শীতকাল মানেই গোড়ালি ফাটা।ব্যাস গোড়ালি একবার ফাটতে শুরু করলে সে আর পিছু ছাড়ে না।সারাবছর এই সমস্যা চলতেই থাকে,আর শীত এলে এই সমস্যা যেন আরও বেড়ে যায়।গোড়ালি ফেটে একেবারে চৌচির।সে কি বাজে ব্যাপার।পছন্দের চটিটাও পরা যায় না।সবসময় পা ঢাকা জুতো পড়তে হয়।নানারকম ক্রিম ব্যবহার করেও,এর তেমন ভালো সমাধান পাওয়া যায় না।কিন্তু জানেন কি,বাড়ির খুব সহজ কিছু জিনিস এর থেকে খুব সহজেই মুক্তি দিতে পারে।লাগবে মাত্র এক সপ্তাহ ব্যাস,তারপরই ফাটা গোড়ালি পরিণত হবে নরম গোড়ালিতে।
খুব তাড়াতাড়ি সমাধান দেবে গোলাপজল এবং গ্লিসারিন
শীতকালে গ্লিসারিন সাবান ব্যবহার তো নিশ্চয়ই করেন।কিন্তু শুধু গ্লিসারিন সাবান ব্যবহার করলে হবে না।পা ফাটা থেকে মুক্তি পেতে গ্লিসারিনের সাথে গোলাপজল মিশিয়ে লাগান।খুব ভালো একটা ট্রিটমেন্ট গোড়ালি ফাটার সমস্যায়।
উপকরণ
২চামচ গোলাপজল,২চামচ গ্লিসারিন,১টা পাতিলেবুর রস ও ১চামচ নুন।
পদ্ধতি
প্রথমে একটু গরমজল করে নিন।এবার এতে ১চামচ নুন দিন ও লেবুর রস দিন।ভালো করে জলে মিশিয়ে নিন।এবার এই জলে পা দিয়ে রাখুন।১০ থেকে ১৫ মিনিট পা রাখুন।এবার ওই জলেই পা জালি দিয়ে একটু ঘষে নিন।ঝামা পাথর থাকলে আরও ভালো।পা জল থেকে তুলে,মুছে নিন।এবার একটা পাত্রে গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন।এই মিশ্রণটা পুরো পায়ে লাগান।বিশেষ করে পায়ের ফাটা অংশে বেশি করে লাগান।সারারাত রেখে দিন।এটা প্রতিদিন করতে পারেন।তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ফল পাবেন।না হলে সপ্তাহে তিনদিন করুন।
ভ্যাসলিনকে কাজে লাগান অন্য ভাবে
ভ্যাসলিন পেট্রোলিয়াম জেলি তো নিশ্চয়ই কিনেছেন?ওটার সাথে জাস্ট একটু লেবুর রস দিন।ব্যাস দারুণ সমাধান।
উপকরণ
১ চামচ ভ্যাসলিন,১চামচ লেবুর রস ও একটু গরমজল।
পদ্ধতি
প্রথমে একটু গরমজলে পা’টা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন,এই ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মত।তারপর জল থেকে পা তুলে নিন।পা ভালো করে মুছে নিন।তারপর ভ্যাসলিন ও লেবুর রস মেশান।এবার ওই মিশ্রণটা পায়ের ফাটা গোড়ালিতে ভালো করে লাগান এবং পায়ের অন্যান্য অংশেও লাগান।তারপর একটা মোজা পরে শুয়ে পরুন।সারারাত রাখুন এটি।পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন।এটা রোজ করুন।এক সপ্তাহের মধ্যেই দেখবেন পা ফাটা উধাউ।
নারকেল তেল
নারকেল তেল নিশ্চয়ই আছে বাড়িতে?ব্যাস একেই কাজে লাগান পা ফাটা রোধ করতে।কারণ নারকেল তেল স্কিনকে অনেকটা সময় পর্যন্ত ময়েশ্চারাইজড রাখে।আর এটা ত্বকের মরা কোষ দূরে সরিয়ে দেয়।
উপকরণ
২চামচ নারকেল তেল ও একজোড়া মোজা।
পদ্ধতি
কিচ্ছু করতে হবে না,জাস্ট নারকেল তেল শোয়ার আগে ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন।গোটা পায়ের পাতায়,বিশেষত গোড়ালিতে বেশি করে তেল নিয়ে ম্যাসাজ করুন।এবার পায়ে মোজা পড়ে শুয়ে পরুন।সারারাত রেখে পর দিন স্নান করার সাথে সাথেই ধুয়ে যাবে।এটা করার পর সারাদিন দেখবেন পা কেমন নরম থাকছে।এটা রোজ করুণ দেখবেন পা ভালো থাকবে।
ত্বককে দিন ভিটামিন ই এর পুষ্টি
ভিটামিন ই তেল স্কিনকে ভেতর থেকে নারিশ করে।স্কিনকে হাইড্রেড রাখে।ফলে আপনার ফাটা রুক্ষ গোড়ালি থেকে আপনাকে সহজেই মুক্তি দেবে ভিটামিন ই।
উপকরণ
৪ থেকে ৫টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল।
পদ্ধতি
একটু জল গরম করুণ পা ভিজিয়ে রাখার জন্য।অফিস থেকে বাড়ি ফিরে গরমজলে পা ভিজিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট।এবার পা জল থেকে তুলে নিয়ে ভালো করে মুছে নিন।পা শুকনো করে মুছে,এবার ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে তেল বার করে নিন।এই তেলটা পায়ে লাগান।ফাটা গোড়ালিতে বেশি করে লাগান।ভালো করে এক মিনিট ম্যাসাজ করুন।এটা রোজ করুন।আস্তে আস্তে পা ফাটা থেকে থেকে বেড়িয়ে আসতে পারবেন।
পা’কে এক্সফোলিয়েট করুণ চালগুঁড়ো দিয়ে
পা ফাটা পুরোপুরি বন্ধ করতে,পায়ের স্কিনকে মাঝে মাঝে এক্সফোলিয়েট করাও দরকার।স্কিনকে এক্সফোলিয়েট করলে,স্কিনের সমস্ত মরা কোষ সরে যাবে।
উপকরণ
২ থেকে ৩ চামচ চালগুঁড়ো ও ১ চামচ মধু।
পদ্ধতি
চালগুঁড়ো ও মধু মিশিয়ে নিন।যদি পা খুব ফাটে তাহলে এই মিশ্রণে একটু অলিভ তেল মেশাতে পারেন।এবার একটু গরমজলে পা ভিজিয়ে রাখুন।১০ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন।এরপর পা জল থেকে তুলে নিন।ভালো করে পা মুছে নিন।তারপর ওই মিশ্রণ তা পায়ে লাগান।ম্যাসাজ করুন।ভালো করে স্ক্রাবিং করুন।১০ মিনিট স্ক্রাবিং করুন।তারপর পা ধুয়ে নিন।এটা সপ্তাহে দুবার করুন।পা ফাটা অনেকটা কমবে।
এই প্রতিটা ট্রিটমেন্ট খুব ভালো কাজ দেয়।এক একদিন এক একটা ট্রাই করুন।আর সপ্তাহে একদিন পায়ের স্কিনকে এক্সফোলিয়েট করুন।আর অবশ্যই রাস্তায় যাবার সময় পায়ে মোজা পরে যাবেন।কারণ রাস্তার ধুলো থেকেও পা ফাটে।ব্যাস এগুলো মাথায় রাখুন।তাহলেই ধীরে ধীরে পা ফাটার সমস্যা থেকে বেড়িয়ে আসতে আসতে পারবেন।
মন্তব্য করুন