ভাড়াটে ও বাড়িওয়ালার মধ্যেকার তিক্ত সম্পর্কের অবসান হতে চলেছে বলে আশা করা যায়। মডেল টেনেন্সি অ্যাক্ট, ২০১৯, পুরো ভারত জুড়ে ভাড়া আবাসনের আইনী কাঠামোটি রক্ষণাবেক্ষণ করতে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের অধিকার ও স্বার্থের ভারসাম্য রক্ষার জন্য এবং দেশে পর্যাপ্ত ভাড়া আবাসন স্টক তৈরির লক্ষ্যে গৃহায়ণ ও নগর বিষয়ক মন্ত্রণালয় মডেল টেন্যান্স অ্যাক্ট, ২০১৯ খসড়া করেছে।
এবছরের বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ তার প্রথম বাজেট ২০১৯ বক্তব্যেও এই আইন সম্পর্কে কথা বলেছেন। ভাড়া আবাসনকে উন্নীত করতে সরকার একটি মডেল টেন্যান্স আইন চূড়ান্তকরণ সহ বিভিন্ন সংস্কার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কারণ বর্তমান ভাড়া সংক্রান্ত আইনগুলি প্রত্নতাত্ত্বিক। যা বদলে কিছু নতুন নিয়ম তৈরির ভাবনা রয়েছে। যাতে ভাড়াটে ও বাড়িওয়ালার মধ্যে সুসম্পর্ক ও শান্তি বজায় থাকবে।
১০ টি জিনিস যা প্রতিটি বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটের জেনে রাখা উচিত
১. নতুন মডেল টেনেন্সি অ্যাক্ট, ২০১৯’এ আবাসনের জন্য দুই মাসের ভাড়া এবং অন্যান্য সম্পত্তির জন্য এক মাসের ভাড়া নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সিকিউরিটি ডিপোজিট ২মাসের বেশি নেওয়া যাবে না।
২. চুক্তি অনুযায়ী থাকার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে, যদি কোন ভাড়াটে উঠে যেতে অস্বীকার করেন, তাহলে বাড়িওয়ালা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দুই মাসের জন্য মাসিক ভাড়ার দ্বিগুণ এবং মাসিক ভাড়ার চারগুণ পর্যন্ত দাবি করতে পারবেন।
৩. এই আইনটিতে বলা হয়েছে যে, কোনও বাড়িওয়ালা ভাড়াটের প্রয়োজনীয় সুবিধাগুলি সরবরাহ করতে অস্বীকার করতে পারবেন না। জলের পাইপ ঠিক করা বা বাড়ির মেরামত করার প্রয়োজন যদি ভাড়াটের মনে হয়, তা বাড়িওয়ালাকে করে দিতে হবে। কারন এই সমস্যা নিয়ে অনেক ভাড়াটের অভিযোগ ছিল সবসময়।
৪. বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়াকে কমপক্ষে তিন মাসের নোটিশ না দিয়ে ভাড়া বাড়াতে পারবে না। পুরনো ভাড়ার মেয়াদের মাঝে ভাড়া বাড়ানো যাবে না।
৫. এই মডেল আইনটি কার্যকর হওয়ার পরে, কোনও ব্যক্তি লিখিত চুক্তি ছাড়া কোনও স্থান ভাড়া দিতে পারবেন না। ভাড়া দেওয়ার জন্য লিখিত চুক্তি বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে।
৬. ভাড়া চুক্তি কার্যকর হওয়ার ২ মাসের মধ্যে, বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়াদের উভয়েরই এই চুক্তির বিষয়ে ভাড়া কর্তৃপক্ষের (Rent Authority) সাথে কথা বলা বাধ্যতামূলক হবে। ভাড়া কর্তৃপক্ষ সাত দিনের মধ্যে উভয় পক্ষের একটি স্বতন্ত্র পরিচয় নম্বর প্রদান করবে।
৭. মডেল আইনটি চালু হওয়ার পরে কোনও বাড়িওয়ালা ভাড়াটের সন্মতি ছাড়া কোন প্রকারের লিখিত চুক্তি নিজের ইচ্ছে মত করতে পারবেন না। আইন মেনে ভাড়াটের সন্মতিসহ তাকে চুক্তি বদ্ধ হতে হবে।
৮. বাড়িওয়ালা এবং তার ভাড়াটিয়ার মধ্যেকার চুক্তির শর্তাদি, উভয়কেই মেনে চলতে হবে। যদি সময় সীমার মধ্যে কোন কারন বশত ভাড়াটে মারা যান তাহলে সে ক্ষেত্রে চুক্তির নিয়ম তার উত্তরসূরিদের উপর বাধ্যতামূলক হবে।
৯. ভালো করে আইনটি দেখলে বুঝবেন যে শুধুমাত্র ভাড়াটের কথা মাথায় রেখে এটি বানানো নয় যে তারা অধিক খুশি হবেন এতে। উভয় পক্ষের সুবিধা অসুবিধার কথা আইনে স্পষ্ট করা থাকবে। যাতে কারোর কোন রকমের সমস্যা না হয়।
১০. কেন্দ্রীয় সরকার তাদের মতামত এবং মন্তব্যের জন্য মডেল আইনের একটি অনুলিপি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির(UTs)সাথে ভাগ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ সহ বাকি রাজ্য এটির প্রয়োজনীয়তার কথা খেয়াল রেখে সন্মতিসহ চিঠি কেন্দ্রকে পাঠিয়ে দিয়েছে।
মন্তব্য করুন