন সেগুলি জরায়ু থেকে যোনিপথে বেরতে থাকে রক্তের সঙ্গে। একেই মাসিক বা পিরিয়ড বলে।
এইসময় কখনও কখনও মেয়েদের তলপেটে কম বেশি সবারই ব্যাথা করে। অনেকে ওষুধ খান। কিন্তু সবসময় আবার ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ না খাওয়াই ভালো। তাই ঘরোয়া কিছু উপায় আছে যার দ্বারা ব্যাথাও কমবে আবার শরীরে কোন ক্ষতিও হবেনা।
ঘরোয়া কিছু উপায় আছে যার দ্বারা ব্যাথাও কমবে
১. গরমজলঃ
পিরিয়ডের ব্যাথা কমাবার একটি উপায় সবাই জানি মোটামুটি, সেটি হল গরমজল। পেট ব্যাথার সময় গরম জলের সেঁক দিলে ব্যাথা কমে যায়। হট ব্যাগ বা কোন কাঁচের বোতলে গরম জল নিয়ে পেটে সেঁক দিলে কমে যাবে।
২. ল্যাভেন্ডার তেলঃ
ব্যাথা কমাবার আরেকটি কার্যকরী উপাদান যেটা আমরা হয়তো জানি না, সেটি হল ল্যাভেন্ডার তেল। এই তেল পেট ব্যাথার সময় কয়েক ফোঁটা পেটে দিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। ব্যাথা তাড়াতাড়ি কমে যাবে।
৩. আদাঃ
আদা এই ব্যাথা কমাতে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। শুধু ব্যাথা নয়, অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতেও সাহায্য করে আদা। তাই এই সময় ফুটন্ত গরম জলে আদা গ্রেট করে দিয়ে, সেই ফোটানো জলে একটু মধু ও একটু লেবু রস দিয়ে সেটি খেতে পারেন। দিনে দু থেকে তিনবার খান। ব্যাথা থেকে উপকার পাবেন। এইসময় রান্নায় বেশি করে আদা খান।
৪. তুলসীঃ
আদা ছাড়াও আরেকটি খুব সহজ উপাদান যেটি ব্যাথা কমাতে দারুন কার্যকরী সেটি হল তুলসী। তুলসী পাতার রস করে, এক কাপ গরম জলে দু থেক তিন চামচ তুলসির রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। এটি দিনে দু থেকে তিন বার খান ব্যাথা হলে। বা কাঁচা তুলসী পাতাও খেতে পারেন।
৫. দারচিনিঃ
জানেন কি দারচিনি ব্যাথা কমাতে উপযোগী? হ্যাঁ এক গ্লাস গরম জলে একটু দারচিনি গুড়ো আর একটু মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। এটা দিনে তিনবার করলে ভালো।
এইসময় দেহে জলের অভাব দেখা যায়। তাই এই সময় জল বেশি করে পান করুন। জল জাতীয় খাবার খেতে হবে বেশি করে। আর প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল জাতীয় খাবার খেতে হবে।
বিশেষ টিপসঃ
এছাড়াও একরকম বিশেষ পদ্ধতি আছে স্নান করার সময় এটি করতে পারেন। সেটি হল একটি বড়ো জায়গায় গরম জল নিয়ে তার মধ্যে কোমর ডুবিয়ে ৪ থেকে ৫ মিনিট বসে আবার ঠাণ্ডা জলের একটি জায়গায় আরও দু থেকে তিন মিনিট বসতে হবে। যদি গামলা হয় তাহলে কোমরটি শুধু গামলায় রেখে পা থাকবে বাইরে। অর্থাৎ গামলার ভেতর কোমরটি রেখে বসতে হবে। এভাবে আধঘণ্টা করতে পারেন। শুধু জল বা জলে একটু নুনও দিতে পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে জল যেন খুব গরম না হয়। হালকা গরম।
তলপেট ব্যাথার সময় এই কয়েকটি পন্থা মেনে চললে উপকার পাওয়া যায়। তবে পিরিয়ডের সময় কফি বা কফি জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। এর কারণ হল কফিতে থাকা ক্যাফেইন। এই উপাদানটি পেটের ভেতর অস্বস্তির অনুভব তৈরি করে। তার ফলে শরীরে অস্বস্তি হয়।
মন্তব্য করুন