মেয়েরা শুধু বিয়ে করবে, বাচ্ছা মানুষ করবে, এই তার সারা জীবনের দায়িত্ব- এই এজ-ওল্ড ধারণা আজ আর নেই। শুধু শহরের শিক্ষিত মহিলারা নন, গ্রামের তথাকথিত কম লেখাপড়া জানা মহিলারাও আজ নিজেরা কিছু করে দেখাতে চাইছেন।
সবাই চাইছেন নিজে কিছু টাকা রোজকার করতে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে। স্বামীর বা বাড়ির পুরুষদের ওপর একান্ত নির্ভরতা অনেকসময় তাদের দুর্বলতা হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। আর দুর্বলের ওপর অত্যাচার হওয়া তো স্বাভাবিক।
সবদিক থেকে নিজেকে সুরক্ষা দিতে সব মেয়েই আজ চায় স্বনির্ভর হতে। কিন্তু যেহেতু অনেকে তেমন শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পান না, তাই কিছু হাতের কাজ শিখে সহজেই মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন। আসুন জেনে নিই কী কী কাজ করতে বা শিখতে পারেন।
১. সেলাই
এমনিতেই স্কুলে মেয়েদের সেলাই শেখানোই হয়। এটা মেয়েদের একটা আয়ের জায়গা হতেই পারে। শাড়ি, টেবিল ক্লথ এই সবে নকশা তুলে মেয়েরা সহজেই সেগুলি অনেক মেলায় গিয়ে বিক্রি করতেই পারেন। এই সেলাই ভালো করে শিখে মেয়েরা যে কোনো বড় শাড়ির দোকানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। তাহলে নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থাও হয়ে যাবে।
২. প্রিন্টের কাজ
কাপড়ে নানারকম প্রিন্টের কাজ করতে শিখে আপনি কিন্তু আয় করতেই পারেন। বাটিক প্রিন্টের শাড়ি একটা খুব ভালো লাভজনক শাড়ি। এর ব্যবসাও বেশ ভালো। তাই আপনি যদি এইরকম কিছু শিখে নিতে পারেন, তাহলে আপনি নিজেই শাড়িতে বা অন্যান্য কাপড়ে প্রিন্ট করতে পারেন, বা কোনো সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।
৩. বুটিক খোলা
ওপরে যেগুলো বললাম, সেগুলো ছাড়াও যদি আপনি শাড়ি সম্পর্কে আরও আগ্রহী থাকেন, তাহলে শাড়ির সুতো নিয়ে আরও জানুন, নিজস্ব স্পেশাল নকশা বা ডিজাইন আঁকতে শিখুন, আর ফ্যাশন সম্বন্ধে যদি আইডিয়া থাকে মোটামুটি, তাহলে আপনি নিজস্ব বুটিক খোলার কথা ভাবতেই পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ব্যবসাটা একটু জানতে হবে।
৪. ধূপকাঠি-মোমবাতি বানানো
দেখুন গ্রামে ভোকেশনাল ট্রেনিং-এ এইসব বানাতে শেখানো হয়। আপনারা তো জানেনই যে ধূপকাঠি আর মোমবাতি আমাদের রোজকার জীবনে খুবই কাজে লাগে। এর বাজারে চাহিদা কিন্তু খুবই বেশী। তাই আপনি ধূপকাঠি বা মোমবাতি বানাতে শিখেও নিজস্ব আয়ের ব্যবস্থাও করতে পারেন। মানছি খুব বেশী হয়তো পাবেন না, কিন্তু স্বল্প হলেও তা তো নিজেরই।
৫. গোল্ড-প্লেটিং-এর কাজ শেখা
দেখুন এখনকার দিনে কেউই অতো সোনার গয়না পরে সব জায়গায় যান না। শুধু সিলভারের গয়না একটা ট্রেন্ড হয়েছে বটে, কিন্তু তা তো সবসময়ের জন্য নয়। তাই অনেকে এখন রোল গোল্ড, বা সিটি গোল্ড পরে থাকেন। তা এগুলো যে পদ্ধতিতে ওই সোনার মতো রঙ করা হয়, সেই পদ্ধতিকে বলে গোল্ড-প্লেটিং পদ্ধতি। অনেক মেয়েই কিন্তু এই কাজে যুক্ত থাকেন আর বেশ ভালোই আয় করেন।
৬. পাঁপড়-বড়ি-আচার বানানো
গ্রাম থেকে শহর, যে কোনো বয়সের মহিলার কাছেই কিন্তু এটা খুবই লাভজনক কাজ। আপনি কারোর তত্ত্বাবধানেও এই কাজ করতে পারেন, নিজে একা ব্যবসাও করতে পারেন বা অনেকে মিলেও আচার, পাঁপড় এইসব বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। এর কিন্তু বেশ ভালো চাহিদা আছে।
৭. অন্যান্য হাতের কাজ
আপনারা নিশ্চয়ই সবলা মেলার মতো মেলায় যান। ওখানে কত রকমের জিনিসই তো পাওয়া যায়। বেতের, বাঁশের, পোড়ামাটির কত রকম হাতের কাজের জিনিস, ঘর সাজাবার জিনিস আপনারা তো দেখেইছেন। সেগুলো কিন্তু আপনি তৈরি করতে শিখে বিক্রি করতেই পারেন। বেশ ভালো আয় হবে।
৮. পার্লারে কাজ শেখা
মহিলাদের জন্য এটাও একটা আয়ের ভালো মাধ্যম। পার্লারে অনেক মেয়ে দরকার হয় নানারকম কাজ করার জন্য। আপনি পার্লারে কিভাবে মেকআপ করাবেন, স্পা করাবেন এইসব শেখার পর আপনি কিন্তু কাজ করতেই পারেন। এই ক্ষেত্রে অনেক কোর্স হয়। একটু খোঁজ রাখুন আর করে ফেলুন। আর যদি টাকার জোড় থাকে, তাহলে নিজেই না হয় একটা পার্লার খুলে ফেলুন।
তাহলে, এবার আর চিন্তা কি? আপনি নিজের পায়ে দাঁড়াবেন এটা আমরাও চাই। আর এখন তো ব্যাঙ্ক থেকে এর জন্য লোনও পেয়ে যাবেন। তাই এবার নিজে আয় করে মাথা উঁচু করে বাঁচুন।
Munni Dhar
Ami interested Amer handwork r Jonno.
S.K.BANIK
2 no