বেশ কয়েকদিন ধরেই আমরা আপনাদের মেকআপ বিষয়ে বেশ কিছু টিপস দিয়েছি| আশা করছি আপনি নিশ্চয়ই সেগুলো ট্রাই করেছেন| কিন্তু শুধু ভালো করে সাজলেই তো হলো না। এই সাজ যাতে সারাদিন আপনার সঙ্গী হয়ে থাকে তার দিকেও তো নজর দিতে হবে! কারণ বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই সেজেগুজে রাস্তায় বেড়িয়ে ঘেমে-নেয়ে আমাদের মেকআপ অর্ধেক নষ্ট হয়ে যায়, কখনো কখনো বিয়েবাড়ি বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে পৌঁছনোর আগেই পুরো মেকআপের বারোটা বেজে যায়| অগত্যা সব সময় ব্যাগে মেকআপ সরঞ্জাম নিয়ে ঘুরতে হয়|
এখন থেকে নিশ্চিন্তে আপনার মেকআপকে লক করুন আপনার মুখে সারাদিনের জন্য| তালা-চাবির সন্ধান দেবে ‘দাশবাস’|
মেকআপ করার আগে বিশেষ ৪ টি বিষয় মাথায় রাখলেই কিন্তু বিনা টাচ আপ আপনি বিন্দাস হয়ে আপনার মেকআপ সারাদিন ক্যারি করতে পারবেন| তবে কি সেই জাদু তা জানতে হলে কিন্তু আজকের আর্টিকেল পড়তেই হবে|
১. মেকআপ সরঞ্জামের সঠিক নির্বাচন
আপনি যখন মেকআপ প্রোডাক্টগুলি কিনবেন তখন অবশ্যই আপনার ত্বকের ধরণ এবং স্কিন টোন অনুযায়ী কিনবেন| কারণ প্রতিটি স্কিন টাইপের জন্য আলাদা আলাদা প্রোডাক্ট বর্তমান| আপনার স্কিন যদি অয়েলি হয় এবং আপনি নর্মাল স্কিনের মেকআপ ব্যবহার করে থাকেন তবে তা কোনো ভাবেই বেশীক্ষণ স্থায়ী হবে না| তাই মেকআপের সরঞ্জাম কেনার সময় প্রথমে নিজের স্কিন টাইপ সম্পর্কে জানুন। তারপরে প্রোডাক্ট সম্পর্কে ভালো করে জেনে নিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় প্রোডাক্টটি কিনুন|
২. ত্বকের ময়লা দূর করুন
আমাদের মুখে যদি তেল, ঘাম, ধুলো-ময়লার পরত থাকে, তাহলে তার ওপর মেকআপ করলে কিন্তু মেকআপ ত্বকে ভালো করে বসবে না। এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তা নষ্ট হতে শুরু হয়ে যাবে| তাই ত্বক পরিষ্কার না করে কখনই মেকআপ করা উচিত নয়| তাই প্রথমে ফ্রেশ ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন, তারপর ভালো করে স্ক্রাবার দিয়ে বিশেষ করে আপনার টি-জোনটি পরিষ্কার করুন| এরপর তুলো দিয়ে মুখে টোনার প্রয়োগ করুন| এতে আপনার ত্বক একেবারে ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়ে যাবে| এবং মেকআপ ভালো করে মুখের সাথে মিলিয়ে যাবে এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হবে|
৩. ত্বককে নমনীয় করে তুলুন
মুখ পরিষ্কার হয়ে গেলে মুখ মুছে এক টুকরো বরফ ভালো করে আপনার মুখে ঠোঁটে, চোখের পাতার ওপর বুলিয়ে নিন| এতে আপনার ত্বক ভেতর থেকে ঠান্ডা হবে এবং ঘাম কম হবে| বরফ লাগানো হয়ে গেলে একটি নরম কাপড় দিয়ে তা মুছে মুখে হালকা করে ময়েশ্চারাইজার মাখুন| এরপর অন্তত ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন| কারণ ময়েশ্চারাইজার মাখার পর তা ত্বকের ভেতরে গিয়ে ত্বককে নমনীয় করে তোলে এবং স্কিন পোরগুলিকে ঢেকে দেয় এবং এতে কিছু সময় লাগে| এর ফলে আপনার ত্বক মেকআপের উপযোগী হয়ে ওঠে এবং মেকআপ স্কিন পোরের ভেতরে ঢুকতে পারে না। ফলে তা আপনার ত্বকে অনেক বেশী সময় সেট হয়ে থাকে| আপনার ঠোঁট দুটিকেও কিন্তু ময়েশ্চারাইজ করতে ভুলবেন না|
৪. প্রাইমার ও ফাউন্ডেশন প্রয়োগ
এবার সময় মেকআপ শুরুর| অর্থাৎ প্রথমে প্রাইমার এবং তারপর ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিতে হবে| আজকাল কিন্তু বাজারে লং লাস্টিং প্রাইমার ও ফাউন্ডেশন ও ওয়াটার প্রূফ ফাউন্ডেশন কিনতে পাওয়া যায়| এক্ষেত্রে আপনি ‘ল্যাকমে’ বা ‘মেবিলাইন’ প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন|
সবার আগে মুখে ভালো করে প্রাইমার লাগিয়ে নিন| প্রাইমার না লাগিয়ে ফাউন্ডেশন লাগালে তা আপনার ত্বককে খুব তাড়াতাড়ি ড্রাই করে দেয় এবং মেকআপ কিছুক্ষণের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়| তাই প্রাইমার লাগিয়ে তবেই ফাউন্ডশন প্রয়োগ করুন| মনে রাখবেন কোনো ভাবেই হাত দিয়ে ঘষে ফাউন্ডেশন প্রয়োগ করবেন না| ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে ত্বকের সাথে| এরপর বাকি মেকআপ আপনি প্রয়োগ করতে পারেন| তবে এক্ষেত্রে মেকআপ ব্রাশ ব্যবহার করুন। তাহলে তা বেশী ভালো করে ত্বকের সাথে ব্লেন্ড হবে এবং বেশীক্ষণ স্থায়ী হবে|
এছাড়া চোখে কাজল যাতে না স্মাজ করে তার জন্য ফেস পাউডার চোখের নিচের অংশে প্রয়োগ করুন| এছাড়া কনসিলার প্রয়োগ করুন চোখের মেকআপ বেশীক্ষণ স্থায়ী করার জন্য| লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপলাইনার লাগিয়ে নিন এবং ভালো ও বেশীক্ষণ স্থায়ী লিপস্টিক লাগান| লিপলাইনার লাগানোর পর ঠোঁটে পাউডার লাগিয়ে নিন এবং অতিরিক্ত পাউডার ঝেড়ে তার পর লিপস্টিক বা লিপগ্লস লাগান এতে আপনার লিপস্টিক কিন্তু অনেক বেশীক্ষণ একই ভাবে থাকবে|
দেখছেন তো কত সহজ মেকআপ ঠিক রাখা! মাত্র ৪ টি সহজ পদ্ধতি আপনাকে সাহায্য করবে ২৪*৭ আপনার মেকআপকে আপনার মুখে লক করে রাখতে| তাই এখন থেকে বিন্দাস হয়ে মেকআপ করুন আর বিন্দাস হয়ে ঘুরে বেড়ান| কারণ আপনার মেকআপ হবে এখন সারাদিনের জন্য আপনার বন্ধু|
মন্তব্য করুন