আর মাত্র কয়েকটা দিন,দরজায় কড়া নাড়ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা।এখন নিশ্চই তোমরা জোড় কদমে চালিয়ে যাচ্ছ লাস্ট মিনিট প্রিপারেশন?পরীক্ষা মানে এমনিতেই একটা চাপা টেনশন,প্রশ্ন কমন পাওয়া নিয়ে ভয় তো সকলের মধ্যেই কাজ করে।জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসার আগে সেই ভয়টা আরও বেশি করে যে কাজ করবে সেটাই স্বাভাবিক।আর বিষয় যদি হয় ইতিহাস,তাহলে তার অজস্র সাল তারিখ ঘটনাকে মনে রাখতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলা,ভুলে যাওয়ার ভয়টা তো আরও বেশি।সে ক্ষেত্রে আমরা এখানে শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতির কিছু টিপস নিয়ে হাজির হয়েছি,যদি তোমাদের টেনশন খানিক কমানো যায় !
পরীক্ষার আগের প্রস্তুতিতে যথেষ্ট সময় দাও
মনে রেখো মোট আটটি পেপারে পরীক্ষা দিতে গেলে প্রতিটি বিষয়ে তোমায় সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।তাই ইতিহাসের জন্য আলাদা করে নির্দিষ্ট সময় বেছে নাও।বাকি বিষয়গুলোয় তোমার প্রস্তুতি কেমন,তার ওপর নির্ভর করবে আলাদা করে ইতিহাসে তুমি কতটা সময় দেবে।কিন্তু মনে রেখো,তোমাদের সিলেবাস অনুযায়ী ইতিহাসের ক্ষেত্রে তোমায় সাল, তারিখ সহ বেশ কিছু ঘটনা তথ্য হিসেবে আলাদা করে মনে রাখতে হবে। কেন না,৯০ নম্বরের পরীক্ষার বেশিরভাগটাই তোমায় তুলতে হবে ছোট প্রশ্নে।আর সে ক্ষেত্রে তথ্য মনে রাখার বিকল্প কিছু নেই।ফলে সেই বুঝে সময় দাও।
তথ্যগুলোকে খাতায় লিখে রাখো
তোমাদের প্রশ্নের ধরণ অনুযায়ী বিভাগ ‘ক’ এবং বিভাগ ‘খ’ –এ কেবলমাত্র থাকবে ১ নম্বরের প্রশ্ন।সেখানে শূন্যস্থান পূরণ ,সঠিক উত্তর বেছে নেওয়া, সত্য-মিথ্যা নির্ণয় ইত্যাদি মিলিয়ে মোট ৩৬ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর তোমাদের দিতে হবে।আর বিভাগ ‘গ’ এ ১১ টি ২ নম্বরের প্রশ্নের মোট মান হবে ২২। ফলে বুঝতেই পারছ নম্বর তোলা খুবই সহজ যদি তুমি তথ্যগুলো ঠিক মতো মনে রাখতে পারো।আর এই মনে রাখার একটাই উপায় – লেখা।তোমাদের ভারতের ইতিহাস পড়তে গিয়ে উনিশ ও বিশ শতকের যে ইতিহাস পড়তে হয়েছে,তার অধ্যায়গুলো মূলত সময় ধরেই ভাগ করা আছে।ফলে,প্রতিটি অধ্যায় পড়তে পড়তে সেই অধ্যায়ের কবে কী ঘটছে তা সাল,তারিখ সহ নম্বর দিয়ে পর পর লিখে রাখো।
আগে তো ভালো মতো পড়েইছো,তাই এখন প্রতিটা অধ্যায়ের তথ্য এক এক দিনে এভাবে লিখে রাখতে খুব বেশি সময়ও লাগবে না।সব কটা অধ্যায়ের তথ্য এভাবে খাতায় লিখে রাখতে গিয়ে দেখবে অনেকটা মনে থেকে যাবে,পরে ভুলবে না।লিখে রাখার পরের কাজটা হবে মাঝে মাঝে ওই খাতায় চোখ বোলানো।পরীক্ষার আগে ওই খাতাটা দেখলেই তোমার সব মনে পরে যাবে,আর পরীক্ষায় ছোট প্রশ্নের উত্তর করতেও কোনও অসুবিধা হবে না।
পরীক্ষার হলে প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে সচেতন হও
পরীক্ষা দিতে বসে ঘাবড়ে যেও না।প্রশ্ন পত্র ভালো মতো পড়ে নাও।৩ ঘন্টা ১৫ মিনিটের প্রথম ১৫ মিনিট দেওয়া হবে শুধু মাত্র প্রশ্ন পড়ার জন্য।সময়টাকে কাজে লাগাও।প্রায় তিনটে অংশে যেহেতু ছোট প্রশ্ন প্রচুর,তাই সেগুলো করতে সময় লাগবে না যদি জানা থাকে।ফলে সে ক্ষেত্রে তোমার হাতে প্রচুর সময় রয়েছে।তাড়াহুড়ো না করে ভেবে উত্তর দাও।ঠিক উত্তর দিতে পারলে বিভাগ ‘ক’ ও ‘খ’ –এ পুরো নম্বর তোলা সম্ভব।বিভাগ ‘গ’ এ ২ নম্বরের ১১ টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে,কিন্তু তোমার প্রশ্ন থাকবে হয়তো ১৬ টা।সে ক্ষেত্রে প্রথমে সব কটা প্রশ্ন পড়ে নিয়ে ঠিক করে নাও কোনগুলো করবে।
এই বেছে নেওয়ার কাজটি পরীক্ষার প্রথম ১৫ মিনিটে কর।এবারে একে একে উত্তর লিখতে থাকো।এই বিভাগেও নম্বর কাটার জায়গা খুব কম।ফলে অতিরিক্ত লিখো না,যেটুকু জানতে চাওয়া হয়েছে সেটুকুই লেখো।নির্দেশ অনুযায়ী চেষ্টা কর দুই বা তিনটি বাক্যের মধ্যেই উত্তর দিতে।৪ নম্বরের ৬টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে বিভাগ ‘ঘ’ এ।এখানেও একইভাবে প্রশ্ন বেছে নাও আগে।সাত থেকে আটটি বাক্যের মধ্যে উত্তর দাও।অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ উত্তর হবে স্বাভাবিক ভাবেই ৮ নম্বরের প্রশ্নের।বিভাগ ‘গ’ থেকে তাই ৮ নম্বরের প্রশ্নটি বেছে নেওয়ার পর নম্বর বেশি আছে বলে অপ্রয়োজনীয় কথা লিখে পাতা ভরিয়ো না।পনেরো বা ষোলটি বাক্যের মধ্যে উত্তর দাও।
খানিক অতিরিক্ত কিছু পড়
দেখ,এখনকার সিলেবাসে তেমনভাবে অতিরিক্ত পড়ে সেটা প্রকাশ করার জায়গা খুবই কম।কারণ অধিকাংশ প্রশ্নই সংক্ষিপ্ত উত্তর দাবী করে।কিন্তু তাও তুমি যদি ওই ৮ নম্বরের ক্ষেত্রে ওই স্বল্প পরিসরেই কিছু অন্যরকম লিখে দেখাতে পার,এমন কিছু তথ্য রাখতে পার যা বাজার-চলতি নোটবইগুলোতে নেই,তাহলে তা পরীক্ষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।সেক্ষেত্রে নম্বরও বেশী তো উঠবেই।
কিন্তু এতোকিছুর পরেও যেটা সবার আগে দরকার সেটা হল নিজের ওপর কনফিডেন্স রাখা।পরীক্ষা হলে চাপমুক্ত থেকো আর মন দিয়ে প্রিপারেশন নাও।পরীক্ষা ভালো হবেই।’দাশবাস’এর পক্ষ থেকে সাফল্য কামনা করি।
সোশিওলজি নিয়ে হায়ার স্টাডির কী কী স্কোপ আছে, জানুন বিস্তারিত
মন্তব্য করুন