পরিষ্কার, মসৃণ, উজ্জ্বল ত্বক যদি পেতে চান তাহলে অবশ্যই ঘরোয়া এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন ত্বকের ধরণ অনুযায়ী। এই ঘরোয়া ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ ও সতেজ থাকবে এবং ত্বকের যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন খুব সহজে।ফেসপ্যাক ত্বকের যত্ন নিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
বাইরের ধুলোবালি ও দূষণে রোজ আমাদের ত্বক নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।ফেসপ্যাক ত্বকের ময়লা একবারে ভিতর থেকে দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি আমাদের ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে। অত্যাধিক তৈলাক্ত উপাদান মুখ থেকে বের করে দেয় । পরিষ্কার, মসৃণ, উজ্জ্বল ত্বক যদি পেতে চান তাহলে অবশ্যই ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন।
১. সংবেদনশীল ত্বকের জন্য
যাদের ত্বক সংবেদনশীল তাদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে খুবই সচেতন থাকতে হয়। কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন আর কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। না হলে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেবে। তাদের জন্য ত্বকের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে ঘরোয়া পদ্ধতি সবচেয়ে লাভজনক। চলুন জেনেনি সংবেদনশীল ত্বকের ফেসপ্যাক কিভাবে বানানো যাবে।
উপকরণ
ঠাণ্ডা দুধ, গোলাপজল, ও তুলো।
আধা কাপ ঠাণ্ডা দুধ একটি বাটিতে নিন। এবার এতে ২ থেকে ৩ চা চামচ গোলাপজল মেশান। রেডি আপনার ফেসপ্যাক। তুলো দিয়ে সারা মুখে লাগিয়ে রাখুন। ৫ থেকে ৬ মিনিট রেখে ভালো কোন ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন। দিনে ১ বার করে করুন। আপনার ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল দেখাবে।
২. শুষ্ক ত্বকের জন্য
শুষ্ক ত্বক মানেই ত্বকে আর্দ্রতার অভাব। ত্বক শুষ্ক হলে যেমন দেখতে ভালো লাগে না তেমনই ত্বক তার স্বাভাবিকতা হারায়। শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা না থাকলে ত্বক খুবই রুক্ষ লাগে। ত্বকে নানা রকমের বলিরেখা দেখা দেয়। শুষ্ক ত্বকের জন্য নিয়মিত ফেসপ্যাক ব্যবহার করা উচিত। চলুন জেনেনি শুষ্ক ত্বকের ফেসপ্যাক কিভাবে বানানো যাবে।
উপকরণ
গোলাপজল, গ্লিসারিন, ও তুলো।
একটি বাটিতে ১ চা চামচ গ্লিসারিন ও ৪ চা চামচ গোলাপজল মিশিয়ে নিন ভালো করে। রেডি আপনার ফেসপ্যাক। এবার ভালো করে ঠাণ্ডা জলে আগে মুখ ধুয়ে মুখ মুছে নিন। তারপর তুলতে গ্লিসারিন ও গোলাপজলের মিশ্রণটি লাগান। সারা মুখে মিশ্রণটি লাগানো হয়ে গেলে ১০ মিনিট রাখুন। এরপর ভালো কোন ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন। রোজ এই ঘরোয়া ফেসপ্যাক ২ বার করে লাগান। আপনার শুষ্ক ত্বক নরম ও মসৃণ হয়ে উঠবে।
৩. ব্রণ যুক্ত ত্বকের জন্য
ত্বকে নানা প্রকার জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার জন্য সাধারণত ব্রণ হয়ে থাকে। এই ব্রণ থেকে মুখে দাগ দেখা দেয়। যা খুবই বিশ্রী দেখতে লাগে। নিয়মিত ফেসপ্যাক ব্যবহার করে এই ব্রণর হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। চলুন জেনেনি ব্রণ যুক্ত ত্বকের ফেসপ্যাক কিভাবে বানানো যাবে।
উপকরণ
মেথি ও ব্যাকটেরিয়া মুক্ত জল।
এক গ্লাস ফিল্টার জলে ৪ চা চামচ মেথি ভিজিয়ে সারা রাত রাখুন। পরের দিন মেথি ভেজানো জল ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিন।এবার তুলো দিয়ে ছেঁকে নেওয়া জলটি সারা মুখে লাগান। সারাদিনে ২ থেকে ৩ বার এই মেথিজল মুখে মাখুন। ব্রণ হবার সম্ভাবনা প্রায় থাকবে না। সপ্তাহে তিনদিন এই ব্যবহার করুন। ভালো ফলাফল পাবেন।
৪. পিগমেন্টড ত্বকের জন্য
পিগমেন্টড ত্বকের সমস্যা হয়ে থাকে যদি ত্বকে অতিমাত্রায় মেলানিন থাকে। অতিরিক্ত মেলানিনের উপস্থিতিতে ত্বকের মধ্যে বেমানান দাগ দেখা দেয়। ত্বকের স্বাভাবিক রঙের মাঝে তৈরি হওয়া এই বেমানান দাগ টোনার দূর করতে সাহায্য করে। চলুন জেনেনি পিগমেন্টড ত্বকের ফেসপ্যাক কিভাবে বানানো যাবে।
উপকরণ
দই, গোলাপজল, ও তুলো।
ঠাণ্ডা দই আধা বাটি। ঘরে পাতা দই হলে খুবই ভালো হয়। বাটিতে দই ৫ থেকে ৬ চা চামচ, ২ চা চামচ গোলাপজল ভালো করে মিশিয়ে নিন।এবার তুলো দিয়ে ভালো করে মুখে লাগান প্যাকটি। ২০ মিনিট রাখুন। তারপর ঠাণ্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর ভালো কোন ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন। রোজ একবার করে মাখুন পিগমেন্টড ত্বকের সমস্যা কমে যাবে।
৫. তৈলাক্ত ত্বকের জন্য
ত্বক তৈলাক্ত বা অয়লি ত্বক হলে খুব সহজে ত্বকে ময়লা জমে যায়। ফলে ব্রণ মুখে হতেই থাকে। মুখে নানা দাগ হয়ে যায় এই ব্রণ থেকে। তৈলাক্ত বা অয়লি ত্বকের জন্য ঘরোয়া ফেসপ্যাক বেশি কার্যকরী। চলুন জেনেনি তৈলাক্ত ত্বকের ফেসপ্যাক কিভাবে বানানো যাবে।
উপকরণ
বেকিং সোডা, গোলাপজল, গরমজল, ও তুলো।
১ কাপ হালকা গরমজল নিন। তাতে ১ চা চামচ বেকিং সোডা ও ২ চা চামচ গোলাপজল মেশান। এবার তুলো নিয়ে এই মিশ্রণটি মুখে মাখুন। ৫ মিনিট রাখুন। দিনে ২বার করে ব্যবহার করুন।আপনার তৈলাক্ত ত্বক খুব দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। সাথেই ত্বক উজ্জ্বল ও নরম দেখাবে।
মন্তব্য করুন