দূষণ, রুক্ষতা দূর করে হাত ও পা কে কোমল, জৌলুসপূর্ণ, এবং মোলায়েম করার পদ্ধতিকে যথাক্রমে মেনিকিওর ও পেডিকিওর বলে। যেকোন বয়সের নারী-পুরুষের জন্য মাসে অন্তত দুইবার মেনিকিওর-পেডিকিওর করা অত্যাবশ্যক। এতে যেমন হাত ও পায়ের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয় তেমনি ব্যক্তিত্বেও সুরুচির পরিচয় ফুটে উঠে।
হাত-পায়ের এই যত্ন-আত্তি পার্লারে অনায়াসে করানো যায়। কিন্তু যদি বাড়িতেই যত্ন-আত্তি করা সম্ভব হয়, তাহলে কেন শুধু শুধু পার্লারে যাওয়ার ঝক্কি পোহাবেন? আজকের আর্টিকেলে থাকছে ঘরে মেনিকিওর করার পদ্ধতি স্টেপ বাই স্টেপ নিয়ে বিস্তারিত।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে মেনিকিওর করার জিনিসপত্রঃ
- বড় গামলা
- কুসুম গরম পানি
- শুকনো তোয়ালে
- তুলা
- সুতি কাপড়
- নেইলপলিশ রিমুভার
- নেইল কাটার
- নেইল শার্পেনার
- কিউটিকল পুশার এবং কিউটিকল রিমুভার
- স্টিক বা টুথপিক
- শ্যাম্পু
- লেবু
- লবণ
- বেকিং সোডা
- টুথপেস্ট
- ব্রাশ
- স্ক্রাবিং ক্রিম
- টোনার
- ময়েশ্চারাইজার
ঘরে মেনিকিওর করার পদ্ধতি স্টেপ বাই স্টেপঃ
স্টেপ ১ – নখ পরিষ্কার করুনঃ
মেনিকিওর শুরু করার আগে যেটা সবচেয়ে জরুরি সেটা হচ্ছে হাতের নখগুলোকে পরিষ্কার করা। আপনার নখে যদি নেইলপলিশ লাগানো থাকে তাহলে তুলায় নেইলপলিশ রিমুভার লাগিয়ে সেটা দিয়ে নেইলপলিশ তুলে নিন। নেইলপলিশ না থাকলেও তুলা ভিজিয়ে নখ মুছে নিলে ভালো হয়। তারপর একটি সরু স্টিক বা টুথপিক দিয়ে সাবধানে নখের নিচের ও কোণার ময়লা ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।
স্টেপ ২ – নখ কেটে নিনঃ
নখ পরিষ্কারের পরে নেইল কাটার দিয়ে নখে সুন্দর শেইপ করে কেটে নিন। একদম ছোট করে কাটার চাইতে অল্প একটু নখ রেখে কাটলে দেখতে সুন্দর লাগবে। আঙুলের ডগায় নখের চিকন একটি লাইন যাতে দেখা যায় এমনভাবে কাটুন। নখ একদম গোলাকার করে কাটলে নখের বৃদ্ধিতে অসুবিধা দেখা দেয়। তাই নখগুলোকে চারকোণা বা ডিম্বাকৃতির স্টাইলে কেটে ফেলুন। এরপর শার্পেনার দিয়ে নখগুলো ঘষে নিন।
স্টেপ ৩ – হাত ভিজিয়ে রাখুনঃ
একটি গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে পরিমানমতো শ্যাম্পু, লবণ, বেকিং সোডা ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণে হাত দুটি ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। এতে আপনার হাতের জীবাণু দূর হবে এবং নখ কোমল থাকবে। তারপর ব্রাশে শ্যাম্পু লাগিয়ে একটি একটি করে ভেজা হাত তুলে ঘষে নিন এবং তোয়ালে দিয়ে হালকা ভাবে হাত মুছে ফেলুন। নখগুলো সুতি কাপড় দিয়ে ঘষে ঘষে মুছে ফেলতে হবে।
স্টেপ ৪ – কিউটিকলের যত্ন নিনঃ
নখের চারপাশে থাকা কিউটিকলের যত্ন নিতে হবে এই স্টেপে। প্রথমে কিউটিকল রিমুভার ব্যবহার করে কিছুক্ষণ রেখে তারপর কিউটিকল পুশার দিয়ে কিউটিকলকে পুশ করে নিন। চাইলে ট্রিমার দিয়ে সাবধানে ট্রিম করে নিবেন। তবে কিউটিকলের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবেন না। এটি নখকে ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে বাঁচায়, তাই এটি কোন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে নখের ক্ষতি হবে।
স্টেপ ৫ – হাত ও নখ পুনরায় পরিষ্কার করুনঃ
এই স্টেপে এক টুকরা পাতিলেবু কেটে নখের উপরে ও নিচে ভালো করে ঘষে নিন। ৫ মিনিট এভাবে রেখে দিন, তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এবার ব্রাশে টুথপেস্ট লাগিয়ে পুরো হাত, নখের উপরের ও ভিতরের দিক ভালো করে ঘষে তারপর ধুয়ে ফেলুন।
স্টেপ ৬ – হাত স্ক্রাব করুনঃ
এবার স্ক্রাবিংয়ের পালা। আপনি চাইলে ভালো মানের স্ক্রাবার ব্যবহার করতে পারেন আবার হোমমেইড স্ক্রাবার বানিয়ে নিতে পারেন। হোমমেইড স্ক্রাবার বানানোর জন্য টকদই, চালের গুঁড়া, গোলাপজল, এবং অ্যালোভেরা জেল একসাথে মিশিয়ে নিন। তারপর এটি হাতের দুই পাশে ১০ মিনিট ধরে মাসাজ করে এরপর হাত ধুয়ে ফেলুন। স্ক্রাবিং আপনার হাতকে ভিতর থেকে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করবে।
স্টেপ ৭ – টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং করুনঃ
স্ক্রাবিংয়ের কারণে হাত গভীরভাবে পরিষ্কার হলেও এর লোমকূপ আলগা হয়ে থাকার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই আলগা লোমকূপ ভরাট করতে ভালো টোনার ব্যবহার করুন হাতে। টোনার শুকানোর পরে ভালো কোন ক্রিমি ময়েশ্চারাইজার মাসাজ করে নিন হাতকে আর্দ্র রাখার জন্য। ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে লোশন বা তেলও ব্যবহার করতে পারেন।
মন্তব্য করুন