কয়েক দিন ধরে কি আপনার ঠিক মতো ঘুম হচ্ছে না, মন মেজাজের ওপরেও কোন কন্ট্রোল থাকছে না? খেতেও ইচ্ছে করছে না, এদিকে আবার মাসিকও ঠিক সময় মত হচ্ছে না| সব মিলিয়ে খুব বিচ্ছিরি একটা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে আপনার জীবনে| আবার এসব কথা কাউকে খুলেও বলতে পারছেন না| তবে আমি কিন্তু ঠিক বুঝতে পেরেছি আপনার মনের অবস্থা, এই সমস্যার নাম মেনোপজ| তাই তো আপনারা যারা বয়সের মাঝামাঝি সময়ে এসে এই ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে আমি আজকে চলে এসেছি|
মেনোপজ কি?
বায়োলজিকাল কারণেই ৪০ থেকে ৫০ বছরের মাঝামাঝি সময়ে প্রত্যেক টি মহিলার জীবনে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়| তবে একে সমস্যা না বলে বলা উচিত মেনোপজ | পিরিয়ড পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে যাবার আগে ১ বছর ধরে তা অনিয়মিত হতে থাকে| আমাদের শরীরে হরমোনাল ক্ষরণ অনিয়মিত হয়ে পরে, ফলে নানরকমের পরিবর্তন ঘটে মেয়েদের শরীরে| ফলে কোনো মাসে পিরিয়ড হয়, কোনো মাসে হয়না, কখনো সময়ে হয়, কখনো অসময়ে হয়, কখনো খুব বেশি ব্লিডিং হয় কখনো একেবারেই কম হয়| কখনো হয়তো টানা ৪-৫ মাস বন্ধ থাকার পর আবার পিরিয়ড শুরু হলো|আর এই সব কারণবশতঃ কিছু সমস্যা মহিলাদের শরীরে দেখা দেয়| তবে এতে ভয় পাবার বা চিন্তা করার মত কিছু নেই| এগুলি খুব স্বাভাবিক বায়োলজিকাল প্রক্রিয়া|
পিরিয়ড বন্ধ হবার আগে বা মেনোপজ চলাকালীন কি কি ধরনের সমস্যা দেখা দেয়
যেহেতু এই সময় আমাদের শরীরে নান রকমের পরিবর্তন হয় সেহেতু আমাদের নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়| বয়সের একটা সময়ে এসে হঠাৎ করে এই ধরনের সমস্যা হলে তা অনেকের ক্ষেত্রে ভয় ও উদগ্রীবের কারণ হয়ে দাঁড়ায়| তাই ঠিক কি কি সমস্যা বা কি কি পরিবর্তন এই সময় হয় তা একটু জেনে রাখা ভালো|
১. সেক্স বিষয়ে অনীহা
মেনোপজ বা পিরিয়ড বন্ধ হবার আগে প্রায় ৮৫% মহিলারের যৌন মিলন বা সেক্সের ক্ষেত্রে অনীহা দেখা দেয়| এই সময় মহিলাদের ক্ষেত্রে দেহে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরোন ক্ষরণ কম হতে থাকে| ফলে মানসিক এবং শারীরিক পরিবর্তন আসার ফলে যৌনমিলনের ইচ্ছে কমে যায়|
২. সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাওয়া
মেনোপজ হওয়ার স্বাভাবিক সময় হলো ৪০ বছর থেকে ৪৫ বছর| তবে অনেকের ক্ষেত্রে তা ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যেও শুরু হয়ে যায়| এবং এই সময় আমদের ডিম্বাশয় হরমোনের ক্ষরণ কমে যাওয়া বা অনিয়মিত হওয়ার ফলে ইনএকটিভ হয়ে পরে| তাই এই সময় সাধারণত সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যায়| তবে অনেক ক্ষেত্রে মহিলাদের এই সময় সন্তানসম্ভবা হতেও দেখা যায়|
৩. ওজন বেড়ে যাওয়া
ওজন বেড়ে যাওয়া পিরিয়ড বন্ধ হওয়া কালীন হওয়া একটি খুব কমন সমস্যা| এবং এর জন্যও কিন্তু দায়ী আমাদের শরীরের হরমোনাল পরিবর্তন| তবে খুব কম ক্ষেত্রেই অনেক সময় ওজন কমে যেতেও দেখা যায়|
৫. ঘন ঘন মুড বদলানো
এমনিতেই সাধারন সময়ে পিরিয়ড চলাকালীন বা শুরুর দিকে অনেকেরই মুডসুয়িং হতে দেখা যায়, তাহলে ভাবুন তো পিরিয়ড একেবারে বন্ধ হয়ে যাবার আগে কি পরিস্থিতি হতে পারে| আসলে এই সময় মহিলাদের শরীরের ভেতরে নানা ধরনের পরিবর্তন হয়, হরমোন গুলি ঘন ঘন গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন করে| আর তার প্রভাব পড়ে আমাদের মনের ওপর| তাই মেজাজ বেশির ভাগ সময়ে খারাপ’ই থাকতে দেখা যায়|
৬. জয়েন্ট পেন
পিরিয়ড অনিয়মিত বা বন্ধ চলাকালীন সময়ে কিন্তু আমাদের বোনডেনসিটি কমে যায়| ফলে এই সময় আমাদের হাড় দুর্বল হওয়া শুরু হয় এবং হাড়ের সন্ধিতে ব্যথা বা জয়েন্ট পেন হতে শুরু হয়| এই বয়সে কিন্তু সকল মহিলারাই কম বেশি আর্থারাইটিসের স্বীকার হন|
৭. চুল পড়ে যাওয়া
এটি কিন্তু এই সময়ের একটি সমস্যা যা ৯০% মহিলারাই ভোগ করে থাকেন| হঠাৎ করেই এই সময় কম বেশি সবার মাথা থেকেই চুল পড়তে শুরু করে| অনেকের ক্ষেত্রেই কিন্তু খুব বেশি মাত্রায় চুল পড়তে দেখা যায়|
৮. অনিদ্রা এবং খাবারে অনীহা
আমাদের শরীরে কোনো রকম পরিবর্তন বা সমস্যা হলে সব থেকে বেশি প্রভাব পরে এই দুটি বিষয়ের ওপর| তাই এক্ষেত্রেও মেনোপস চলাকালীন কিন্তু আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা এবং খেতে না ইচ্ছে করা খুব সাধারণ ব্যাপার|
আপনার বয়স যদি ৪০ এর দোর গোড়ায়, তাহলে কিন্তু প্রস্তুত হন জীবনের এই সময়টার মোকাবিলা করার জন্য| এই সময় কিন্তু নিজের প্রচুর পরিমাণে খেয়াল রাখা উচিত| খাওয়া দাওয়া ঠিক মত করা, অন্য কোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা খুব বেশি প্রয়োজন| অনেকেই এই সময় ডিপ্রেশনের স্বীকার হন| তাই বাড়ির সকলেরই এই সময় সহযোগিতা খুব প্রয়োজন| অনেকেই বলেন মেয়েদের এই সময় আরেক বার জন্ম হয়, তাই ভয় না পেয়ে নিজের এই নতুন জন্ম কে এনজয় করার চেষ্টা করুন| তবে কোনো গভীর সমস্যা হলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন|
https://dusbus.com/bn/period-bondho-hoyar-agei-bujhun-apni-pregnant-kina/
https://dusbus.com/bn/sontan-jonmanor-por-ki-sex-life-ses/
মন্তব্য করুন