শিরোনাম দেখেই প্রথমে নাক সিটকবেন না। জানি চুলের জন্য আপনারা নারকোল তেল, বাদাম তেলের মতো অনবদ্য সব উপাদান ব্যবহারের পক্ষপাতী। আমিও এই সব ব্যবহারের বিপক্ষে নই। কিন্তু আমরা সচরাচর সরষের তেল আমাদের চুলে বা ত্বকের যত্নে ব্যবহার করি না। সেই ছোটবেলা বাড়ির বড়রা শীতকালে সরষের তেল মাখিয়ে দিতেন জোর করে। বড় হওয়ার সঙ্গে সেই পথে আমরা আর যাই না। কিন্তু আমি বলব এবার আপনার চুলের যত্নে সরষের তেল কয়েক দিন ব্যবহার করেই দেখুন। উপকার পেতে কিন্তু আপনি বাধ্য।
চুলে সরষের তেল ব্যবহারের উপকারিতা
রান্নায় সরষের তেল ব্যবহার তো করেনই। এবার আপনার চুলের এ টু জেড উন্নতির জন্য আজ থেকেই ব্যবহার করুন সরষের তেল। দেখে নিই তার আগে এই তেল ব্যবহারে কী কী উপকার পাব আমরা।
ক. চুলে নিয়মিত সরষের তেল মাখলে চুলের গোড়া মজবুত হয়। তাই চুল কম পড়ে।
খ. সরষের তেলে থাকা আলফা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনিংয়ের কাজ করে। চুল তাই থাকে ঝলমলে।
গ. সরষের তেলে থাকে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ। এছাড়াও এতে আছে জিঙ্ক, বিটা ক্যারোটিন। চুল তাই খুব সুন্দর ভাবে তাড়াতাড়ি বড় হতে থাকে সরষের তেল ব্যবহার করলে।
ঘ. সরষের তেলে আছে ভিটামিন এ, ডি, ই আর কে। তাই চুলের শুষ্ক ভাব অনেক কম হয় সরষের তেল ব্যবহার করলে।
ঙ. সরষের তেলে অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান থাকায় খুশকির সমস্যা দূর হয়।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
উপকারের কথা এতক্ষণ জানালাম। এবার আসুন জানাই কীভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
১. সরষের তেল আর টক দই
হেনার সঙ্গে বা এমনিতেও টক দই তো চুলে এতো দিন ব্যবহার করেছেন। এবার সরষের তেলের সঙ্গেও ব্যবহার করে দেখুন এর কামাল।
উপকরণঃ ৫ ফোঁটা সরষের তেল, ২ চামচ টক দই।
পদ্ধতিঃ একটি পাত্রে দুটি উপকরণ ভালো করে মেশান। তারপর সেই মিশ্রণ আপনার তালুতে ভালো করে লাগান আর বাকি চুলেও। এবার একটি তোয়ালে গরম জলে ভিজিয়ে ভালো করে চিপে মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এটি সপ্তাহে দু দিন করুন।
২. সরষের তেল আর লেবুর রস
লেবুর রস যেহেতু চুল আর স্ক্যাল্প পরিষ্কার করে, তাই খুশকি হবে না। সঙ্গে সরষের তেল তো রইলই।
উপকরণঃ ৫ ফোঁটা সরষের তেল, ৩ ফোঁটা লেবুর রস, ১ চামচ ধনে গুঁড়ো।
পদ্ধতিঃ একটি পাত্রে ভালো করে মেশান সব উপাদান। একটি মাস্ক মতো তৈরি করুন। তারপর তা চুলে লাগিয়ে রেখে দিন ২০ মিনিট মতো। শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দু দিন করতে পারেন। এতে চুল হবে আর্দ্র আর খুশকিও দূর হবে।
৩. সরষের তেল আর অ্যালোভেরা
বাড়িতে গাছ থাকলে সেখান থেকে অ্যালোভেরা জেল নিন। আর নয়তো ভালো কোনও দোকান থেকে ভালো ব্র্যান্ডের জেল নিন। অ্যালোভেরা চুলের যত্নে কিন্তু অসাধারণ।
উপকরণঃ ৫ ফোঁটা সরষের তেল, ১ চামচ অ্যালোভেরা জেল
পদ্ধতিঃ ভালো করে সরষের তেল আর অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ এবার চুলে আর তালুতে লাগিয়ে রাখুন ৪০ মিনিট মতো। তারপর শ্যাম্পু করে নিন। দেখবেন চুল খুবই সিল্কি হচ্ছে।
৪. সরষের তেল আর কলা
কলায় আছে প্রচুর প্রোটিন। আর আমাদের চুলের প্রধান উপাদান তো এই প্রোটিনই। তাই কলা চুলকে মজবুত করে। চুল পড়ার সমস্যা কম হয়।
উপকরণঃ ৫ ফোঁটা সরষের তেল, অর্ধেক কলা, ১ চামচ দই।
পদ্ধতিঃ কলা আগে ভালো করে চটকে নিন। এর মধ্যে এবার সরষের তেল আর দই মিশিয়ে নিন আর একটা প্যাক বানান। এবার এই মিশ্রণ চুলে ভালো করে লাগিয়ে রেখে দিন ৩০ মিনিট। শ্যাম্পু করে নিন তারপর। সপ্তাহে দু দিন এটা করতে পারেন।
মন্তব্য করুন