“দেখ দেখ ওই মেয়েটা একেবারে হ্যাঙ্গার”, “এ বাবা এ তো একেবারে দেশলাই কাঠি”- কি এসব কথা কেউ আপনার সম্পর্কে বলছে নাতো? জিরো ফিগারের ইচ্ছেয় আপনি ওজনের ক্ষেত্রে জিরো হয়ে যাচ্ছেন না তো?
আমাদের দেহের ক্ষত্রে অতিরিক্ত ওজন বেড়ে মোটা হয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত ওজন কমে একেবারে রোগা হয়ে যাওয়া দুটিই কিন্তু খারাপ। তবে এত চিন্তা না করে শুধু নিজের খাওয়া দাওয়ার ওপর নজর দিলেই হবে। মানে আপনার ওজন যাতে বাড়ে তার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট ডায়েট চার্ট মেন্টেন করতে হবে।
অতিরিক্ত ওজন কম থাকা বা বেশি রোগা থাকা অনেক ক্ষেত্রেই পরিবারের গিফ্ট মানে জিনগত কারণে হয়ে থাকে। এছাড়া যাদের মেটাবলিজম খুব ভালো থাকে তাদের সমস্ত ক্যালোরি বার্ন হয়ে যায়। কোনো পুষ্টিই গায়ে লাগেনা। তাই আপনার দেহের ওজন বাড়াতে গেলে আপনাকে আপনার খাওয়াদাওয়ার দিকে বেশি নজর দিতে হবে। তবে যা কিছু খেলেই হবে না। বিশেষ কিছু খাবার ঠিক মত খেলে তবেই আপনি প্রোপরসনেট হয়ে উঠবেন।
১. খাবারে প্রোটিণের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলুন
প্রোটিণ জাতীয় খাবার আমাদের ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনার প্রতিদিনের খাবারে প্রোটিণ জাতীয় খাবার যেমন চিজ, বোনলেস চিকেন ব্রেস্ট, ডিম, এছাড়া বাড়িতে বানানো কিছু প্রোটিণ শেক যেমন চকোলেট শেক ইত্যদি খাওয়া শুরু করুন।
২. খাবারে নিউট্রিশন পরিমাণ বাড়ান
যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে নিউট্রিশন থাকে সেরকম খাবার বেশি করে খাওয়া শুরু করুন, যেমন আলু। প্রতিদিন অন্তত একবার করে আলু সেদ্ধ খান। এছাড়া ভারী ব্রেকফাস্ট করুন, যা আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিউট্রিশন দেবে। তবে অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড একেবারেই খাবেন না।
৩. খাবারের পরিমাণ বাড়ান
ওজন বাড়াতে চাইলে আপনাকে বেশি করে খেতে হবে। তাই বলে একেবারে সারাদিন খেয়ে পেটের মুখ ভার করে বসতে হবেনা। সারাদিনে অনেকবার করে খান। ৩ বার ফুল কোর্স খাবার আর অন্তত দুবার স্ন্যাকস খান।
এছাড়া আপনি সারাদিনে অল্প অল্প করে বাদাম, ফল, ইত্যদি খান। সকালে ঘুম থেকে উঠে ১ গ্লাস দুধ খান। এর কিছুক্ষণ পর ব্রেড বাটার বা রুটি সবজি বা বাটার রুটি খান। সাথে ডিম সেদ্ধ বা অমলেট ও খেতে পারেন।
দুপুরে ও সকালে খাবার মাঝে ফল, কাজু বাদাম কিসমিস খান। দুপুরে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ ইত্যাদি খান। বিকেলে যেকোনো স্ন্যাকস খান। আবার রাতে রুটি, চিকেন সুপ, সবজি খান। রাতে শোবার আগে ১ গ্লাস দুধ খান।
৪. গুড ফ্যাট জাতীয় খাবার খান
আমাদের মাংস পেশী গঠনে বা ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুড ফ্যাট অত্যন্ত জরুরি। তাই বেশি করে গুড ফ্যাট জাতীয় খাবার যেমন কলা, খেজুর, অলিভ অয়েল, সিজিনাল ফুড যেমন আম, এগুলি বেশি করে খান। কারণ এতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।
৫. রাইস
রাইসে ক্যালোরির মাত্রা বেশি থাকে। তাই দিনে একবার বা দুবার করে আপনার খাদ্য তালিকায় রাইস যুক্ত করুন।
৬. ড্রাই ফ্রুটস
প্রচুর পরিমাণে ড্রাই ফ্রুটস খান। এটি হাই ক্যালোরি ফুড। এছাড়া এতে প্রচুর ফাইবার থাকে এবং ভিটামিন ও মিনারেলস থাকে। তাই ওজন বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া খুব জরুরি।
৭. ডিম, চিজ, কলা ও দুধ
ওজন বাড়ানোর সব থেকে সহজ উপায় এই চারটি জিনিস প্রতিদিন খান। ডিম হাই প্রোটিণ যুক্ত খাবার, তাই প্রতিদিন অন্তত ২ টি করে ডিম খান তবে কুসুম বাদ দিয়ে নয়। দুধে হাই নিউট্রিশন থাকে, তাই প্রতিদিন দুধ বা দুধ ও কলা মিশিয়ে মিল্ক শেক খেতে পারেন। চিজ খেতেও ভালো এবং ওজন খুব তাড়াতাড়ি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই সকালের ব্রেকফাস্ট বা বিকেলের স্ন্যাকস এ একবার করে চিজ খাওয়া জরুরি।
এছাড়া প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম, বেশি করে সবুজ শাকসব্জি, কিছু ওয়েট গেইনিং এক্সারসাইজ, পর্যাপ্ত পরিমানে জল আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
মনে রাখবেন ওজন কমানো যেমন কঠিন ওজন বাড়ানো কিন্তু একই রকম ভাবে কঠিন। তাই সঠিক পরিমাণে খাওয়া দাওয়া খুব জরুরি। অনেকেই ওজন বাড়ানোর জন্য প্রোটিণ সাপ্লিমেন্টারি পিলস বা শেক খান, আপনিও খেতে পারেন তবে চিকিৎসকের পরামর্শে।
যে ডায়েট সম্পর্কে আপনাদের আজ বললাম সেগুলি নিশ্চিত রূপে আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করেবে। তবে আপনার ওজন কমা বা অতিরিক্ত রোগা হওয়া যে কোনো রকম শারীরিক দুর্বলতার কারণেও হতে পারে। তাই সেক্ষেত্রে ডায়েটেশিয়ানের বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মন্তব্য করুন